ঈদের আগে আন্দোলন নয়
২৬ মে ২০১৪বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা এখন অনেকটাই ‘রিল্যাক্সড'৷ তাঁরা কেন্দ্রের ইঙ্গিতেই এই অবস্থান নিয়েছেন৷ ঢাকায় তৃণমূল পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, আপাতত তাঁদের কোনো আন্দোলনের প্রস্তুতি নেই৷ বরং তাঁরা কে কোন পদ পাবেন – তাই নিয়ে তদবির এবং লবিং করে সময় কাটাচ্ছেন৷
তাঁরা জানান, জাতীয় কাউন্সিলের আগেই ইউনিয়ন থেকে ওয়ার্ড, এমনকি পাড়া মহল্লার কমিটিও চূড়ান্ত করা হবে৷ কমিটি চূড়ান্ত করার পরই হয়ত নতুন কোনো আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে৷ তাই ঈদের আগে স্বাভাবিক কারণেই কোনো আন্দোলনের প্রস্তুতি নেই তাঁদের৷ এঁদেরই কয়েকজন জানান, ভারতে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় আসায় বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন৷ তাঁদের সঙ্গে দেখা-সক্ষাতে তাঁরা উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করেছেন৷ তাঁরা মনে করেন, কংগ্রেস সরকারের ‘গুড বুক'-এ থাকলেও বিজেপি সরকারের ‘গুড বুক'-এ থাকার সম্ভাবনা কম বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের৷ তাই তাঁরা মোদী সরকারের নীতি ও পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণের পরই নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি দেবেন৷
ঢাকার বাইরে তৃণমূলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেও একই চিত্র পাওয়া গেছে৷ তাঁরাও জানান যে, তাঁরা নতুন কমিটি গঠন এবং দল গোছানোর কাজেই এখন ব্যস্ত৷ আপাতত তাঁদের কঠিন কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি বা নির্দেশনা নেই৷ তাই তাঁরা এ সব নিয়ে এখন তেমন ভাবছেনও না৷ কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে যে, পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি৷ ঈদ আর রোজার কারণে আরো আড়াই থেকে তিন মাস আন্দোলন জমানো যাবে না বলেও জানিয়েছেন তাঁরা৷
এদিকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সঠিক তথ্যই দিয়েছেন৷ কারণ বর্তমান সরকার যেভাবে নিপীড়কে পরিণত হয়েছে, তাতে অবস্থান শক্ত না করে সরকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়া বাস্তবসম্মত নয়৷ সে কারণেই অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজ চলছে৷ বিশেষ করে তৃণমূলের নেতৃত্বকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে৷ এ অবস্থায় তাই সহসাই সরকার পরতনের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হচ্ছে না৷''
তিনি বলেন, ‘‘ভারতে মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির জয়ে আমরা খুশি নই৷ আমরা খুশি কংগ্রেসের পতনে৷ কারণ তারা বাংলাদেশের একটি অগণতান্ত্রিক একতরফা নির্বাচনে নগ্নভাবে সমর্থণ দিয়েছে৷ তারা কূটনৈতিক শিষ্টাচারও রক্ষা করেনি৷ তাই এখন মোদী সরকার বাংলাদেশের ‘অবৈধ' সরকারের ক্ষেত্রে কী মনোভাব দেখায়, তা পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি৷''
আহমেদ আজম খানের কথায়, ‘‘ভারতের নতুন গণতান্ত্রিক সরকার, বাংলাদেশে অগণতান্ত্রিক সরকার না নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চায় – সেটাই এখন জানতে চায় বিএনপি৷ তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সরকার পতনের কঠোর আন্দোলনে যেতে সময় নিচ্ছে তাঁর দল৷''