1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আলমুথ শুল্ট : যার কাছে বিশ্বকাপের চেয়ে পরিবার ও মাতৃত্ব বড়

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

এ মুহূর্তে তার বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকার কথা৷ কিন্তু জার্মানির নারী ফুটবল দলের গোলরক্ষক জানালেন আবার তিনি সন্তানের জননী হওয়ার অপেক্ষায়৷

https://p.dw.com/p/4NbPm
আলমুথ শুল্ট
আলমুথ শুল্টছবি: Brad Smith/ZUMA Wire/IMAGO

আলমুথ শুল্ট আরো জানান, মাতৃত্ব, পরিবার তার কাছে অনেক বড়, তাই আসন্ন বিশ্বাপে আর খেলবেন না৷

অন্তসত্বা হওয়ায় ক্যারিয়ার শেষ হয়েছে- এমন খেলোয়াড় অনেক আছে নারীদের ফুটবলে৷ অন্য মহাদেশে তো আছেই, ইউরোপেও এমন দৃষ্টান্ত নেহয়েত কম নয়৷

অন্তসত্বা হওয়ায় দল থেকে বাদ পড়েছেন- এমন নারী ফুটবলার জার্মানিতেও কম নেই৷ চেলিয়া সাসিচ এবং ফাতমিরে ‘লিরা' আলুশির মতো তারকা খেলোয়াড় মা হওয়ার বাসনা পূরণ করতেই আগেভাগে ক্যারিয়ারে ইতি টেনেছেন৷ মা হয়ে, নবাগত সন্তানকে একটা সময় পর্যন্ত পেলে-পুষে যখন মাঠে ফিরবেন তখন আর কোনো দলে আগের মতো সুযোগ থাকবে না- এ কথা জানতেন বলেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন তারা৷

সাম্প্রতিক সময়ে পরিস্থিতি অবশ্য অনেকটা বদলেছে৷ জার্মানির আরেক নারী ফুটবলার মেলানি লয়পোলৎ্স মা হওয়ার পর আবার মাঠে ফিরেছেন, খেলছেন ইংল্যান্ডে, চেলসির হয়ে৷

ফ্রান্সের অলিম্পিক লিওঁ ক্লাবে ফিরতে সারা বিয়র্ককে অবশ্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে৷ একসময় আলমুথ শুল্ট এবং সারা বিয়র্ক একসঙ্গে বুন্ডেসলিগায় খেলেছেন ভল্ফসবুর্গের হয়ে৷ মা হওয়ার পর তার সাবেক সতীর্থকে লিওঁর হয়ে মাঠে ফিরতে সমস্যা হচ্ছে দেখে খুব খারাপ লাগছিল আলমুথের৷ গত মাসে সারা মামলায় জমিতেছেন, ফলে খানিকটা স্বস্তি ফিরেছে আলমুথের মনে৷ আদালত ফ্রান্সের সব ক্লাবকে ফিফার বেঁধে দেয়া নিয়ম  অনুযায়ী অন্তসত্বা সব নারী ফুটবলারকে কমপক্ষে ১৪ সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়ার আদেশ দিয়েছে৷ আদেশে আরো বলা হয়, মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় প্রত্যেক নারী ফুটবলারকে বেতনের দুই তৃতীয়াংশ দিতে হবে, অন্তসত্বা হওয়ার কারণে কোনোভাবে কোনো অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না নারী ফুটবলারদের৷

জার্মানিকে অলিম্পিক সোনা এবং ভল্ফসবুর্গকে বুন্ডেসলিগা ও চ্যাম্পিয়ন্সলিগ জেতানো আলমুথ শুল্টের জন্য মা হওয়া নতুন কোনো অভিজ্ঞতা নয়৷ ২০২০ সালে যমজ সন্তানের মা হন তিনি৷ পরের বছর ইউরো খেলেছেন সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে৷ তাহলে বিশ্বকাপের মতো স্বপ্নের আসরে কেন খেলবেন না? ৩২ বছর বয়সি গোলরক্ষক জানান, তার কাছে পরিবার এবং অনাগত সন্তানের সুস্থতা বড় কথা বলেই দেশের হয়ে ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে তিনি খেলবেন না, ‘‘

‘‘আমার কাছে পরিবার সবসময়ই সবার আগে৷ সারা জীবন এভাবেই ভেবেছি৷ আমার  মা-বাবার কাছ থেকে শিখেছি- এটা (পরিবার) সারা বিশ্বের মধ্যেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷''

জার্মানির হয়ে ৬৬ ম্যাচ খেলা আলমুথের আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণ, ‘‘ ক্যারিয়ারের একটা পর্যায়ে বিরতি তো নেয়াই যায়৷ আমি জানি কেন বিরতিটা নিচ্ছি৷ আমার দুটি সুস্থ, সবল, হাসিখুশি সন্তান আছে৷ সন্তানরাই আমার জীবনে সবচেয়ে বড় বিষয়৷ আমি এ নিয়েই খুশি৷''

আগামী আগস্টে জার্মানির মেয়েরা যখন বিশ্বকাপ নকআউট পর্বে লড়বেন, আলমুথের তখন তৃতীয় সন্তানের মা হওয়ার কথা৷ ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবলের সফল খেলোয়াড় জানালেন দেশের জন্য সবচেয়ে বড় সাফল্য আনার চ্যালেঞ্জ থেকে নিজেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্তটা আসলে সহজ ছিল না৷ তবে কঠিন সিদ্ধান্তটা নিতে তাকে সহায়তা করেছে ১৬ বছরের ক্যারিয়ারের যাবতীয় প্রাপ্তি, ‘‘আমি মেয়েদের ফুটবলের সব বড় আসরেই খেলেছি৷ এমন সুযোগ পাওয়ায় আমি কৃতজ্ঞ৷ ওই সুযোগগুলো পেয়েছি বলেই আসলে বিশ্বকাপ মিস করার মতো সিদ্ধান্ত নেয়া কিছুটা সহজ হয়েছে৷''

আলমুথ জানেন, গত ২০ বছরেরও বেশি সময়ে মা হওয়ার পরও জাতীয় দলে ফিরে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে অংশ নেয়া প্রথম জার্মান ফুটবলার তিনি৷ এখন এ-ও জানেন, আগস্টে বিশ্বকাপ না খেলার মানে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেরও ইতি৷ এই বাস্তবতা তিনি মেনেই নিয়েছেন৷ আলমুথ শুল্ট  ঠিক করেছেন বিশ্বকাপ না খেলার মধ্য দিয়ে জার্মানিতে ফুটবল ক্যারিয়ারেরও ইতি টানবেন, মাঠে আবার ফিরলে খেলবেন শুধু অন্য দেশের অন্য কোনো ক্লাবের হয়ে৷

ম্যাট পিয়ারসন/ এসিবি