সুন্দরবনে বাঘ শুমারি
২২ মার্চ ২০১৩বন বিভাগের পুরনো হিসাব অনুযায়ী ৬,০০০ বর্গ কিলোমিটারের সুন্দরবনে এখন বাঘ আছে ৪৪০টি৷ তবে প্রতি বছরই বাঘ মারা পড়ছে৷ বাঘের পায়ের ছাপ ধরে পুরনো পদ্ধতিতে বাঘের শুমারি এখন আর গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাই নতুন শুমারির প্রয়োজন দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন বন বিভাগের ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেটর ড. তপন কুমার দে৷ তিনি জানান, এবার ক্যামেরা পদ্ধতিতে শুমারি করা হবে৷ তবে কত সময় লাগবে তা এখনই বলতে পারছেন না তিনি৷
২০১৭ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার রক্ষায় একটি অ্যাকশন প্ল্যান আছে বন বিভাগের৷ এই প্রকল্পের সদস্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, এই শুমারি হলে সুন্দরবনের বাঘের প্রকৃত সংখ্যা জানা যাবে৷ ঘটবে বিভ্রান্তির অবসান৷ সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় নেয়া যাবে কার্যকর পদক্ষেপ৷
তিনি আরও জানান, সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা ৪৪০ বলা হলেও বাস্তবে অনেক কম৷ ২০০৪ সালে তিনি নিজেই ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে শুমারি করে দেখেছেন৷ তাতে বাঘ পাওয়া গেছে ২০০৷
সুন্দরবনে নানা কারণে বাঘের সংখ্যা কমে আসছে৷ এর মধ্যে চোরাশিকারীদের তৎপরতা, বৈশ্বিক উষ্ণতায় সমুদ্রে পানির স্তর বেড়ে আবাসস্থল কমে যাওয়া, খাবারের অভাব এবং লোকালয় বেড়ে যাওয়া৷ অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, প্রতি বছর চোরাশিকারীদের হাতে গড়ে ৫টি বাঘ মারা পড়ে৷ তারা চামড়া আর হাড়ের জন্য বাঘ হত্যা করে৷ তাদের কারণেই হরিণের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাঘ খাবারের অভাবেও মারা যায়৷ একটি বাঘের বিচরণের জন্য বাংলাদেশের সুন্দরবনে গড়ে ২০ থেকে ৪০ বর্গ কিলোমিটার জায়গার প্রয়োজন হয়৷ বন উজাড় করার কারণে সেই বিচরণ এলাকা কমে যাচ্ছে৷ স্থানীয় লোকজন এবং জেলে ও কাঠুরিয়াদের উৎপাত তো আছেই৷
সারা পৃথিবীতে এখন ৪,০০০ বাঘ আছে বলে ধারণা করা হয়৷ তবে রাজকীয় রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবনে৷ মনিরুল এইচ খান বলেন, ভারতের ৪,০০০ বর্গ কিলোমিটার ভারতের সুন্দরবনেও বাংলাদেশের সুন্দরবনের সম পরিমাণ বাঘ আছে৷