সংলাপ নিয়ে ব্যবধান
১৬ আগস্ট ২০১৩বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে মাঝে মধ্যে আলোচনায় উঠে আসে সংলাপের বিষয়টি৷ বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংলাপ কোনো নতুন বিষয় নয়৷ তারপরও বিশ্লেষকরা মনে করেন, বর্তমানে যে রাজনৈতিক সংকট চলছে তা সংলাপের মাধ্যমেই নিরসন সম্ভব৷
বৃহস্পতিবার শোক দিবসের এক অনুষ্ঠানে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, বিরোধী দল আন্দোলন, সংগ্রাম কিছুই করতে পারবে না৷ তাদের যদি কোনো বক্তব্য থাকে তাহলে আগামী সংসদ অধিবেশনে এসে বলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷ পাশাপাশি যে কোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন এই রাজনীতিক৷ তাই জনগণকে কষ্ট না দিয়ে বিএনপিকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান তিনি৷
তাঁর এই বক্তব্যের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, সরকার মুখে আলোচনার কথা বলে, কিন্তু বাস্তবে তারা আলোচনায় বিশ্বাস করে না৷ তারা যদি সত্যিকারের আলোচনা চায়, তাহলে আন্তরিকতার সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিতে হবে৷ তারা আলোচনার প্রস্তাব দিলে বিএনপি অবশ্যই বিবেচনা করবে৷
শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন আরো বলেন, ‘‘সরকারই আসলে তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চায়৷ কারণ সরকার বুঝে গেছে, এখন নির্বাচন হলে বিএনপিকে জনগণ ভোট দেবে, বিএনপিই ক্ষমতায় আসবে৷ তাই এখন তারা বাকশালি চিন্তাভাবনা করছে৷ এ কারণে আওয়ামী লীগ নেতারা এখন বলছেন, পরবর্তী সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত বা নির্বাচন না হলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীই দেশ পরিচালনা করবেন৷''
অধিকারের পক্ষ থেকে সেই রাতের অভিযানে ৬১ জনের প্রাণহানির কথা বলা হলেও এ দেশের মানুষ হতাহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে মনে করে – বলেন খন্দকার মোশাররফ৷ গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে সরকার বাকশালি কায়দায় দেশ পরিচালনা করছে – এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষমতায় আসার পর জনগণের দিকে কোনো নজর দেয়নি তারা৷ অন্যায়-অপকর্ম ও দুর্নীতি করার কারণে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকবে না৷ আর এটা বুঝেই সরকার নির্বাচন না দিয়ে বাকশালি কায়দায় ক্ষমতায় থাকতে চায়৷'' নির্দলীয় সরকারের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আগামীতে নির্বাচন হলে তা অবশ্যই হতে হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে৷ আর যদি একতরফাভাবে নির্বাচনের চিন্তা করা হয়ে তাহলে জনগণ জানে কী ভাবে তা প্রতিহত করতে হয়৷''
ড. মোশাররফের বক্তব্যের জবাবে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘যতোই হুমকি-ধামকি দেন না কেন কাজ হবে না৷ আসুন, আমরা সমঝোতার মাধ্যমে সাংবিধানিক কাঠামোতে সমাধানে বসি৷ সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র থেকে বিরত থাকুন৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘সরকার দেশ পরিচালনায় ভুলভ্রান্তি করে থাকলে তবে আপনারা নির্বাচনে জয়ী হয়ে ভুলগুলো সংশোধন করুন৷ সমঝোতার পথ বন্ধ করে দেবেন না৷ যদি সমঝোতার পথ বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে সরকার একতরফাভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান নিতে বাধ্য হবে৷''