1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত: ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ 'শনাক্ত'

৪ জুন ২০২৩

রোববার ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, এই দুর্ঘটনার কারণ জানা গিয়েছে। রেলমন্ত্রী বলেছেন ইলেকট্রনিক সিগন্যাল সিস্টেমের একটি সমস্যাই সম্ভবত দুর্ঘটনার কারণ। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেলে বাকি তথ্য প্রকাশ করা হবে।

https://p.dw.com/p/4SAiL
লেকট্রনিক সিগন্যালিং সিস্টেমের একটি সমস্যা একটি ট্রেনকে ভুলভাবে লাইন পরিবর্তন করতে পরিচালিত করেছিল
লেকট্রনিক সিগন্যালিং সিস্টেমের একটি সমস্যা একটি ট্রেনকে ভুলভাবে লাইন পরিবর্তন করতে পরিচালিত করেছিলছবি: Javed Dar/Xinhua/IMAGO

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশার কাছে এই দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৮৮ জনেরমৃত্যু হয়েছে।

তার মত, মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনাটির জন্য দায়ী হলো "ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিংয়ের সময় ঘটে যাওয়া পরিবর্তন"। এই প্রযুক্তিগত শব্দটি একটি জটিল সংকেত ব্যবস্থাকে বোঝায় যা রেললাইনের উপর ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করে যাতে ট্রেনগুলি সংঘর্ষের হাত থেকে থেকে রক্ষা পায়।

অশ্বিনী বলেছেন, চূড়ান্ত রিপোর্টের আগে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দেওয়া "ঠিক নয়"।

দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীছবি: India's Press Information Bureau/REUTERS

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দক্ষিণ-পশ্চিমে বালাসোরে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় স্থানীয় মিডিয়াকে বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যার বিপর্যয় ঘটিয়েছে এমন কাউকে চিহ্নিত করা গেলে তার বিরুদ্ধে "কঠোর ব্যবস্থা" নেওয়া হবে।

তার কথায়, ''ঘটনার পূর্ণাঙ্গ" তদন্ত করা হবে।

ওড়িশার মুখ্য সচিব প্রদীপ জেনা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই)কে শনিবার রাতে বলেন, উদ্ধার অভিযান প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে।

জরুরি পরিষেবার কর্মীরা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ধ্বংসাবশেষের মধ্যে জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে। একাধিক মৃতদেহও উদ্ধার করেছে তারা।

জেনা বলেন, দুর্ঘটনার প্রভাবে দুটি ট্রেনের বগি একসঙ্গে চাপা থাকায় উদ্ধার প্রচেষ্টার গতি কমে যায়। তার কথায়, এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো মৃতদেহ শনাক্ত করা।

কারণ সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে?

অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ইলেকট্রনিক সিগন্যালিং সিস্টেমের একটি সমস্যা একটি ট্রেনকে ভুলভাবে লাইন পরিবর্তন করতে পরিচালিত করেছিল।

দিল্লির একটি টেলিভিশন নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "কে এটা করেছে এবং কারণ কী তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।"

তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনার ঘটনাক্রম নিয়ে বিভ্রান্তি এখনও কাটেনি।

স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উচ্চগতির যাত্রীবাহী ট্রেন করমণ্ডল এক্সপ্রেস মূল রেললাইনে প্রবেশের জন্য একটি সংকেত পেয়েছিল। সিগন্যালটি পরে টেনে নেওয়া হয়েছিল, ট্রেনটি পরিবর্তে একটি সংলগ্ন লুপ লাইনে প্রবেশ করে, ফলে পণ্যবাহী দ্বিতীয় ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

আঘাতের ফলে প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি অন্য ট্র্যাকে উল্টে যায়, যেখানে আসা তৃতীয় ট্রেন যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসে এটিকে আঘাত করে।

দুটি যাত্রীবাহী ট্রেনে দুই হাজারের বেশি লোক ছিল।

রেলমন্ত্রীর বক্তব্য, এই মুহূর্তে লক্ষ্য হলো, রেল পরিষেবাগুলি পুনরুদ্ধার করা, যাতে বুধবার সকালের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।

সাবেক রেলমন্ত্রী মমতা বলেছেন, দুর্ঘটনা এড়ানো যেতো

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং সাবেক রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তার আমলে প্রবর্তিত সংঘর্ষবিরোধী যন্ত্রটি স্থাপন করা হলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শনিবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময়, বিরোধী রাজনীতিবিদ ভারতের রেলওয়ে নেটওয়ার্ককে পরিষেবার প্রতি বিশেষ নজর দেয়ার আহ্বান জানান।

হিন্দুস্তান টাইমস তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, "আমি অনুভব করছি একটি সমন্বয়ের ব্যবধান দেখা দিয়েছে, কারণ রেলওয়ে আলাদা করে কোনো সুবিধা পায়না। রেল মন্ত্রকের আলাদা বাজেটও নেই।"

সাবেক রেলমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রেল মন্ত্রকের আলাদা বাজেটও নেই
সাবেক রেলমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রেল মন্ত্রকের আলাদা বাজেটও নেইছবি: Dipa Chakraborty/Eyepix Group/IMAGO

রোববার মমতার মন্তব্যের জবাব দেন অশ্বিনী।

তিনি বলেন, মমতা যে সংঘর্ষ বিরোধী ব্যবস্থা উল্লেখ করেছিলেন শুক্রবারের সংঘর্ষের কারণের সঙ্গে সেটির "কিছু করার নেই"। অশ্বিনী বলেন, তার পূর্বসূরি "তার সীমিত জ্ঞান অনুসারে" কথা বলেছিলেন।

সরকার রেল নেটওয়ার্কের আধুনিকীকরণের চেষ্টা করার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ভারতীয় রেলপথের বেশিরভাগই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে নির্মিত হয়েছিল।

নিরাপত্তার উন্নতি এবং রেলের অবকাঠামো উন্নত করার জন্য সরকারি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও প্রতি বছর কয়েকশ দুর্ঘটনা ঘটে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর প্রবর্তিত আপগ্রেডের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

আরকেসি/এআই (এপি, এফপি)