ভারতের যাযাবর ‘বানজারা’
সমাজের মূলধারার বাইরে থাকা ‘বানজারা’ যাযাবর গোষ্ঠীকে চিনুন এই ছবিঘরে...
যাযাবর যারা
যাযাবর ধারার এই বানজারা গোষ্ঠীর সদস্যদে বর্তমানে দেখা যায় ভারতের একাধিক রাজ্যে৷ প্রাথমিকভাবে ব্যবসার উদ্দেশ্যে উত্তর ভারতের রাজস্থান থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে শুরু করে তারা৷ বর্তমানে, এই বানজারাদেরই লামবাডা বা লামবাডি নামে দেখা যায় অন্ধ্রপ্রদেশে৷ রাজস্থানের কিছু কিছু অঞ্চলে তাদের ডাকা হয় গোয়ার বা গোয়ারাইয়া নামেও৷
লবণের ব্যবসা
বানজারা শব্দটি ‘বানিজ্য’ ও ‘যাত্রা’র মেলবন্ধন৷ এক সময়ে ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাম-গঞ্জ বানজারাদের ওপরেই নির্ভরশীল ছিল লবণ পাওয়ার জন্য৷ তাদের বিস্তৃত যাত্রাপথের প্রভাব এসে পড়েছে বানজারারদের ভাষাতেও৷ তারা গোরবোলি নামের একটি ইন্দো-আর্য ভাষায় কথা বলে যার শব্দগুলি বিভিন্ন দক্ষিণ এশীয় ভাষা থেকে নেওয়া৷
বিশেষ পোশাক ও গয়না
বানজারা নারীদের চেনার সহজ উপায় তাদের নানাধরনের রঙবেরঙা গয়না৷ নানা ধরনের ধাতু ও কয়েন দিয়ে এই গয়নাগুলি বানায় তারা৷ শুধু নাকছাবিটাই থাকে সোনার৷ গয়নার মতো তাদের পোশাকও খুবই উজ্জ্বল রঙের হয়৷
বৈষম্য
ভারতের আইনি অবকাঠামো অনুযায়ী, বানজারাদের তফসিলি জাতি ও বিশেষ নৃগোষ্ঠী হিসাবে গণ্য করা হয়৷ বানজারারা শহরাঞ্চলে তাকেনা ও গণপরিসরের বাইরেই তাদের অবস্থান আজও৷ বিশেষজ্ঞদের মত, ইউরোপের রোমানিরা এই বানজারাদের বংশধর৷
বদল
বানজারাদের বাসস্থান রাজস্থানের বানসুর গ্রামে ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে তাদের জীবনযাত্রা৷ সম্প্রতি, বানজারারা চুক্তির বিত্তিতে শ্রমিকের কাজ করছেন৷ অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের স্কুলেও পাঠাচ্ছে৷ কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে অনেক শিশুরাই শেষ পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করে না৷
ডিজিটাল যুগের বাস্তব
ভারতের অধিকাংশ নারীদের মতো বানজারা নারীদের মধ্যেও ছিল ঋতু নিয়ে নানা ট্যাবু৷ বর্তমানে ভারতে নানা বেসরকারি সংগঠন এই নারীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে৷ বানসুরে এই নারীদের ইন্টারনেট-সাক্ষরতা বাড়াতেও নানা প্রকল্প চালু করেছে সরকার৷