‘সুখের মডেল’
৬ এপ্রিল ২০১২ভুটানের ছোট্ট রাজ্যটিতে রয়েছে সুখের ঠিকানা৷ কারণ এই দেশটি গড় জাতীয় উৎপাদন নয়, বরং ‘গড় জাতীয় সুখ'এর মানদণ্ডে বিশ্বের শীর্ষে অবস্থান করছে৷
জাতিসংঘ এখন অনুসরণ করছে ভুটানের পদক্ষেপ৷ আর্থ ইন্সটিটিউটের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে এ সপ্তাহে৷ সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভুটান এগিয়ে যাচ্ছে এমন একটি লক্ষ্যের দিকে যা অত্যন্ত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন৷ ভুটানের প্রধানমন্ত্রী জিগমে থিনলে এ সপ্তাহেই জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে বলেছেন, ‘‘সাধারণ মানুষরা যেন ভালভাবে এবং সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে সেটাই করা হচ্ছে৷ সবার মাঝে যেন প্রশান্তি থাকে আমরা সেদিকে খেয়াল রাখছি৷''
তিনি আরো জানান, ‘‘একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্য এমন হতে হবে যা দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি বয়ে আনে৷''
ভুটানের জনসংখ্যা সত্তর লক্ষের মত৷ মোট জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করে৷ ২০১০ সালে একটি জরিপ চালানো হয় সাধারণ মানুষের ওপর৷ সেখানে দেখা যায় যে শতকরা ৪১ শতাংশ মানুষ সুখী৷ জীবন-যাপন, দেশ, পরিবার নিয়ে তাদের কোন অভিযোগ নেই৷ তবে একটি বিষয় পরিষ্কার৷ তা হল, শুধু টাকা-পয়সা এবং ধন দৌলত সুখ দিতে পারে – এমনটা বিশ্বাস করে না ভুটানের মানুষরা৷ তাদের কাছে অপার্থিব এবং আধ্যাত্মিক সুখ অনেক বেশি গুরুত্ব পায়৷
ভুটানের মানুষের কাছে মানসিক প্রশান্তি অত্যন্ত জরুরি৷ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া, শিক্ষা, সহমর্মিতা, সহনশীলতা, সবার সঙ্গে সখ্যতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল – এসব বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে থাকে ভুটানের মানুষরা৷
তবে একথা ঠিক যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ইউরোপ এগিয়ে রয়েছে, তাদের মধ্যেও রয়েছে সুখী কয়েকটি দেশ৷ ডেনমার্ক এগিয়ে রয়েছে অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে৷ কিন্তু তারপরেও যারা জরিপ চালিয়েছেন তারা জানিয়েছেন, ধনী দেশ হলেও ডেনমার্কের চেয়ে ভুটানের মানুষরা অনেক বেশি সুখী৷
ভুটানের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হল কৃষি৷ এর পাশাপাশি রয়েছে পর্যটন৷ গত বছর ভুটানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল শতকরা ৬ শতাংশ৷ ২০১০ সালে দেশের মাথাপিছু আয় ছিল সাড়ে পাঁচ হাজার ডলার৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন