রাজনৈতিক আশ্রয়
১৬ আগস্ট ২০১২২০১০ সাল৷ আসাঞ্জের উইকিলিক্স মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনেক গোপন দলিল প্রকাশ করে দেয়৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সম্পর্কে সে দেশে থাকা মার্কিন রাষ্ট্রদূতদের গোপন প্রতিবেদন ছিল ঐ দলিলগুলোতে৷ অত্যন্ত স্পর্শকাতর এইসব তথ্য বেরিয়ে পড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনেক দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দেয়৷ তাই যুক্তরাষ্ট্র চায় আসাঞ্জের বিচার করতে৷
এদিকে, সুইডেনে আসাঞ্জের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির মামলা করা হয়৷ ফলে সুইডিশ সরকার আসাঞ্জের বিচার করার জন্য ব্রিটেনের কাছে তাঁকে চেয়ে পাঠায়৷ এরই প্রেক্ষিতে আসাঞ্জকে সুইডেনে পাঠানোর রায় দেয় ব্রিটিশ আদালত৷
কিন্তু আসাঞ্জের আশঙ্কা তাঁকে সুইডেনে পাঠানো হলে পরবর্তীতে সুইডেন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তাঁকে তুলে দিতে পারে৷ তাই গ্রেপ্তার এড়াতে আসাঞ্জ ইকুয়েডরে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করে লন্ডনে অবস্থিত ইকুয়েডর দূতাবাসে অবস্থান নেন৷
এরপর ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিকার্ডো পাটিনো আসাঞ্জকে আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান৷ তিনি বলেন, আসাঞ্জের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে৷ সুইডেন যদি তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেয় তাহলে সেখানে তাঁর নিরপেক্ষ বিচার হওয়া নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন পাটিনো৷
ইকুয়েডরের এই সিদ্ধান্তে ব্রিটেন ‘হতাশ' বলে জানিয়েছে সেখানকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী আসাঞ্জের সব ধরণের আবেদন অগ্রাহ্য করা হয়েছে৷ তাই এখন আইনগত কারণে তাঁকে সুইডেনে পাঠাতে বাধ্য ব্রিটেন৷''
এর আগে বুধবার ব্রিটিশ সরকার প্রয়োজনে ইকুয়েডর দূতাবাসে ঢুকে আসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করার হুমকি দিয়েছিল৷ এছাড়া ইকুয়েডর যদি আসাঞ্জকে আশ্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে দূতাবাসের কূটনৈতিক স্ট্যাটাস বাতিল করে দেয়ার কথাও জানিয়েছিল ব্রিটেন৷
এর প্রতিবাদে অবশ্য কড়া কথা শুনিয়েছিলেন ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিকার্ডো পাটিনো৷ তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা ব্রিটেনের অধীন কোনো উপনিবেশ নই৷ ব্রিটেন যদি এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেটা হবে অবন্ধুসুলভ - যেটা মেনে নেয়া যায়না৷ আমরা কূটনৈতিকভাবেই ব্রিটেনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিবাদ জানাবো৷''
জেডএইচ / ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)