আদালতে দোষী সাব্যস্ত ট্রাম্প, রায় জুলাই মাসে
৩১ মে ২০২৪নিউ ইয়র্কের এক আদালত বৃহস্পতিবার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলায় সিদ্ধান্ত জানিয়েছে৷ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন৷ ব্যবসার নথিপত্র গোপন করে স্টর্মি ড্যানিয়েল্স নামের অতীতের এক পর্ন তারকার মুখ বন্ধ করতে ট্রাম্প অন্যায় করেছেন বলে জুরির সব সদস্য একযোগে তাঁকে দোষী হিসেবে গণ্য করেছেন৷ ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে ট্রাম্প এমন কুকীর্তি করেছিলেন বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছিল৷ এর আগে অ্যামেরিকার কোনো প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন নি৷ উল্লেখ্য, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি মামলা চলছে৷ তবে নির্বাচনের আগে সে সব মামলায় চূড়ান্ত রায়ের আশা করা হচ্ছে না৷
এমন ‘ঐতিহাসিক' ঘটনার ফলে অ্যামেরিকায় নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ বৃহস্পতিবার আদালতের সিদ্ধান্ত এবং আগামী ৫ই নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত অন্যান্য মামলায় অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্প আদৌ নির্বাচনে প্রার্থী থাকতে পারবেন কিনা৷ সেই বাধা না থাকলেও কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করা সম্ভব কিনা, সেই বিষয়টিও আইনি বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে৷ বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর আদালত আউন অনুযায়ী প্রতিটি অভিযোগের কারণে ট্রাম্পকে চার বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের রায় দিতে পারে৷ কিন্তু তাঁকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে না বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ আগেই তিনি জামিন পেয়েছিলেন৷ আগামী ১১ই জুলাই আদালত রায় দেবে বলে বিচারপতি জানিয়েছেন৷ এর ঠিক চার দিন পরেই রিপাব্লিকান দলের কনভেনশনে ট্রাম্পের আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন পাওয়ার কথা৷ শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করলে ট্রাম্প নিজেকে ক্ষমা করার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন বলে কিছু আইনি বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷
ট্রাম্প নিজে আদালতের রায়ের কারণে দমে যেতে নারাজ৷ নিজেকে ‘রাজনৈতিক বন্দি' হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বরং প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে আরো চাঁদা তোলার উদ্যোগ নিচ্ছেন৷ রিপাব্লিকান দলের অনেক সমর্থক সেই ডাকে সাড়াও দিচ্ছে৷ রায় ঘোষণার পর অনেক দাতা ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারের জন্য কোটি কোটি ডলার অংকের চাঁদার অঙ্গীকার করেছেন৷ মোটকথা অ্যামেরিকার বিচার বিভাগ অন্যায়ভাবে সাবেক প্রেসিডেন্টকে ‘ফাঁসাতে চাইছে', এমন প্রচারণার মাধ্যমে ট্রাম্প শিবির আপাতত যথেষ্ট ফায়দা তুলতে পারছে৷ নির্বাচনের ফলকেই ট্রাম্প জনগণের ‘প্রকৃত রায়' হিসেবে তুলে ধরছেন৷
বাইডেন শিবির আদালতের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে৷ ‘কেউ আইনের ঊর্দ্ধে নয়৷ মার্কিন গণতন্ত্রের জন্য ট্রাম্প আরো বড় হুমকি হয়ে উঠেছেন বলে বাইডেনের নির্বাচনি প্রচার টিম মন্তব্য করেছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)