১২ বছরে রেকর্ড মাত্রায় অ্যামাজন ধ্বংস
১ ডিসেম্বর ২০২০দুশ্চিন্তায় পরিবেশবিদরা। গত ১২ বছরের নিরিখে ২০২০ সালে সব চেয়ে বেশি ধ্বংস হয়েছে অ্যামাজন জঙ্গল। মাত্র এক বছরে ১১ হাজার ৮৮ বর্গ কিলোমিটার জঙ্গল কেটে ফেলা হয়েছে বলে সম্প্রতি একটি রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে। পরিবেশবিদরা এই ঘটনার জন্য আঙুল তুলছেন ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জাইয়া বলসোনারোর দিকে। তাঁদের দাবি, বলসোনারোই জঙ্গল কাটতে উৎসাহ দিয়েছেন।
পৃথিবীর মোট কার্বন নিঃসরণের একটি বড় অংশ টেনে নেয় অ্যামাজনের জঙ্গল। যে কারণে এই জঙ্গলকে পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয়। প্রায় ৩০ লাখ গাছের স্পিসিস এবং জন্তু ও কীট পতঙ্গ রয়েছে এই জঙ্গলে। রয়েছে প্রায় দশ লাখ জনজাতি। দীর্ঘদিন ধরে এই জনজাতিই জঙ্গলকে রক্ষা করে চলেছে। সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ক্রমান্বয়ে ধ্বংস করা হয়েছে জঙ্গলকেও। কিন্তু গত দুই দশকে জঙ্গল কাটার প্রবণতা খানিক কমেছে। তার সব চেয়ে বড় কারণ, বিশ্ব জুড়ে পরিবেশ সচেতনতা বেড়েছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে এবং হচ্ছে। পরিবেশবিদদের বক্তব্য, অ্যামাজনের জন্য বিশ্ব উষ্ণায়নের মাত্রা প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে।
সমস্যা হলো, ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বলসোনারো পরিবেশ নিয়ে তত চিন্তিত নন। প্রকাশ্যেই তিনি অ্যামাজন ধ্বংসের সপক্ষে সওয়াল করেন। ২০১৯ সালে অ্যামাজন অঞ্চল থেকে খনিজ সম্পদ সংগ্রহের জন্য জঙ্গল কাটার ছাড়পত্র তিনি দিয়েছিলেন। অ্যামাজন অঞ্চলে চাষবাসের ছাড়পত্রও তিনি দিয়েছেন। যা নিয়ে বহু প্রতিবাদ হয়েছে।
পরিবেশবিদদের বক্তব্য, ২০০৮ সালে অ্যামাজনের সাত হাজার ৫৩৬ বর্গফুট ধ্বংস করা হয়েছিল তথাকথিত উন্নয়নের জন্য। তখনো বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক হয়েছিল। এর পর অ্যামাজন রক্ষার বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছিল। ২০১৯ সালে বলসোনারো ক্ষমতায় এসে সেই সমস্ত সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নতুন করে জঙ্গল ধ্বংস করতে শুরু করেছেন। পরিবেশবিদরা বলছেন, যে ভাবে জঙ্গল নষ্ট হয়েছে গত এক বছরে, তা যদি চলতে থাকে, তা হলে অচিরেই এর প্রভাব আবহাওয়ায় পড়তে শুরু করবে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)