হলফনামায় মন্ত্রী, সাংসদদের আয়বৃদ্ধির তথ্য
নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে ছবিঘরটি তৈরি হয়েছে৷
শূন্য থেকে কোটিপতি দীপু মনি
২০০৮ সালে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল না৷ শুধুমাত্র আইন পেশা থেকে বছরে ৩ লাখ টাকা আয় করতেন৷ আর এবারের হলফনামায় তিনি ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানিয়েছেন৷ নগদ অর্থ আছে ৬৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৯৮ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৭৮৬ টাকা৷ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ রয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ২২ হাজার ৩৬৭ টাকা৷ শেয়ার রয়েছে ৩ লাখ ১ হাজার ২০০ টাকার৷
১৫ বছরে শাহরিয়ারের অস্থাবর সম্পদ দুই থেকে ৮৯ কোটি
২০০৮ সালে বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের ২ কোটি ৩২ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল৷ এবারের হলফনামায় অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৮৯ কোটি টাকা দেখিয়েছেন৷ এছাড়া ২০০৮ সালে তার কোনো স্থাবর সম্পদ ছিল না৷ এখন গুলশানে দুটি অ্যাপার্টমেন্ট, রাজশাহীতে চারতলা একটি ভবন রয়েছে৷
১৬ থেকে ১১৮ কোটি টাকা
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম পেশায় একজন ব্যবসায়ী৷ ১০ বছর আগে তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৬ কোটি টাকার কিছু বেশি৷ এখন তা ১১৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে৷
আইনমন্ত্রীর নগদ টাকা বেড়েছে ২১৮ গুণ
দশ বছরের ব্যবধানে বর্তমান আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নগদ টাকা বেড়েছে ২১৮ গুণ৷ এবারের হলফনামায় তার কাছে নগদ ১০ কোটি ৯২ লাখ ৯৪ হাজার ১৯৯ টাকা থাকার কথা জানিয়েছেন৷ এ প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার ডেইলি স্টারকে তিনি জানান, নগদ টাকা ও অস্থাবর বেশিরভাগ সম্পদই ছিল তার মায়ের নামে৷ এখন মা প্রয়াত হওয়ায় তার নগদ টাকা ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে বলে জানান তিনি৷
১৫ বছরে পলকের সম্পদ তিন লাখ থেকে চার কোটি
২০০৮ সালে বর্তমান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১১ হাজার টাকা৷ ২০১৩ সালে সেটি বেড়ে হয় ৬৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা৷ এরপর ২০১৮ সালে বেড়ে হয়েছিল ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা৷ আর এবার তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা৷
১৫ বছরে বার্ষিক আয় বেড়েছে ১১.৬৩ গুণ
২০০৮ সালে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট অথবা অন্যান্য ভাড়া, ব্যবসা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত ও অন্যান্য বাবদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বার্ষিক আয় ছিল ৭১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা৷ এবারের হলফনামায় তা বেড়ে হয়েছে আট কোটি ২৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, অর্থাৎ ১৫ বছরে তার বার্ষিক আয় বেড়েছে বেড়েছে ১১.৬৩ গুণ৷ এছাড়া গত ১৫ বছরে তার অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ১০.৩৭ গুণ৷
১৫ বছরে খাদ্যমন্ত্রীর সম্পদ বেড়ে ১০ লাখ থেকে ১০ কোটি
২০০৮ সালে বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা৷ বছরে আয় করতেন আড়াই লাখ টাকা৷ এখন তার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা৷ আর বার্ষিক আয় চার কোটি টাকার কাছাকাছি৷
সালমানের অস্থাবর সম্পদ পাঁচ বছরে বেড়েছে ৩৬ কোটি টাকা
ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩১২ কোটি টাকার বেশি৷ ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে দাখিল করা হলফনামায় এই সম্পদের পরিমাণ ছিল ২৭৬ কোটি টাকার কিছু বেশি৷ অর্থাৎ পাঁচ বছরে তার অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৩৬ কোটি টাকার মতো৷
১৫ বছরে মির্জা আজমের স্থাবর সম্পদ ছয় লাখ থেকে ৩১ কোটি
জামালপুর-৩ আসনের সাংসদ মির্জা আজমের বার্ষিক আয় ২০০৮ সালে ছিল সাড়ে চার লাখ টাকা৷ এবার তা বেড়ে পৌনে চার কোটি টাকার কাছাকাছি ঠেকেছে৷ এছাড়া ১৫ বছর আগে তার স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ২৯ হাজার ৬৫২ টাকা৷ এবার ৩১ কোটি ১০ লাখ ৮ হাজার ১৯২ টাকার স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন তিনি৷
১০ বছরে এমপি আনারের নগদ টাকা বেড়েছে ২২২ গুণ
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুল আজীম আনারের কাছে বর্তমানে নগদ ১ কোটি ৩৯ লাখ ৩২ হাজার ৮১৮ টাকা আছে৷ ১০ বছর আগে ছিল ৬২ হাজার ৫৮০ টাকা৷ সে হিসাবে, গত ১০ বছরে তার নগদ টাকা বেড়েছে প্রায় ২২২ গুণ৷ এছাড়া বর্তমানে আনারের নিজ নামে কৃষি জমি আছে ৩৩ বিঘা৷ ১০ বছর আগে ছিল ১০ বিঘা৷