পর্যটন শিল্পে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক
৬ মার্চ ২০১৪সর্বাধুনিক জরিপে বলে, আশি শতাংশ জার্মানের ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য৷ ইন্টারনেটে ব্লগাররা নানা চেনা-অচেনা গন্তব্য সম্পর্কে তাঁদের মূল্যায়ন জানান৷ অন্যান্য পোর্টালে বিভিন্ন হোটেলের ভালো-মন্দ নিয়ে মন্তব্য কি পরামর্শ থাকে; ফেসবুকে বন্ধু-বান্ধবরা যদি তাঁদের শেষ ছুটিকাটানোর ছবি সেঁটে দিয়ে থাকেন, তবে সেই সব ছবি দেখে তা থেকে নতুন কোনো গন্তব্য খুঁজে পাওয়া যেতে পারে৷
ফেসবুক ঘাঁটা পর্যটন কোম্পানিগুলোর ক্যাটালগ ঘাঁটার চেয়ে যে অনেক বেশি ভালো, অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং, তা সকলেই স্বীকার করবেন৷ এ হলো ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি অভিমুখে সরাসারি তথ্যের প্রবাহ, যার মাধ্যম হলো সোশ্যাল নেটওয়ার্ক৷ দৃশ্যত পর্যটন সকলেরই একটি বিশেষ প্রিয় বিষয়৷ জার্মানিতে ফেসবুকের যে আড়াই কোটি সক্রিয় সদস্য আছেন, তাঁদের পোস্টিংগুলোর ৪১ শতাংশই নাকি কোনো যাত্রা কিংবা পর্যটন নিয়ে৷
ফেসবুক মার্কেটিং ও ফিডব্যাক
বড় বড় পর্যটন সংস্থাগুলিরও আজকাল মার্কেটিং-এর জন্য ফেসবুকের দ্বারস্থ না হয়ে উপায় নেই৷ বিশেষ করে ফেসবুক যখন নিজেই তার ব্যবহারকারীদের প্রোফাইল ঘেঁটে পর্যটন সংস্থাগুলির বিজ্ঞাপনকে তার লক্ষ্যে, অর্থাৎ ভবিষ্যৎ গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয়৷ অন্যদিকে পর্যটন সংস্থাগুলি যে ব্লগারদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে, এ দৃশ্যও বিরল নয়৷
প্রথাগত পর্যটন সংস্থাগুলি সম্ভবত এখনও সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সম্পর্কে সন্দিহান: এ রকম একটি ‘মুক্তাঙ্গণে' তারা নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার অভাব বোধ করে৷ সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বিশেষজ্ঞরা তাদের বোঝান যে, সোশ্যাল নেটওয়ার্কে তাদের পণ্য ও পরিষেবা নিয়ে আলোচনা হবেই, তা তারা সেটা চান আর না-ই চান৷ কাজেই ফিডব্যাকের জন্য গ্রাহকদের একটি নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ৷
‘ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড'
সোশ্যাল নেটওয়ার্কের সুপ্ত ক্ষমতা আজ প্রকট: যেমন ‘কাইটওয়ার্ল্ডওয়াইড' সংস্থাটি৷ হামবুর্গের দু'জন অ্যামেচার কাইটসার্ফার ইন্টারনেটের মাধ্যমে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে জার্মান ভাষাভাষী এলাকার বৃহত্তম কাইটসার্ফিং প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছেন৷ তাদের এই সাফল্যের পিছনে ফেসবুকের অবদানের কথা কাইটওয়ার্ল্ডওয়াইড-এর প্রতিষ্ঠাতারা অকপটে স্বীকার করেন৷ আজও তাদের বিজ্ঞাপনের খরচের তিন-চতুর্থাংশ ব্যয় হয় ফেসবুকের উপর৷
ট্র্যাভেল এজেন্টরা উধাও হননি
ফেসবুক ইত্যাদিতে ঘোরাফেরা এবং দেখাশোনা করেন অনেকেই, কিন্তু তা বলে সকলেই যে সেখানেই বুকিংও করে ফেলেন, এমন নয়৷ বুকিং-এর জন্য এখনও অর্ধেক মানুষ যান সেই ট্র্যাভেল এজেন্টের কাছে৷ তবে কোথাও বেড়াতে যাবার প্রেরণা অথবা পরামর্শটা বহুক্ষেত্রেই আসে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক থেকে৷ অনেকের কাছেই বন্ধু-বান্ধবদের – ফেসবুকে প্রকাশিত – মতামতটা অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য৷ কাজেই তারা অনলাইন অফারটাকে ফেসবুক বন্ধুদের পরামর্শের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে চান৷
ফেসবুকের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এই যে, তা অশরীরি: তার কল্যাণে অস্ট্রেলিয়ায় বসে জার্মানিতে বুকিং বদলানো চলে৷ পর্যটন সংস্থাগুলিও বলছে, তারা তাদের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ৮০ শতাংশকে ব্যক্তিগতভাবে চেনে৷ অর্থাৎ ফেসবুক হলো দ্রুত এবং অবাধ যোগাযোগের একটি সহজ পন্থা৷ কিন্তু বিশেষ তথ্য ও পরিষেবা দেবার দায়িত্ব পূর্বাপর ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলির৷