সুদানে ব্যাপক বিক্ষোভ, নিহত সাত
১ জুলাই ২০১৯রোববার সুদানের রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন এলাকায় রক্তক্ষয়ী এই বিক্ষোভ ছিল গত এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় রক্তক্ষয়ী৷ তিন মাস আগে স্বৈরশাসক ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে সাধারণ মানুষ৷
রাজধানী খার্তুমে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে লাখো মানুষ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে এগিয়ে যায়৷ এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বাধা দেয় এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে৷
সংঘর্ষের সময় অজ্ঞাত স্নাইপাররা বেসামরিক ও সৈন্যদের দিকে গুলি ছুড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সামরিক কাউন্সিলের উপপ্রধান জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো৷
দেশটির আধা-সামরিক বাহিনী ব়্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর প্রধান দাগোলা বলেছেন, স্নাইপারদের গুলিতে তার বাহিনীর কয়েকজন সদস্যও আহত হয়েছেন৷
‘‘স্নাইপাররা সাধারণ মানুষের উপর গুলি ছুড়েছে৷ আরএসএফের তিন সদস্য এবং পাঁচ-ছয় জন নাগরিক এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন৷ আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী আছে, যারা উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়,'' বলেছেন তিনি৷
ওমর আল-বশিরের ক্ষমতা গ্রহণের তিন দশক পূর্তির দিনে রোববার বড় ধরনের বিক্ষোভের পরিকল্পনা ছিল৷ ক্ষমতা হস্তান্তরে বর্তমান সামরিক শাসকদের এদিন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা৷
আল্টিমেটাম অনুযায়ী, রোববার প্রায় ১০ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে৷ রাজধানী খার্তুমের পাশাপাশি ওমবুরমান ও বাহরি এলাকায় এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়৷
বিক্ষোভের প্রস্তুতির মধ্যে শনিবার রাতে সুদানিজ প্রফেশনালস অ্যাসোসিয়েশেন (এসপিএ)-এর কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা৷ এ কারণে বিক্ষোভকে সামনে রেখে সামরিক শাসক বিরোধী সংগঠনটির সংবাদ সম্মেলন হয়নি৷
ওমর আল-বশিরের ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে এসপিএ এবং সেনা সদস্যদের মধ্যে বেশ কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে৷ জুনের শুরুতে বেসামরিক প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সংঘর্সে অন্তত ১২৮ জন লোক নিহত হয়েছেন৷
এসপিএ-এর মুখপাত্র আহমেদ আল-রাবি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘এই সময়ের সামরিক শাসকদের কর্মকাণ্ড মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ওমর আল-বশিরের শাসনকেও ছাড়িয়ে গেছে৷ এমন সংঘাত দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার পথ রূদ্ধ হয়ে যাওয়ার ইঙ্গিতই দিচ্ছে৷''
দেশব্যাপী বিক্ষোভের আগে আন্দোলনের সংগঠকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরোক্ষ হুমকি দিয়েছিল সেনাবাহিনী৷ সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস ও রাস্তা বন্ধ করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়৷
বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে বিক্ষোভকারী ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ইথিওপিয়া ও আফ্রিকান ইউনিয়ন৷ এর মধ্যে সেনাসদরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন আন্দোলনাকারীরা৷
এমবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)