আকাশ থেকে শৌচাগার, যুক্তরাজ্যে এখন সর্বত্র ট্রাম্প!

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে নিয়ে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের একটু বাইরে অবস্থিত স্টানস্টেড বিমানবন্দরে আসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাহন ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ বিমান৷ এই সফরে আয়ারল্যান্ড ও ফ্রান্স যাবেন তাঁরা৷

লন্ডনে আসছেন ডনাল্ড ট্রাম্প, তাঁর জন্য বিছানো হয়েছে লাল কার্পেট৷ কিন্তু এমন আচরণ আদপে মোটেও লন্ডন-স্বরূপ নয়, এমন মন্তব্য করে একটি টুইট করেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান৷ এর উত্তরে ট্রাম্প সাদিক খানের আচরণকে ‘‘বোকা ও কদর্য‘‘ বলেন৷

ট্রাম্প যেখানেই যান, সেখানেই সৃষ্টি হয় ট্রাম্প-বিরোধী পরিবেশ৷ লন্ডনেও হলো তাই৷ মানবাধিকার সংস্থা এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আয়োজনে লন্ডনের বিখ্যাত ভক্সহল ব্রিজের গা বেয়ে ঝুলতে দেখা যায় ,‘ট্রাম্পকে ঠেকাও‘ ব্যানার৷

যুবরাজ চার্লসের সাথে বাকিংহাম প্যালেসে দেখা করেন ডনাল্ড ট্রাম্প৷ ছবিতে দুইজন করমর্দনের আগের মূহুর্তে৷

বাকিংহাম প্যালেসে সাদর অভিবাদন পেলেও প্রতিবাদী জনতা কিন্তু পিছু ছাড়েনি৷ ওপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্ল্যাকার্ড হাতে এগারো বছরের শাকিরা রহমানকে৷ সেখানে ট্রাম্পের পরিচয় ‘নারীবিদ্বেষী, বর্ণবিদ্বেষী, মস্তান’৷

১০৩-তোপের বন্দুক সেলামিও জুটল এবারের যুক্তরাজ্য সফরে৷ গোলন্দাজ বাহিনীর সদস্যরা এই বন্দুক-সেলামির আয়োজন করেছিলেন লন্ডনের ঐতিহাসিক টাওয়ার অফ লন্ডনের সামনে৷

লন্ডনের সব বাসিন্দাই যে ট্রাম্পের ঘোর বিরোধী, তা ভুল প্রমাণ করে ওপরের ছবিটি৷ সেখানে এক ট্রাম্প-সমর্থকের সাথে রীতিমত বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে বাকিংহাম প্যালেসের সামনে জড়ো হওয়া একজন প্রতিবাদীকে৷

সোমবার সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের সম্মানে প্রথা মেনে একটি রাজকীয় নৈশভোজ আয়োজন করা হয় বাকিংহাম প্যালেসে৷ রানী এলিজাবেথ তাঁর কথায় বারবার আনতে থাকেন ন্যাটো, জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনের গুরুত্বের কথা৷ প্রসঙ্গত, সময় সময় এই ন্যাটো বা জাতিসংঘের কড়া নিন্দা করেন ট্রাম্প৷

দুই দেশের মধ্যে উন্নততর বাণিজ্য সম্পর্ককে মাথায় রেখে মঙ্গলবার ডনাল্ড ট্রাম্প ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে আলোচনায় বসলেন৷ ব্রেক্সিটের মতো বিষয়ে এই দুই নেতার মতের অমিল থাকলেও বাণিজ্য বা ইরানের পরিস্থিতির মতো বিষয়ে তাঁরা অনেকটাই একমত৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, যিনি যুক্তরাজ্যে এসেছেন দেশের নেতৃত্বের সাথে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করতে, প্রতিবাদের মুখে বর্তমানে পরিণত হয়েছেন একটি শিশু-বেলুনে, যা আসলে তাঁর কিছু শিশুসুলভ আচরণের প্রতিরূপ, বলে মনে করছেন প্রতিবাদী মানুষের একাংশ৷

যুক্তরাজ্যে ট্রাম্প-বিরোধী প্রতিবাদ বর্তমানে রূপ নিয়েছে একটি কার্নিভালের আকার৷ ‘কার্নিভাল অফ রেসিস্ট্যান্স’ বা ‘প্রতিবাদের মেলা’ নামের এই বিক্ষোভ সমাবেশগুলিতে প্রদর্শিত হচ্ছে বেশ কিছু অভিনব প্রতিবাদশৈলী৷ যার মধ্যে রয়েছে ট্রাম্পের ছবি দেওয়া টয়লেট পেপারও!