রাজ্যপাল কি জৈন হাওয়ালায় জড়িত, প্রশ্ন ঘিরে আলোড়ন
৩০ জুন ২০২১পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র বিতর্ক আগেই শুরু হয়েছিল। এবার তাতে যোগ দিলেন জৈন হাওয়ালা কাণ্ড মামলার অন্যতম কুশীলব সাংবাদিক বিনীত নারায়ণ। কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ নিয়ে ধনখড়কে এক হাত নিয়েছেন তিনি।
মমতা রাজ্যপালের নাম আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, ধনখড় ১৯৯৩ সালের জৈন হাওয়ালা কাণ্ডে জড়িত। ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওই মামলা হয়েছিল বিদেশে অর্থ পাচার এবং বিদেশ থেকে অবৈধ ভাবে অর্থ আনার উপর নির্ভর করে। সাড়া ফেলে দেওয়া সেই মামলার এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। মমতা অভিযোগ করেছিলেন, ওই মামলায় জড়িত জগদীপ ধনখড়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের পরেই ধনখড় বিবৃতি দিয়ে জানান, ওই মামলার সঙ্গে তার কোনো যোগ নেই। তথ্য দিয়ে মমতা অভিযোগ প্রমাণ করুন। এবার সেই বিতর্কেই মুখ খুললেন বিনীত।
বিনীত নারায়ণ সাংবাদিক। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে হাওয়ালা মামলার তদন্ত চেয়েছিলেন বিনীত। তার সেই আবেদন ওই সময় রীতিমতো আলোড়ন ফেলেছিল। পরবর্তী কালে তার দাবি মেনে নেওয়া হয়। হাওয়ালা কাণ্ড নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছিলেন বিনীত। এরপর দুর্নীতির একাধিক ঘটনার তথ্য জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন তিনি। আইনি লড়াইও করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পর একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন বিনীত। সেখানে তিনি বলেছেন, জৈন ভাইদের থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরিতে সাবেক মন্ত্রী ধনখড়ের নাম আছে। লেখা আছে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে বর্তমানে কেরালার রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের বিরুদ্ধেও ৭ কোটি টাকা নেওয়ার কথা বলা আছে সেখানে। ফলে রাজ্যপাল ওই মামলার সঙ্গে কোনো ভাবেই যুক্ত নন, এ তথ্য ঠিক নয়। বিনীত বলেছেন, ''সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে চলা জৈন হাওয়ালা মামলায় অভিযুক্তদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে, এমন কোনও প্রমাণ তিনি দিতে পারবেন কি?''
অভিযোগ, মামলা থেকে প্রথমে নাম সরিয়ে নিয়েছিলেন ধনখড়। কিন্তু পরবর্তীকালে রিট পিটিশন হয় তার বিরুদ্ধে। ফলে মামলায় তার নাম নেই, এ কথা বলা যায় না। বিনীতের বক্তব্য, রাজ্যপাল 'মিথ্যাচার' করছেন। তার নাম হাওয়ালা মামলায় নেই, আগে এই বিষয়টি প্রমাণ করুন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিতর্ক নতুন নয়। এর আগে বিভিন্ন বিষয়ে একে অপরের নামে অভিযোগ করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও সরাসরি বিতর্কে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল। কিন্তু এ বারের বিষয়টি আগের সব বিতর্ক ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এই বিতর্কে দুর্নীতির প্রসঙ্গ ঢুকে পড়েছে। এবং তাতে এবার যোগ দিয়েছেন জৈন হাওয়ালা মামলা সংক্রান্ত বিষয়ের অন্যতম ব্যক্তিত্ব।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)