1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘শবে বরাতেও বাসায় থাকুন'

২ এপ্রিল ২০২০

৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পালিত হতে যাচ্ছে শবে বরাত। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ইবাদতের মাধ্যমে শবে বরাত রাত পালন করেন। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতিতে ভিন্নভাবে পালন হবে মুসলিমদের পবিত্র এ রাত৷

https://p.dw.com/p/3aLtF
ছবি: Bdnews24/M. Z. Ovi

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেকোনো বড় জনসমাগম এড়িয়ে চলার৷ এমনকি জরুরি কাজ ছাড়া বাসার বাইরে বের না হওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে জনগণকে৷ সাধারণ ছুটি চলছে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত৷ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদেরও বাসায় থেকে নামাজ পড়ার অনুরোধ করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে৷

বাংলাদেশের বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান বলছেন, ‘‘সতর্কতা অবলম্বন করাই আল্লাহর নির্দেশ, বিশেষ করে যখন কোনো মহামারি দেখা দেয়, সে অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ নির্দেশ রয়েছে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার৷ ফলে আমরা মসজিদেও যখন নামাজ আদায় করছি, সেখানেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছি৷ তাছাড়া অসুস্থ, বয়স্ক, বিদেশ থেকে আসা নাগরিক ও তাদের আশেপাশের মানুষদের আমরা বলছি মসজিদে না এসে বাসায় নামাজ আদায় করুন৷ একই সঙ্গে জুম্মার নামাজের ক্ষেত্রেও আমরা বলছি, মসজিদে না এসে পারলে বাসায় জোহরের নামাজ আদায় করুন৷''

কিন্তু শবে বরাতের রাতে সাধারণত বিপুল সংখ্যায় মুসল্লিরা বিভিন্ন মসজিদে জমায়েত হয়ে ইবাদত করে থাকেন৷ এমন পরিস্থিতিতে জমায়েত এড়ানোর উপায় কী?

এ ব্যাপারেও বিশেষ নির্দেশনার কথাই জানালেন বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম৷ তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু পরিস্থিতি এখনও উন্নতির দিকে আসেনি, সতর্কতা অবলম্বন এখনও অনেক জরুরি৷ শবে বরাতে আমরা মানুষের মধ্যে বিশেষভাবে ইবাদত-বন্দেগি করার আগ্রহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করি৷ মসজিদেও বড় আকারের জমায়েত হয়ে থাকে৷ কিন্তু এবারের শবে বরাতে আমরা দ্বীনদার মুসল্লি ভাইবোনদের কাছে আমাদের অনুরোধ এই পরিস্থিতিতে আমরা মসজিদে জড়ো হব না৷ বরং আমরা যার যার অবস্থানে বাসায় থেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবো, ফরিয়াদ জানাবো যাতে এই মহাবিপদ থেকে তিনি আমাদের উদ্ধার করেন৷''

দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরামদের সঙ্গে পরামর্শ করে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই বার্তা দেশের মানুষের কাছে জানানো হয়েছে বলেও জানান বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম৷ বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের কাছেও এ বার্তা এরই মধ্যে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি৷

হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান

এদিকে, ভারতেও প্রায় একই অনুরোধ জানানো হচ্ছে বিভিন্ন সংগঠনের মধ্য থেকে৷ কদিন আগেই দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলিগ-ই-জামাতের ধর্মীয় জমায়েত থেকে বিশাল আকারে ছড়িয়েছে করোনা সংক্রমণ৷ জামাতে অংশ নেওয়া সাতজন এরই মধ্য়ে করোনায় মারা গিয়েছেন। জমায়েতে অংশ নেয়ার পর তারা ছড়িয়ে পড়েছেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে৷ এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়েছে জমায়েতে অংশ নেয়া শতাধিক ব্যক্তিকে৷

এই জমায়েতের মাধ্যমে লকডাউনের মধ্যেও করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পড়েছে ভারত৷ ফলে শবে বরাতের রাতকে ঘিরে একটু বিশেষভাবে বার্তা দিচ্ছেন ধর্মীয় নেতা ও বিশেষজ্ঞরা৷

ইসলামিক স্কলার এবং জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডি বিভাগের এমিরেটস অধ্যাপক আখতারুল ওয়েসি, ‘‘শবে বরাত একটি ধর্মীয় রীতি৷ একইরকম ভাবে প্রতি বছর এটি পালন করতেই হবে, এমন কোনও নিয়ম নেই৷ জুম্মার নামাজ তার চেয়ে অনেক বেশি জরুরি৷ কিন্তু ভারতে সেই নামাজও এখন প্রতীকী রূপে পালন করা হচ্ছে৷ মসজিদের প্রধান আর তাঁর সঙ্গে চারজন নামাজে অংশ নিচ্ছেন৷ সকলকে বলা হচ্ছে বাড়িতে বসে নামাজ পড়তে৷ মাথায় রাখতে হবে, গোটা বিশ্বে মহামারি শুরু হয়েছে৷ তার জন্য সামাজিক দূরত্ব তৈরি করা খুবই জরুরি৷ আশা করবো, শবে বরাতেও তা পালিত হবে৷ এক সঙ্গে অনেকে মিলে কবরস্থানে গিয়ে প্রার্থনা করা উচিত হবে না৷ বাড়িতে বসেই প্রার্থনা করা উচিত হবে৷''

একই বক্তব্য ভারতের সমস্ত মুসলিম প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় সংগঠনের প্রধান প্রতিষ্ঠান মজলিস মুশায়েরাত এরও৷ সর্ব ভারতীয় মুসলিম মজলিস মুশায়েরাতের সভাপতি নাভেইদ হামিদ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''করোনা মহামারি গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে৷ হজযাত্রাও আপাতত স্থগিত রাখার কথা বলা হচ্ছে৷ জুম্মার নামাজ বাড়িতে বসে হচ্ছে৷ এই অবস্থায় কোনওভাবেই শবে বরাতের অনুষ্ঠানে জমায়েত হতে দেওয়া যাবে না৷ আমরা চাই না একসঙ্গে পাঁচ জনের বেশি কেউ কোথাও থাকুন৷ শবে বরাতের প্রার্থনা বাড়িতে বসেই হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য