অযোধ্যায় রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্ক মিটলো না
৯ মে ২০১১অযোধ্যার রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদের বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমিকে মামলাকারী তিনপক্ষের মধ্যে ভাগ করে দেবার আদেশ দেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ গত বছর৷ একভাগ নির্মোহী আখড়া,একভাগ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং একভাগ রামলালা বিরাজমান সংগঠন৷ বিভিন্ন সংগঠন ঐ রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করলে সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় আজ খারিজ করে স্থিতাবস্থা রাখার আদেশ দেন৷ সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারকের বেঞ্চ আফতাব আলম এবং আর.এম লোধা বলেন, কোন পক্ষই যখন জমি ভাগের জন্য আদালতে যায়নি, তখন এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে অদ্ভুতই বলা যায়৷
সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ হিন্দু সংগঠন রামলালা বিরাজমানের আইনজীবী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, এতে বাস্তব অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি৷ অর্থাৎ আদালতের ১৯৯৩-এর আদেশ অনুযায়ী রামলালার অস্থায়ী মন্দিরে পুজোপাঠ যথারীতি চলবে৷ রাজনীতিক হিসেবে নয়,আইনজীবী হিসেবে বলতে পারি, জমি ভাগ করে ঐ বিতর্কের সমাধান হয়না৷ আবেদনকারীরা সেটা চায়ওনি৷ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং হিন্দুমহাসভারও একই মত৷
এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ও জামাত-ই-উলেমা-ই হিন্দের আপত্তি, যে স্থানটি রামচন্দ্রের জন্মভূমি বলে আদালত চিহ্নিত করেছেন, তা নিছক ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে, প্রমাণের ভিত্তিতে নয়৷
১৫২৮ সালে প্রথম মোঘল সম্রাট বাবরের এক সেনাপতি মীর বাকি হিন্দুদের বিশ্বাস মতে রামজন্মভূমিতে মন্দির ভেঙে বাবরি মসজিদ তৈরি করেন বলে উল্লেখ করা হয়৷ ১৮৮৫ সালে জনৈক পুরোহিত রঘুবর দাসকথিত রামজন্মস্থানে পুজোপাঠ ও মন্দির গড়ার অধিকার চেয়ে ফৈজাবাদ আদালতে মামলা করেন৷ আদালত অনুমতি দেননি৷ স্বাধীনতার পর ১৯৪৯ সালে উভয় সম্প্রদায় বাবরি মসজিদ সংলগ্ন জমির মালিকানা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়৷ ঐ বছরেই মসজিদে ঢুকে রামমূর্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়৷ তারপরই কেন্দ্রের নির্দেশে মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়৷ ১৯৮৬তে রাজীব গান্ধীর জমানায় মসজিদের তালা খুলে দেবার পক্ষে রায় দেন ফৈজাবাদ আদালত৷
৯০-এ বিজেপি নেতা এল.কে আডবানির রথযাত্রায় সাম্প্রদায়িক আবেগ উস্কে দেয়া হয়৷ তার পরবর্তী ঘটনাবলীতে ৯২সালের ডিসেম্বরে মৌলবাদী হিন্দু সংগঠনগুলি গুঁড়িয়ে দেয় বাবরি মসজিদ৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক