‘আমার বাড়ি ছিল, জমি ছিল, এখন কিছুই নেই’
৩০ মে ২০২১গতবছর মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশ ও ভারতে আঘাত হেনেছিল আমফান৷ এতে একশোর বেশি মানুষ প্রাণ হারান৷ ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক লাখ আট হাজার কোটি টাকা৷
মাফাউর জানান, সম্পদ ও আয় মিলিয়ে তার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ টাকা৷ ঘরবাড়ি, জমিজমা হারিয়ে তিনি এখন এক আত্মীয়ের জমিতে বাস করছেন৷ আর ঋণ নিয়ে ভ্যান কিনে টাকা আয়ের চেষ্টা করছেন৷
মাফাউরের মতোই পরিস্থিতি হয়েছে খুলনার হাজতখালী গ্রামের পরিতোষ চন্দ্র মন্ডলের৷ আমফানে তার বাড়ি ও জমি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে৷ তাই এখন তিনি বাঁধের উপর চালাঘর তুলে পরিবার নিয়ে বাস করছেন৷ ‘‘একসময় আমার সব ছিল৷ নিজের জমিতে চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতাম৷ কিন্তু এখন আমার কিছু নেই,'' থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেন তিনি৷
৪৫ বছর বয়সি মন্ডল জানান, ‘‘আমি পরিবার নিয়ে বাঁধের উপর থাকি৷ দিনমজুরির মাধ্যমে আমি পাঁচ সদস্যের পরিবার চালাচ্ছি৷ কিন্তু এই এলাকায় কোনো কাজ নেই৷ তিন বেলা খাবার জোগাড় করা খুব কষ্ট হয়ে উঠছে৷’’
মন্ডলের এলাকার অনেকেই বাঁধ কিংবা রাস্তার ধারে চালাঘর তুলে বাস করছেন৷ কেউ আবার সাইক্লোন সেন্টার কিংবা স্কুল ভবনে থাকছেন৷ অনেকে কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়ে গেছেন৷ বেশিরভাগই পরিবারের সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছেন কিংবা ফেরত দিতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত না হয়েও ঋণ নিয়েছেন৷
সাতক্ষীরার এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল বলছেন, সাইক্লোন আসার আগের প্রস্তুতির বিষয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে৷ এখন সময় এসেছে সাইক্লোনের পর ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার কাজ জোরদার করা৷ তিনি বলেন, ‘‘সাইক্লোনের আগে ক্ষতি ও মৃত্যু কমাতে অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়৷ কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য খুব কম উদ্যোগ দেখা যায়৷’’
‘ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেডক্রস অ্যান্ড রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিজ' বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত প্রধান সঞ্জীব কুমার কাফলও মনে করছেন শুধু প্রস্তুতি নয়, পুনর্বাসনকাজেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে৷ এ কাজে আরও বেশি অর্থ খরচ করতে হবে৷
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব মোহাম্মদ মোহসিন বলেন, করোনার কারণে বাজেট কমে যাওয়া ও চলাচলে সীমাবদ্ধতার কারণে আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পুনর্বাসন কাজ ব্যাহত হয়েছে৷ এর মধ্যেও যে পুনর্বাসন কাজ হয়েছে তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি৷
জেডএইচ/এফএস (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন)