শরণার্থীদের জাহাজ ভিড়তে দেবে স্পেন
১১ জুন ২০১৮স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের অফিস সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘‘মানবিক এই সংকটের সময় এই মানুষগুলোকে নিরাপদে ভিড়তে দেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব৷’’
এর আগে, ইটালি ও মাল্টার কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের বেড়াজালে আটকে ছিল ফ্রেঞ্চ এনজিও জাহাজটি৷ কোথায় যাবে তার নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিল তারা৷ রোববার ইটালি এই জাহাজটিকে তাদের বন্দরে ভেড়ানোর অনুমতি দেয়নি৷ তাদের দাবি ছিল, জাহাজটি মাল্টায় ভেড়ানো হোক৷
অন্যদিকে, মাল্টা সে দাবি প্রত্যাখ্যান করে অভিযোগ করে বলেছে, জাহাজটিকে সমুদ্রে আটকে রেখে ইটালি আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করছে৷
ফ্রেঞ্চ সংস্থা এসওএস মেডিটারেনি বলেছে যে, জাহাজটিতে ৬২৯ জন আশ্রয়প্রত্যাশী আছে, যাদের ১২৩ জন অভিভাবকহীন শিশু এবং সাত জন সন্তানসম্ভবা নারী৷ এদের ৪শ' জনকে উদ্ধার করেছে ইটালির নৌবাহিনী ও বাণিজ্য জাহাজগুলো৷ এরপর তাদের অ্যাকুয়ারিউসে তুলে দেয়া হয়৷
রোববার ইটালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি বলেন, এখন থেকে ‘‘ইটালিও আশ্রয়প্রার্থীদের ‘না' বলবে''৷
ইটালির অতিডানপন্থি লীগের নেতা সালভিনি ও পরিবহণমন্ত্রী ফাইভ স্টার মুভমেন্টের নেতা দানিলো তোনিনেল্লি এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘‘যখন মানুষের জীবনের সুরক্ষার বিষয় আসে, তখন আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী মাল্টা সবসময় মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারে না৷''
‘‘ভূমধ্য সাগরে এখানকার সীমানাবর্তী সব দেশের সাগর, এবং তাদের (মাল্টা) এটা ভাবা উচিত নয় যে, এই বিরাট সমস্যার (অভিবাসন) সমাধান কেবল ইটালিই করবে,'' মন্ত্রীদ্বয় বলেন৷
মাল্টা অ্যাকুয়ারিউসকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে৷ সেখানে তারা বলেছে, লিবিয়ার জলসীমা থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের তুলেছে অ্যাকুয়ারিস এবং উদ্ধার করা হয়েছে ইটালির তত্ত্বাবধানে৷ তাই এটি মাল্টার দায় নয়৷
এমনকি ইটালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপে কন্টে মাল্টার সরকার প্রধান জোসেফ মুসকাটকে অনুরোধ করেছেন, অন্তত মানবিকতার খাতিরে জাহাজের যাত্রীদের গ্রহন করা হোক৷ কিন্তু মুসকাট তা প্রত্যাখ্যান করেন৷
গত পাঁচ বছরে লিবিয়া থেকে ছয় লাখেরও বেশি আফ্রিকান আশ্রয়প্রার্থী ইটালি গিয়েছেন৷ স্বেচ্ছাসেবী জাহাজগুলো এসব আশ্রয়প্রার্থীকে পাচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন ডানপন্থি রাজনীতিবিদরা৷
আশ্রয়প্রার্থীদের এই ঢল ইউরোপের দেশগুলোতে জাতীয়তাবাদী চেতনাকে উস্কে দিচ্ছে৷ সালভিনি এর আগে বলেছিলেন, ইটালি আর ‘‘ইউরোপের শরণার্থী ক্যাম্প হবে না৷''
এর আগে অন্য দেশে যাওয়ার রুট হিসেবে ইটালিকে ব্যবহার করতেন শরণার্থীরা৷ কিন্তু ডাবলিন রেগুলেশনের ফলে এখন প্রথম যে দেশে শরণার্থীরা আসেন, সে দেশেই তাঁদের আশ্রয়ের আবেদন করতে হয়৷
ইউরোপ জুড়ে শরণার্থীদের চলাচল সীমিত করতে এবং একাধিক দেশে আবেদন ঠেকাতে এই রেগুলেশনে একমত হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো৷ কিন্তু এর ফলে ইটালিতে ব্যাপক হারে বেড়েছে শরণার্থীর চাপ৷
জেডএ/এসিবি (এএফপি, এপি, ডিপিএ, রয়টার্স)