আনিস-হত্যার ন্যায় পেতে পঞ্চায়েত ভোট হাতিয়ার
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হয়েছেন আনিস খানের ভাই। পুলিশ আনিসকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল।
চেনা রাজনীতি
বাংলার রাজনীতিতে ‘খুন’ হওয়া ব্যক্তির পরিবারকে ভোটে দাড় করানোর রীতি নতুন নয়। রিজওয়ানুর রহমানের হত্যার পর দাদা রুকবানুরকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল, নন্দীগ্রামের ফিরোজা বিবির ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছিল। নদিয়ার নিহত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রীকে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল।
আনিস খান হত্যা
২০২২ এর ফেব্রুয়ারি। নিহত হন হাওড়ার ছাত্র নেতা আনিস খান। তোলপাড় হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। তারপর তা খানিক থিতিয়ে গেলেও, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আবার তা খবরে ফিরেছে। নিহত আনিসের দাদা সামসুদ্দিন খানকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী করেছে সিপিএম।
আনকোরা সামসুদ্দিন
আনিসের বাড়ির অঞ্চল কুশবেড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির ৪২ নম্বর আসনে প্রার্থী করা হয়েছে সামসুদ্দিনকে। সামসুদ্দিন আনিস খানের খুড়তুতো ভাই। আগে তিনি দুবাইতে থাকতেন। রাজনীতিতে নতুনই বলা চলে।
পাশে আনিসের বাবা
ভাইপোর সমর্থনে ভোটের বাজারে পথে নেমেছেন আনিসের বাবা সালেম খান। নিজে ভোটে না দাঁড়ালেও কুশবেড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন আসনের সিপিএম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের প্রার্থীদের হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি।
ভোট প্রচার
প্রার্থী সামসুদ্দিনকেও দেখা গেল অঞ্চলের মানুষদের কাছে গিয়ে মৌখিক প্রচার চালাতে। ডিডাব্লিউ-এর প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন, জেতার ব্যাপারে তারা ১০০ শতাংশ আশাবাদী। বললেন, “এই চোরেদের পঞ্চায়েত থেকে সরানোর লক্ষ্যেই ভোটে দাঁড়িয়েছ।''
আনিসের দাদার কথা
আনিসের নিজের দাদা সাবির জানান, সক্রিয় রাজনীতিতে আসার ইচ্ছে যে প্রথম থেকে ছিল, এমনটা নয়। সিপিএম নেতাদের আশ্বাস পেয়ে আনিস-হত্যার বিরুদ্ধে নতুন করে লড়াইয়ের ডাক দিতেই ভোটের ময়দানে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাবার দেওয়াল লিখন
সিপিএমের নির্বাচনী প্রতীক কাস্তে-হাতুড়ি-তারা আঁকতে দেখা গেল আনিসের বাবা সালেম খানকে। সালেম জানান, বহুকাল ধরেই তিনি বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। যারা আনিসকে খুন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে লড়তেই এই ভোটের রাজনীতিতে প্রবেশ।
ন্যায়-বিচারের আশায়
সালেম আরও বলেন, “আমার আনিসের খুনের ন্যায় বিচার পেতে হলে আমায় রাজনৈতিকভাবে আরও সক্রিয় হতে হবে। পঞ্চায়েতে আমার দল এলে তবেই তদন্ত আরও এগোবে।”
শাসকদলের হুমকি
সালেমের অভিযোগ, তৃণমূল থেকে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে ভোটের পর তার এবং তার ভাইয়ের বাড়ি দখল করে তৃণমূল পার্টি অফিস বানাবে।
পাশে বাম নেতৃত্ব
জেলা বাম নেতৃত্বের দাবি তারা প্রথম থেকেই আনিসের পরিবারের সঙ্গে আছেন। এই পরিবার যাতে সুবিচার পায়, তার জন্যই তাদের এই লড়াই। সেই কারণেই সিপিএমের প্রার্থী হতে রাজি হয়েছেন সামসুদ্দিন খান।
তৃণমূলের বক্তব্য
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, আনিস খানের মৃত্যুর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূলকে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। নির্বাচনে যে কেউ প্রার্থী হতেই পারেন। কিন্তু মানুষ উন্নয়নের পক্ষেই ভোট দেবেন।