আট বছর লড়াইয়ের পর চাকরি পেলেন কবিতা
২৬ আগস্ট ২০২২২০১২ সালে কবিতা ভূগোলের শিক্ষিকা পদে চাকরির জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরি পাননি। পরে তথ্য জানার অধিকার আইনে তিনি যারা চাকরি পেয়েছেন, তাদের নম্বর জানতে চান। দেখা যায়, তার চেয়ে কম নম্বর পেয়ে চাকরি করছেন শ্রীময়ী বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক শিক্ষিকা। এরপরেই আদালতের দ্বারস্থ হন কবিতা।
আইনজীবী হিসেবে কবিতা পাশে পান সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত প্রথম কবিতার মামলাটি শোনেন এবং শ্রীময়ীর চাকরি বাতিল করে কবিতাকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশে হস্তক্ষেপ করে। মামলা দীর্ঘায়িত হতে থাকে।
অবশেষে বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিংহ মামলার নিষ্পত্তি করেন। নির্দেশ দেন, বাড়ির কাছেই কবিতাকে কোনো স্কুলে নিয়োগ করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, ২০১৪ সাল থেকে চাকরি করলে কবিতা আজ যা বেতন পেতেন, সেই টাকাই তাকে দিতে হবে। দিতে হবে ২০১৪ সাল থেকে চাকরির যাবতীয় সুযোগসুবিধা।
স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) অবশ্য সহজে নির্দেশ মেনে নিতে চায়নি। তারা প্রথমে বিচারপতিকে জানিয়েছিলেন, শূন্যপদ নেই। যা শুনে বিচারপতি এসএসসি কৌঁসুলিকে তিরস্কার করেন। এরপর ৬০ কিলোমিটার দূরের একটি স্কুলে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। বিচারপতি তা-ও মানতে চাননি। বলা হয়, এতদিন অপেক্ষার পর অত দূরে যাবেন না কবিতা। অবশেষে বাড়ির কাছেই একটি স্কুলের নিয়োগপত্র পান কবিতা।
কবিতা জানিয়েছেন, তার মতো আরো অনেকে এখনো লড়াই করছেন। নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল বলে তিনি অভিযোগ করেন। তবে আদালতের নির্দেশে তিনি খুশি।
স্কুল নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে পশ্চিমবঙ্গে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দুর্নীতির অভিযোগে ইডি-র জালে। আপাতত তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে। স্কুলশিক্ষার সঙ্গে যুক্তি সাবেক একাধিক কর্মকর্তা ইডি এবং সিবিআইয়ের জালে। আদালত একাধিক নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের নির্দেশেই সিবিআই তদন্তে নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে আশার আলো দেখছেন কবিতার মতো আরো অনেক চাকরিপ্রার্থী। দীর্ঘদিন ধরে যারা কলকাতায় আন্দোলন চালাচ্ছিলেন।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)