সাংসদপদও হারালেন রাহুল গান্ধী
২৪ মার্চ ২০২৩সাংসদপদ হারালেন রাহুল গান্ধী। বৃহস্পতিবার সুরাতের আদালত তাকে দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়ার পর শুক্রবার লোকসভা সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হলো, রাহুল গান্ধী আর সংসদ নন। আইনানুযায়ী, কোনো আদালত দুই বছর বা তার বেশিদিনের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলে সাংসদ-বিধায়কের পদ খরিজ হয়ে যায়। সেই জনপ্রতিনিধি আইন অনুসারেই রাহুল তার সাংসদ পদ হারালেন।
এবার রাহুলের কেন্দ্র কেরালার ওয়ানাড়ে উপনির্বাচনের ব্যবস্থা করবে নির্বাচন কমিশন। রাহুল সেখানেও এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।
আইনজ্ঞরা জানিয়েছেন, উচ্চ আদালত যদি সুরাত আদালতের এই নির্দেশ খারিজ করে দেয়, তাহলে একমাত্র রাহুল গান্ধী আবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। ফলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাহুল আদৌ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কি না, সেই প্রশ্ন থেকে গেল।
রাহুল ভোটের আগে জনসভায় বলেছিলেন, শুধু মোদীদের বিরুদ্ধেই কেন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তারপর গুজরাটের বিজেপি নেতা রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। সেই মামলায় রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে সুরাতের আদালত।
কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া
লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, ''এটা পুরোপুরি সরকারের প্রতিহিংসামূলক কাজ। রাহুল ভারত জোড়ো যাত্রায় অসাধারণ সাড়া পেয়েছিলেন দেখে ভয় পেয়ে সরকার এই কাজ করলো।'' প্রবীণ সংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং বলেছেন, ''রাহুল গান্ধীকে সংসদে আদানি নিয়ে বলতেই দিল না বিজেপি। এবার তো সাংসদপদ নিয়ে নিলো। কিন্তু জনতার কাছে যাওয়া তো রুখতে পারবেন না মোদী-শাহ। কংগ্রেসের সব নেতা-কর্মী জনতার দরবারে যাবে।''
রাহুল সংসদে
রাহুল গান্ধী এদিন লোকসভায় গিয়েছিলেন। তবে বিরোধী ও বিজেপি সাংসদদের হইচইয়ের ফলে তা সকালে বেশিক্ষণ চলেনি। রাহুল তারপর বেরিয়ে যান।
তবে ততক্ষণে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা বিরোধী নেতা ও সাংসদদের বৈঠক হয়ে গেছে। সেখানে সোনিয়া গান্ধীও ছিলেন। ছিলেন বিরোধী দলের নেতা ও সাংসদরা। সেখানে ঠিক হয়, রাহুলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিবাদে ও আদানি নিয়ে সংসদে আদানি নিয়ে আলোচনার দাবিতে সংসদ ভবনের বাইরে রাজীব চক থেকে রা,ষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত মিছিল করবেন বিরোধী সাংসদরা।
মিছিল হলো
রাজীব চক থেকে মিছিল শুরু হলো। সামনে বিশাল ব্যানার ধরে আছেন কংগ্রেসের সাংসদরা। তাতে লেখা 'সেভ ডেমোক্রেসি'। তার পিছনে হাঁটছেন তৃণমূল-সহ ১৪টা বিরোধী দলের সাংসদরা।
তবে তারা রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত যেতে পারেননি। মাঝপথেই পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
সুপ্রিম কোর্টে আবেদন
এর পাশাপাশি ১৪টা বিরোধী দলের তরফে সুপ্রিম কোর্টে একটা আবেদন জানিয়েছে। এই দলগুলির মধ্য়ে কংগ্রেস ছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেস, আপ, বাম দলগুলি, ডিএমকে, এনসিপির মতো দল আছে। আবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআই ও ইডি-কে দিয়ে শুধুমাত্র বিরোধী দলের নেতাদের টার্গেট করছে। আর কেউ বিজেপি-তে যোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাতিল করা হচ্ছে বা মামলা ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে।
কংগ্রেস সাংসদ ও আইনজীবী অভিযেক মনু সিংভির অনুরোধ মেনে দুই সপ্তাহের মধ্যে মামলার লিস্টিং করতে রাজি হয়েছেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।
সিংভি জানিয়েছেন, তারা দাবি করেছেন, বিরোধী নেতাদের গ্রেপ্তার করার আগে ও পরের নীতিনির্দেশিকা দিক সুপ্রিম কোর্ট।
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এনডিটিভি)