ইউএনআরডাব্লিউএ: নিরপেক্ষতার প্রশ্ন, জঙ্গিযোগের প্রমাণ নেই
২৩ এপ্রিল ২০২৪জাতিসংঘের যে সংগঠনের বিরুদ্ধে ইসরায়েল অভিযোগ করেছিল, তার নাম ইউনাইডেট নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টিনিয়ান রিফিউজি ইন দ্য নিয়ার ইস্ট(ইউএনআরডাব্লিউএ)। একটি নিরপেক্ষ প্যানেলকে দিয়ে ইসরায়েলের অভিযোগের সমীক্ষা করায় জাতিসংঘ।
ইসরায়েলের অভিযোগ ছিল, ইউএনআরডাব্লিউএ-র ১২ জন কর্মী ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ ইসরায়েল জাতিসংঘের প্যানেলের কাছে দেয়নি।
এই নিরপেক্ষ প্যানেলের নেতৃত্বে ছিলেন ফ্রান্সের কূটনীতিক ক্যাথরিন কলোনা। জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল গুতেরেস এই প্যানেলের সদস্যদের নিয়োগ করেন। এছাড়া গুতেরেস জাতিসংঘের একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশও দেন।
সমীক্ষায় কী পাওয়া গেল?
৫৪ পাতার রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিরপেক্ষতা সংক্রান্ত কিছু বিষয় তাদের নজরে এসেছে। কর্মীরা প্রকাশ্যে রাজনৈতিক বিবৃতি দিয়েছেন, কর্মী ইউনিয়নগুলির রাজনীতিকরণও চিন্তার বিষয়।
বলা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে পোস্টের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারেননি কর্মীরা। এটাও জানানো হয়েছে, কর্মীদের পরিবার, আত্মীয়স্বজনরা সহিংস ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
রিপোর্টে বলা হয়েছে,ইউএনআরডাব্লিউএ স্কুলের পাঠ্যবইয়ে ইসরায়েল সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য আছে।
প্যানেলের সুপারিশ হলো, কর্মীদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। তাদের ব্যবহারে, শিক্ষায়, প্রশাসনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা জরুরি।
ইউএনআরডাব্লিউএ-র কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছেন, প্যানেলের সুপারিশ তিনি মেনে নেবেন। কিন্তু একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল এই সংগঠনটিকে ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করছে।
সামরিক গোয়েন্দা প্রধানের ইস্তফা
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সোমবার জানানো হয়েছে, সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল হালিভা তার পদ থেকে সরে যেতে চেয়েছেন।
এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ''মেজর জেনারেল হালিভা জানিয়েছেন, তিনি আর সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের নেতৃত্বে থাকতে চান না। ৭ অক্টোবর আক্রমণ প্রতিহত করতে না পারার দায় নিয়ে তিনি সরে যেতে চান।''
গতবছরই হালিভা জানিয়েছিলেন, তিনি ৭ অক্টোবরের ঘটনার দায় নিচ্ছেন। ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের ভিতরে ঢুকে আক্রমণ করে। তাতে এক হাজার দুইশ জনের মৃত্যু হয়। তারা ২৫০ জনকে পণবন্দি করে নিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইসরায়েল-সহ অনেক দেশ হামাসকে জঙ্গি সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে।
মাক্রোঁর অনুরোধ
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ফোন করেছিলেন। সেখানে মাক্রোঁ বলেছেন, ফ্রান্স চায়, মধ্যপ্রাচ্যে যেন উত্তেজনা আর না বাড়ে।
মাক্রোঁ জানিয়েছেন, তিনি গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চান। এই যুদ্ধবিরতি যেন দীর্ঘস্থায়ী হয়। মাক্রোঁর অফিস থেকে জানানো হয়েছে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
উত্তর ইসরায়েলে হেজবোল্লাহর রকেট-হামলা
হেজবোল্লাহ জানিয়েছে, তারা উত্তর ইসরায়েলে রকেট হামলা করেছে। তাদের উপর আক্রমণের জবাব দেয়ার জন্যই তারা এই কাজ করেছে।
ইসরায়েলের সেনা জানিয়েছে, অন্ততপক্ষে ৩৫টি রকেট লেবানন থেকে ছোড়া হয়েছিল। তবে এই হামলার ফলে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের দাবি, যেখান থেকে রকেট ছোড়া হচ্ছিল, সেখানে তাদের সেনা আক্রমণ করেছে।
গাজায় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই হেজবোল্লাহ উত্তর ইসরায়েলে রকেট, ছুঁড়ছে ও গোলা মারছে।
ইরানপন্থি হেজবোল্লাহ ডানিয়েছে, হামাসের সমর্থনে তারা এই কাজ করছে।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)