লন্ডনে গ্রেপ্তার অনেক, চলছে অভিযান
৫ জুন ২০১৭শনিবার রাতের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ৭ জনের মধ্যে একজন ক্যানাডার ও একজন ফরাসি নাগরিক৷ জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার নিশ্চিত করেছেন যে, হামলায় দুই জার্মান নাগরিক আহত হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশংকাজনক৷ আহতদের মধ্যে স্প্যানিশ, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিকও রয়েছেন৷ ক্যানাডা আর অস্ট্রেলিয়ার সরকার নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে এবং তাদের সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে৷
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান ব্রিটেনের অধিবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে তারা এই হামলায় ভয় না পেয়ে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে ভোট দেয়৷ তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসীরা ভোট দেয়া, অর্থাৎ গণতন্ত্রকে ঘৃণা করে৷ তিনি ঘোষণা দেন, সোমবার সন্ধ্যায় লন্ডন ব্রিজে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোমবাতি জ্বালানো হবে৷
ঐ হামলায় আহত ৪৮ জনের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে৷ ফলে হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ জনে৷ আহত ৩৬ জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ তাদের মধ্যে ২১ জনের অবস্থা গুরুতর৷ লন্ডন ট্রান্সপোর্ট পুলিশের এক কর্মকর্তা, যিনি কেবল একটি লাঠি হাতে সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে গিয়েছিলেন, তিনি মুখে, পায়ে এবং মাথায় ছুরির গভীর ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷
শনিবার রাতের হামলার পেছনে কাদের সমর্থন বা ইন্ধন রয়েছে তা জানতে তদন্ত করছে লন্ডন পুলিশ৷ লন্ডনের পুলিশ বাহিনীর প্রধান জানান, ‘‘তারা অন্য কারো সাথে মিলে এই কাজ করেছে কিনা এটা জানা আমাদের জন্য ভীষণ জরুরি৷ ''
তিনি আরো জানান, ‘‘পূর্ব লন্ডনে বেশ কিছু জায়গায় আমরা তল্লাশি করছি, অনেক আলামত সংগ্রহ করেছি৷ সোমবার ভোরেও অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷'' এদিকে এ হামলার দায় স্বীকার করেছে তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট আইএস৷
পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোমবার ভোর সোয়া চারটার দিকে লন্ডন ব্রিজের পাশে দুটি এলাকা নিউহ্যাম ও বার্কিংয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী কমান্ড অভিযান চালায়৷ সেখান থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে তারা৷ এর আগে রবিবার অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৭ জন নারী ও ৫ জন পুরুষকে আটক করেছে, যাদের বয়স ১৯ থেকে ৬০ বছর৷ পরে এক ৫৫ বছরের বৃদ্ধকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷
রবিবার সরকারের ‘কোবরা' এমারজেন্সি কমিটির সঙ্গে বৈঠকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘যা হচ্ছে, সেটাকে এভাবে চলতে দেয়া যায় না৷ হামলাকারীরা কেবল ম্যানচেস্টার বা ওয়েস্ট মিনিস্টারে হামলার পরিকল্পনাই করেনি, তারা চেয়েছে তাদের ইসলামী সন্ত্রাসবাদের আদর্শ অন্যদের উপর চাপিয়ে দিতে, তারা চায় পশ্চিমা বিশ্বের গণতন্ত্র ও মূল্যবোধে আঘাত হানতে৷''
গত শনিবার রাতে লন্ডন ব্রিজের ফুটপাতে পথচারীদের ওপর ভ্যান উঠিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা৷ এরপর তারা কিছু দূর এগিয়ে বারা মার্কেট এলাকায় এলোপাথাড়ি ছুরি হামলা চালায়৷ পুলিশের গুলিতে সন্দেহভাজন তিন হামলাকারী নিহত হয়েছে৷
আগামী ৮ই জুন যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন৷ সন্ত্রাসী হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান জানিয়ে রবিবার যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ রেখেছিল প্রধান দলগুলো৷
এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)