আলোচিত কয়েকটি শিল্পকর্ম চুরির কথা
২০১৭ সালের মার্চে জার্মানির বার্লিনের একটি মিউজিয়াম থেকে ১০০ কেজি ওজনের একটি স্বর্ণমুদ্রা চুরি হয়৷ ছবিঘরে থাকছে মূল্যবান কয়েকটি শিল্পকর্ম চুরির কথা৷
মোনালিসার হাসি হারিয়ে গিয়েছিল
১৯১১ সালে ফ্রান্সের ল্যুভর মিউজিয়াম থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত পোর্ট্রেট লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির ‘মোনালিসা’ চুরি হয়ে গিয়েছিল৷ ভিনসেঞ্জো পেরুজ্জিয়া নামের ইটালির এক তরুণ মিউজিয়ামের কর্মীর পোশাক পরে নিজের কোটের মধ্যে পেইন্টিংটি লুকিয়ে নিয়ে গিয়েছিল৷ ১৯১৩ সালে পুলিশ এটি উদ্ধার করে৷
সবচেয়ে বেশি চুরি হওয়া পেইন্টিং
ডাচ শিল্পী রেমব্রেন্ডট-এর আঁকা পোর্ট্রেট ‘জ্যাক থ্রি ডি গাইন’ ব্রিটেনের ডালউইচ পিকচার গ্যালারি থেকে এক বার, দু’বার নয়, চার বার চুরি হয়েছে৷ ১৯৬৬ সালে প্রথম বার চুরির পর ১৯৭৩, ১৯৮১ ও ১৯৮৬ সালেও চুরি হয়েছিল এই পোর্ট্রেট৷ তবে ভাগ্য ভালো যে প্রতিবারই এটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে৷
পুলিশের বেশে চুরি
১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনের ইসাবেলা স্টুয়ার্ড গার্ডনার মিউজিয়াম থেকে একসঙ্গে ১৩টি পেইন্টিং চুরি হয়ে যায়৷ দুই ব্যক্তি পুলিশের বেশে ঢুকে সেগুলো চুরি করেন৷ ছবিতে যেটি দেখতে পাচ্ছেন, তার নাম ‘কনসার্ট’৷ চুরি যাওয়া পেইন্টিংগুলোর মধ্যে এটিও ছিল৷ আজও মিউজিয়ামে চুরি যাওয়া পেইন্টিংগুলোর ফ্রেম খালি অবস্থায় রেখে দেয়া হয়েছে৷
ফান গখের শিল্পকর্ম চুরি
১৯৯১ সালে আমস্টারডামের ফান গখ মিউজিয়াম থেকে ২০টি পেইন্টিং চুরি হয়ে গিয়েছিল৷ অবশ্য মাত্র ঘণ্টাখানেক পরেই সেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল৷ তবে চোরদের ধরতে কয়েক মাস লেগে যায়৷ এক ব্যক্তি প্রথমে নিজেকে মিউজিয়ামের একটি বাথরুমে আটকে রেখেছিলেন৷ পরে একজন প্রহরীর সহায়তায় সেগুলো চুরি করেন তিনি৷
নিরাপত্তা প্রহরীকে পরাভূত করে
২০০৩ সালে দুই ব্যক্তি স্কটল্যান্ডের ড্রামলানরিগ ক্যাসেলের প্রহরীদের পরাস্ত করে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির ‘ম্যাডোনা অফ দ্য ইয়ার্নউইন্ডার’ নিয়ে যায়৷ ঐ শিল্পকর্মের দাম ছিল প্রায় ৭০ মিলিয়ন ইউরো৷ প্রায় চার বছর পর ২০০৭ সালে গ্লাসগো থেকে এটি উদ্ধার করা হয়েছিল৷
মিউজিয়ামে সশস্ত্র হামলা
এক্সপ্রেশনিস্ট এডভার্ড মুঙ্কের ‘দ্য স্ক্রিম’ ও ‘ম্যাডোনা’ নামের দুটি পেইন্টিং ২০০৪ সালে অসলোর মুঙ্ক মিউজিয়াম থেকে নিয়ে গিয়েছিল দুই সশস্ত্র ডাকাত৷ অস্ত্রের মুখে তারা দর্শণার্থীদের সামনে থেকেই পেইন্টিং দুটি নিয়ে গিয়েছিল৷ পুলিশ পরে সেগুলো উদ্ধার করতে পারলেও ‘দ্য স্ক্রিম’ এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে পরে সেটি আর সম্পূর্ণ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়নি৷
ইউরোপের সবচেয়ে বড় শিল্পকর্ম চুরির ঘটনা
২০০৮ সালে সুইজারল্যান্ডের জুরিখের ব্যুরলে মিউজিয়াম থেকে চারটি পেইন্টিং চুরি গিয়েছিল৷ পেইন্টিংগুলোর মোট মূল্য ছিল ১৮২ মিলিয়ন ডলার৷ ছবিতে ক্লোদ মনে’র ‘পপি ফিল্ড নেয়ার ভিথেই’ দেখতে পাচ্ছেন৷ চুরি যাওয়া পেইন্টিংয়ের তালিকায় এটিও ছিল৷ পরে সবগুলোই উদ্ধার করা হয়েছিল৷
স্বর্ণমুদ্রা চুরি
১০০ কেজি ওজনের এই মুদ্রা চুরি গেছে বার্লিনের বডে মিউজিয়াম থেকে৷ ২০১৭ সালের মার্চে এটি চুরি হয়েছে৷ ‘বিগ ম্যাপল লিফ’ নামে ক্যানাডায় তৈরি এই মুদ্রার উপাদানগত মূল্য প্রায় চার মিলিয়ন ডলার৷ ৫৩ সেন্টিমিটার উঁচু ও ৩ সেন্টিমিটার পুরু এই মুদ্রার সামনের অংশে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ছবি রয়েছে৷ জানালা দিয়ে চোর মিউজিয়ামে প্রবেশ করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: ইনেস আইসেলে/জেডএইচ
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী