রাজকীয় সব বিয়ের পোশাক
১৯ মে ব্রিটিশ যুবরাজ হ্যারির সাথে মেঘান মার্কলের বিয়ের অন্যতম আকর্ষণ হলো কনের পোশাক৷ কী ধরনের পোশাক পরবেন তিনি, তা নিয়ে হচ্ছে বিস্তর আলোচনা৷ এর সূত্র ধরেই দেখা যাক রাজপরিবারে বিভিন্ন সময়ে কনেরা কী ধরনের পোশাক পরেছেন৷
রানি এলিজাবেথের গাউন
বর্তমান ব্রিটিশ রানি এলিজাবেথ যখন ১৯৪৭ সালে প্রিন্স ফিলিপকে বিয়ে করেন, তখনও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বাজেট কৃচ্ছতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল ব্রিটেন৷ এলিজাবেথ তাঁর বিয়ের গাউনটির রেশমি কাপড় কিনতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নারীদের কাছ থেকে রেশনিং-এর কুপন উপহার পেয়েছিলেন৷ পুরো পোশাকটি স্ফটিক দিয়ে সাজানো ছিল৷ আর তাতে বসানো হয়েছিল ১০ হাজার মুক্তা৷ গাউনের পেছনের ঝুলন্ত অংশটুকু ছিল ১৩ ফুট লম্বা!
সিংহাসন ত্যাগ ও কনের বিয়ের পোশাক
১৯৩৬ সালে ব্রিটেনের রাজা হন এডওয়ার্ড৷ কিন্তু এর মাত্র কয়েকমাস পরেই প্রেমের টানে সিংহাসন ত্যাগ করে বিয়ে করেন অ্যামেরিকান সমাজকর্মী ওয়ালিস সিম্পসনকে৷ ওয়ালিসের আগে দু’বার বিবাহবিচ্ছেদ ছিল৷ ব্রিটিশ সাংবিধানিক সংকট এড়াতেই এডওয়ার্ড সিংহাসন ছাড়েন৷ ওয়ালিস তাঁর বিয়ের পোশাক হিসেবে বাছাই করেছিলেন মার্কিন ডিজাইনার মেইনবচারের ডিজাইন করা হালকা নীল রঙের পোশাক৷
পুরনো ‘টুডর ফ্যাশন’
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কন্যা অ্যানি ১৯৭৩ সালে ক্যাপ্টেন মার্ক ফিলিপ্সকে বিয়ের সময় প্রথম এলিজাবেথের আমলের ফ্যাশন ‘টুডর-স্টাইল’ আবার ফিরিয়ে আনেন৷ পোশাকটি ডিজাইন করেছিল মওরিন বেকার৷ পরে এই পোশাকটি হাল ফ্যাশনে পরিণত হয়৷ ব্রিটিশ রাজকন্যাদের মধ্যে অ্যানিই প্রথম, যিনি সরাসরি বিয়ের পোশাক ডিজাইন ও তৈরির তদারকির সাথে জড়িত ছিলেন৷
বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত বিয়ের পোশাক
প্রিন্স চার্লসকে ১৯৮১ সালে বিয়ের সময় লেডি ডায়ানা যে পোশাকটি পরেছিলেন সেটা ইতিহাসে সবচেয়ে বিখ্যাত৷ ফোলানো হাতার জামা, ফুল স্কার্টটি আরও বহুদিন পৃথিবীর বিয়ের কনেদের পছন্দনীয় পোশাক হিসেবে টিকে থাকবে সম্ভবত৷ ডেভিড এবং ইমানুয়েল এলিজাবেথের ডিজাইন করা পোশাকটি তৈরি করতে ৯ হাজার পাউন্ড খরচ হয়েছিল৷ ২৫ ফুট লম্বা ছিল এর ঝুলন্ত অংশের পরিধি৷
সিংহাসনের উত্তরাধিকারী
২০১০ সালে সুইডেনের প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া ঐতিহ্য ভেঙে খুব সাধারণ পরিবারের একজন মানুষ, তাঁর ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক ড্যানিয়েল রেসলিংকে বিয়ে করেন৷ রাজপরিবারে ব্যবহৃত সিল্ক সাটিন কাপড় দিয়ে ছোট আকারের একটি বিয়ের গাউন তৈরি করান তিনি৷ যার ডিজাইনার ছিলেন আরেক সুইডিশ ডিজাইনার পার এনসেদেন৷ আর বিয়ের দিন গাউনের সাথে ভিক্টোরিয়ার মাথায় ছিল ক্যামিও টায়রা৷
তাসমানিয়া থেকে কোপেনহেগেন
অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া প্রিন্সেস মেরি বিয়ে করেছেন ইউরোপের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ রাজপরিবারেরর একটিতে৷ ২০০৪ সালে তিনি বিয়ে করেন ডেনিশ যুবরাজ ফ্রেডরিককে৷ তাঁর বিয়ের পোশাক ডিজাইন করেছিলেন ডেনিশ ডিজাইনার উফে ফ্রাংক৷ সে পোশাকে ১০০ বছরের পুরনো আইরিশ লেস ব্যবহার করা হয়েছিল, যা দিয়েছিলেন ফ্রেডরিকের দাদির মা, এক সময়ের সুইডেনের রাজকন্যা মার্গারেট৷
যে বিয়েটি সবচেয়ে বেশি লোক দেখেছেন
কেট মিডলটন আর প্রিন্স উইলিয়ামের বিয়ে হয় ২০১১ সালে৷ যুক্তরাজ্যে এই বিয়ে দেখে ৩ কোটি ৬৭ লাখ লোক এবং সারা পৃথিবীব্যাপী এর দর্শক ছিল ৭ কোটি ২০ লাখ৷ মিডলটনের বিয়ের পোশাকটি ছিল ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশেলে ডিজাইন করা৷ যার ডিজাইনার ছিলেন সারাহ বার্টন৷ পোশাকের কাঁচুলি বা উর্দ্ধাঙ্গে ব্যবহারের অংশটি ১৯ শতকের নকশায় করা ছিল৷ আর নীচের ফুল স্কার্টটি ছিল একটা প্রস্ফুটিত ফুলের ডিজাইনের৷