1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সময় তিনমাস, ঘাসফুল ফোটাতে মমতা গোয়ায়

২৯ অক্টোবর ২০২১

তৃণমূলকে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন গোয়ায়। মন্দির দর্শন, আমজনতার সঙ্গে কথপোকথন, ভাষণ সবই আছে কর্মসূচিতে।

https://p.dw.com/p/42KN3
গোয়াতেও তৃণমূলকে জেতাতে চান মমতা। ছবি: Satyajit Shaw/DW

পশ্চিমবঙ্গের বাইরে সংগঠনকে ছড়িয়ে দিতে আপাতত ত্রিপুরা ও গোয়াকে পাখির চোখ করেছেন মমতা। দুই রাজ্যেই বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। ত্রিপুরায় মমতা এখনো যাননি। গিয়েছেন তার বিশ্বস্ত লেফটন্যান্ট ও ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু গোয়ায় ময়দানে মমতা নিজেই নেমে পড়েছেন।

তিনদিনের রাজনৈতিক সফরে বৃহস্পতিবার গোয়া পৌঁছেছেন তিনি। তারপর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মমতার আসল কর্মসূচি শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকে। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে তৃণমূলকে ছড়িয়ে দেয়ার কাজ চলছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর বা পিকে এবং তার সংগঠন আইপ্যাকের পরামর্শ ও সমীক্ষার উপর ভিত্তি করেই। সেই মতোই গোয়ায় পা ফেলছেন মমতা। ইতিমধ্যে তিনি কংগ্রেস থেকে ভাঙিয়ে এনেছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো সহ বেশ কিছু নেতাকে। তাদের নিয়ে তৈরি হয়েছে গোয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের স্লোগান হলো, গোয়ায় নতুন ভোর বা 'গোয়েঞ্চি নভি সকাল'।

গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী ফেব্রুয়ারিতে। হাতে আর তিন মাস। সবেমাত্র গোয়ায় তৃণমূল দল গঠিত হয়েছে। এত দ্রুত সেখানে তারা ক্ষমতায় আসতে পারলে সেটা হবে একটা রাজনৈতিক ম্যাজিক। এর একটাই উদাহরণ আছে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ। দলগঠনের কিছুদিনের মধ্যেই দিল্লিতে আপ ক্ষমতায় আসে। কিন্তু তার আগে অনেকদিন ধরে কেজরিওয়াল দিল্লিতে সক্রিয় ছিলেন। তৃণমূল সেরকম কিছু করেনি। এখন ভোটের আগে সেখানে ভাগ্যপরীক্ষায় নেমেছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজনৈতিক পর্যটনে গোয়া গেছেন মমতা।

মমতাও সেকথা জানেন না এমন নয়, তবে তিনি এখন এমন রাজ্য খুঁজছেন, যেখানে কংগ্রেস ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। চেষ্টা করলে অন্য বিরোধী দল সেই জায়গাটা নিতে পারে। অন্তত খাতায়-কলমে সেই সম্ভাবনা আছে। মমতাও সেই চেষ্টা করছেন। গোয়া ছোট রাজ্য। বিধায়কের সংখ্যা মাত্র ৪০ জন।

গোয়ায় দলীয় কর্মীদের কাছে ভাষণ দিতে গিয়ে মমতা শুক্রবার অনেক বিষয় ছুঁয়ে গেছেন। নিজে থেকেই অনেক প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বাইরের রাজ্যের নেতাদের অনেক সময়ই তৃণমূল বহিরাগত বলে। এখন গোয়ায় গিয়ে মমতা বলেছেন, তিনি বহিরাগত নন। তিনি গোয়ারই মেয়ে। তবে মমতা এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, গোয়ায় তৃণমূল নেতারা কেউ বহিরাগত হবেন না। তারা গোয়ার ভূমিপুত্র হবেন, তারা গোয়ার জন্য কাজ করবেন, কাজ করবেন সাধারণ মানুষের জন্য। মমতা কেবল তাদের পরামর্শ দেবেন। সরকারে এলে দিকনির্দেশ করবেন মাত্র।

দিনদুয়েক আগে কংগ্রেস বলেছে, মমতা যেভাবে গোয়ায় কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে দল তৈরি করছেন, তাতে আদতে বিজেপি-র সুবিধা হবে। তারা মমতাকে আত্মসমীক্ষা করতেও বলেছে। এর জবাবে মমতা বলেছেন, কংগ্রেস তো গত প্রায় ৭০ বছর ধরে রয়েছে। তারা কী করেছে? তারা তো নিজের দলের বিধায়কদেরই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না? নির্বাচিত হয়ে আসার পর কংগ্রেস বিধায়করা বিজেপি-তে নাম লিখিয়েছেন। তাই তিনি গোয়া এসেছেন। তৃণমূল ক্ষমতা পেলে সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত শাসন দেবে। পশ্চিমবঙ্গে কম হলেও শুভেন্দু অধিকারীর মতো বেশ কয়েকজন দল ছেড়ে বিজেপি-তে গেছেন। মুকুল রায়ের মতো কয়েকজন নেতা আবার তৃণমূলে ফিরেও গেছেন। কিন্তু মমতার দাবি, তার দলের কেউ বিজেপি-র সঙ্গে আপস করবে না।

মমতা বলেছেন, তিনি ধর্মনিরপেক্ষতাকে গুরুত্ব দেবেন। টিএমসি মানে টেম্পল, মস্ক, চার্চ। তার দাবি, সাইনবোর্ড হওয়ার জন্য তৃণমূল গোয়ায় আসেনি। সরকার গঠন করতে এসেছে।

জিএইচ/এসজি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ)