হারিরি হত্যায় জড়িত চার শিয়া নেতা, সমস্যার মুখে লেবানন
১ জুলাই ২০১১হারিরি হত্যাকাণ্ড
২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লেবাননের রাজধানী বেইরুটে বিশালমাপের গাড়িবোমা হামলার শিকার হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি সহ মোট ২২জন৷ এই হত্যাকাণ্ডে লেবাননের হিজবুল্লাকে দায়ী করতে থাকে সেদেশের মুক্তমনা রাজনৈতিক দলগুলি৷ জাতিসংঘের আদালতে অবশেষে ঘটনার প্রায় সাড়ে ছয় বছর পর শিয়াপন্থী চারজন ওপরের মহলের নেতাকে এই বোমা হামলা পরিচালনা করার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত৷ হারিরির পুত্র সাদ আল হারিরি এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন৷
লেবাননের প্রতিক্রিয়া তীব্র
লেবাননের মধ্যে এর প্রতিক্রিয়া বেশ তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ কারণ, যে সময়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে, তারপরে পরেই হিজবুল্লার উত্থান ভালোভাবে দেখা দেয় সেদেশে৷ ২০০৫ সালের এপ্রিলে দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে চলতে থাকা সিরিয়ার সেনা সমাবেশ লেবানন থেকে সরতে বাধ্য হয় আন্তর্জাতিক চাপে৷ সিরিয়ার বিরুদ্ধেও বহুবার এই হত্যাকাণ্ডে হাত থাকার অভিযোগ ওঠে৷ সিরিয়া সেই অভিযোগ অস্বীকার করে৷ হিজবুল্লা তো আগাগোড়াই এই হত্যাকাণ্ডে কোনভাবে নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে আসছে৷
হিজবুল্লা ক্ষমতার কেন্দ্রে বসে আছে এখন
কিন্তু লেবাননের বর্তমান সরকারে হিজবুল্লার অংশগ্রহণ রীতিমত জোরদার৷ সেই অবস্থায়, শিয়াপন্থী চার নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করার প্রভাব দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অবশ্যই পড়বে বলে আশঙ্কা পর্যবেক্ষকদের৷ হিজবুল্লা ইতিমধ্যেই জাতিসংঘ আদালতের এই রায়কে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে ব্যাখ্যা করেছে৷ হিজবুল্লার নেতারা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি৷ তারপরেও হিজবুল্লার এই ব্যাখ্যা শোনা গেছে, হিজবুল্লার আল মানার টেলিভিশনের খবরে৷
প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি কোন পক্ষ নেবেন?
রায় ঘোষণার পরপরই প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি এ বিষয়ে কোনরকম প্ররোচনায় পা না দিতে নিষেধ করেছেন৷ মিকাতির মতে, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য জাতিসংঘ আদালত মত দিলেও, তাঁরাই যে দোষী তা এখনও প্রমাণ হয়নি৷ সাংবাদিক সম্মেলনে মিকাতির এই মন্তব্যের কারণটাও স্পষ্ট, প্রধানমন্ত্রীত্ব টিঁকিয়ে রাখা আর সরকার বজায় রাখার জন্য সংসদে হিজবুল্লার রাজনৈতিক সমর্থন তাঁর প্রয়োজন৷ নিহত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি পুত্র সাদ এই চারজনকে গ্রেপ্তার করে তাদের জাতিসংঘের হাতে তুলে দেওয়ার কাজটি করে আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান দেখানোর কথা বললেও, সেটা বাস্তবে কতটা সম্ভবপর হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে৷ এই নাটক যে কোন সময়ে মোড় নিতে পারে অন্য কোনদিকে৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন