আট কোটি ডলার, নয়ত ভয়াবহ বিপর্যয়
১২ মে ২০২২ট্যাংকার থেকে তেল অপসারণে এখন পর্যন্ত দাতা দেশগুলোর কাছ থেকে তিন কেটি ৩০ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে, যা প্রয়োজনীয় তহবিলের অর্ধেকেরও কম৷ জাতিসংঘ বলছে, ট্যাংকারটি কোন সময় ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যার কারণে সমুদ্রে বিপুল তেল ছড়িয়ে পরিবেশের ভয়ানক বিপর্যয় ঘটবে৷
১৯৮৯ সালের আলাস্কায় এক্সন ভালদেজ ট্যাংকার থেকে কয়েক কোটি লিটার তেল আর্কটিক সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ে৷ পরিবেশে যার নেতিবাচক প্রভাব এখনও রয়ে গেছে৷ জাতিসংঘ বলছে, এফএসও সেফারের বিপর্যয় ঘটলে এর চেয়েও ভয়াবহ পরিণতি হবে৷
৪৫ বছরের পুরাতন ট্যাংকারটি দীর্ঘদিন ভাসমান তেল সংরক্ষণাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে৷ বর্তমানে সেটি ইয়েমেনের হুদাইদা বন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে৷
আরো অর্থ প্রয়োজন
১১ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল বহনকারী ট্যাংকারটি জরুরিভিত্তিতে অপসারণ করতে আট কোটি ডলার প্রয়োজন৷ তারমধ্যে নেদারল্যান্ডসের কাছ থেকে প্রায় ৮০ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি মিলেছে৷ তিন কোটি ৩০ লাখ ডলারের বাকিটা ব্রিটেন, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, লুক্সেমবুর্গ, নরওয়ে, কাতার, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইয়নিয়ন দিবে বলে জানিয়েছে৷ তারপরও সেটি প্রয়োজনের অর্ধেকেরও কম৷
জাতিসংঘের হিসাবে, ট্যাংকারটিতে যে পরিমাণ তেল রয়েছে ছড়িয়ে পড়লে তা পরিস্কার করতে দুই হাজার কোটি ডলার লাগবে৷
ইয়েমেনে জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয়কারী ডেভিড গ্রেসলি এক বিবৃতিতে জানান, ট্যাংকারটি অপসারণে চার মাস সময় লাগবে৷ এই অভিযান শুরুর জন্য দ্রুত বাকি অর্থ প্রয়োজন৷ কেননা আবহাওয়ার কারণে পরবর্তীতে এই অভিযান চালানো কঠিন হয়ে পড়বে৷ তিনি বলেন, ‘‘বছর শেষের ঝড়ো বাতাস আর তীব্র স্রোত এড়ানোর জন্য আমাদেরকে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এই অভিযান শেষ করতে হবে৷ ...নয়ত এটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকবে এবং যেকোন অভিযান পরিচালনাও ঝুঁকিপূর্ণ হবে৷’’
আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংস্থা গ্রিনপিসও দ্রুত তহবিলের ব্যবস্থা করতে দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷ এদিকে দাতা দেশগুলোর এক সম্মেলনের আগে গ্রেসলি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ট্যাংকারটি থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই তেল ছড়াতে শুরু করতে পারে৷ এর ফলে সাত বছরব্যাপী যুদ্ধে থাকা ইয়েমেন আরেক দফা ভয়াবহ পরিবেশগত ও মানবিক বিপর্যয়ে পড়বে৷
জাতিসংঘের সতর্কতা অনুযায়ী, শুধু ইয়েমেন নয় এমন কিছু ঘটলে গোটা অঞ্চলের মৎস্যজীবী কয়েক কোটি মানুষ সংকটে পড়বেন৷ ঝুঁকিতে পড়বে সৌদি আরব, ইরিত্রিয়া, জিবুতি এবং সোমালিয়ার মতো আশেপাশের দেশগুলোও৷
এফএস/কেএম (এএফপি, রয়টার্স)