‘হ্যান্ডস আপ, ডোনট শ্যুট'
২১ আগস্ট ২০১৪ঘটনার সময়কাল আগস্ট ৯৷ সেদিন রাতে এক সাদা পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১৮ বছরের মাইকেল ব্রাউন৷ সেসময় তাঁর কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে এখন নিয়মতি বিক্ষোভ হচ্ছে ফার্গুসনে৷ পরিস্থিতি সামলাতে দেশের সরকার সেখানে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের পাঠিয়েছে৷
প্রায় প্রতি রাতেই ফার্গুসনে বিক্ষোভ হচ্ছে৷ প্রতিবাদকারীরা হাত উপরে তুলে ‘হ্যান্ডস আপ, ডোনট শ্যুট' বলে স্লোগান দিচ্ছে৷ স্লোগানটি এতই জনপ্রিয় হয়েছে যে, মঙ্গলবার ফার্গুসনের একটি স্কুল বাসে থাকা শিক্ষার্থীরা যখন ব্রাউন হত্যাকাণ্ডের স্থানটি দিয়ে যাচ্ছিল তখন তারা বাসেই হাত উপরে তুলে স্লোগানটি দিতে থাকে৷
স্লোগান ছাড়াও প্রতিবাদ কখনো কখনো সহিংসতায় রূপ নিয়েছে৷ এছাড়া পুলিশের দিকে মূত্র নিক্ষেপের মতো ঘটনাও ঘটেছে৷ ফলে কয়েক প্রতিবাদকারীকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ৷
জানা গেছে, ফার্গুসনের জনসংখ্যা প্রায় ২১ হাজার৷ এর মধ্যে বেশিরভাগই আফ্রিকান-অ্যামেরিকান৷ কিন্তু শহরের পুলিশ বিভাগ সহ, প্রশাসন, রাজনীতি সব স্থানেই শ্বেতাঙ্গ মানুষের পদচারণা৷ শহরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য এগুলো অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ
ফার্গুসনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে৷ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান নাভি পিল্লাই বিক্ষোভকারীদের দমনে অত্যধিক শক্তি প্রয়োগের সমালোচনা করেছেন৷ তিনি বিক্ষোভ করার অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোরও আহ্বান জানান৷
নিজের চরকায় তেল দাও
ফার্গুসনের ঘটনায় চীন ও রাশিয়ার গণমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে৷ চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এক মন্তব্য প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের উচিত সবসময় অন্যের দিকে আঙুল না তুলে নিজের সমস্যাগুলোর সমাধান করা৷'' এছাড়া টেলিভিশন চ্যানেল সিসিটিভি ফার্গুসনের ঘটনা কভার করতে সেখানে একজন প্রতিবেদক পাঠিয়েছে৷ চীনে একই ধরণের প্রতিবাদের ঘটনার ক্ষেত্রে এটা একটা অচিন্তনীয় বিষয় বলে মন্তব্য করেছে বার্তা সংস্থা এপি৷
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে, ফার্গুসনের প্রতিবাদ দমনে শক্তি প্রয়োগের ঘটনা রুশদের কাছে এই বার্তাই পৌঁছে দিচ্ছে যে, গণতান্ত্রিক পশ্চিমা বিশ্বের নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিবাদ দমনে রাশিয়ার চেয়ে কম বর্বর নয়৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, এপি, রয়টার্স)