ভারতীয় সংস্কৃতির ১০ তথ্য
‘নমস্তে’ থেকে শুরু করে বিয়ের বিশাল আয়োজন এবং পবিত্র প্রাণী হিসেবে গরুর অবস্থান, ভারতের সংস্কৃতির এমন কিছু মজার তথ্য ও এর পেছনের কারণ নিয়ে ডয়চে ভেলের এই ছবিঘর৷
সিন্ধু সভ্যতা
ইন্ডিয়া নামটি এসেছে মূলত ইন্দাস বা সিন্ধু নদী থেকে৷ অন্তত পাঁচ হাজার বছর আগে সিন্ধু উপত্যকায় এ সভ্যতা গড়ে ওঠে৷ উপত্যকার স্থানীয় বাসিন্দাদের বলা হতো সিন্ধু৷ পারস্য সাম্রাজ্যের যোদ্ধারা সিন্ধু আক্রমণ করতে এসে ‘সিন্ধু’ শব্দকে পালটে দেয়৷ তখন থেকে পরিচয় পেয়েছে ‘হিন্দু’ শব্দটি৷ এরপর থেকে ভারতের আরেক নাম হয়েছে হিন্দুস্তান, অর্থাৎ হিন্দুদের আবাসস্থল৷
বহুধর্মের অবস্থান
চারটি ধর্মের জন্মস্থান ভারত৷ এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুসারী সনাতন ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের৷ দেশটির ৮৪ শতাংশ মানুষ নিজেদের হিন্দু বলে পরিচয় দেন৷ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলিম যেসব দেশে বাস করেন, তার একটি ভারত৷ দীর্ঘদিন ধরে ইহুদি ও খ্রিস্টধর্মের মানুষও বসবাস করে আসছেন দেশটিতে৷ তবে ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদের আগ্রাসনে এখন ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা অতীতের যে-কোনো সময়ের চেয়ে বেশি হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন৷
দেবীর সম্মান
ধর্মীয় দিক থেকে নারীকে দেবীর মর্যাদায় আসীন করেন হিন্দুরা৷ কিন্তু বাস্তবে দেশটিতে নারীরা এখন ব্যাপক হারে নির্যাতনের শিকার৷ নারীদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলোর একটি মনে করা হয় ভারতকে৷ সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে প্রতি ২০ মিনিটে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হন৷ যৌতুক ও ভ্রুণহত্যাও বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না৷
গরুর মর্যাদা
ভারতের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে গরু পবিত্র প্রাণী৷ ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী গরু নিজে দেবতা না হলেও কৃষ্ণ বা শিবের মতো অনেক দেবতার বাহন হিসেবে গরুর সম্মানও অনেক৷ দেশটির অর্থনীতিতেও গরু বড় ধরনের ভূমিকা রাখে৷
নিরামিষভোজী জাতি?
ভারতকে অনেকেই নিরামিষভোজী জাতি বলে মনে করেন৷ সরকারি জরিপে দেখা গেছে ভারতীয়দের এক-তৃতীয়াংশই মাংস খান না৷ তবে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ‘চাপে’ অনেকে মাংস, বিশেষ করে গরুর মাংস’ খাওয়ার কথা প্রকাশ করতে চান না৷ ফলে প্রকৃত নিরামিষভোজীর সংখ্যা অনেক কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷
উপবাসের জীবন
ধর্ম পালনের অংশ হিসেবে ‘উপবাস’ হিন্দু ধর্মের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ৷ তবে উপবাস মানে এই নয় যে সবসময় কিছুই না খেয়ে থাকতে হবে৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু খাবার খাওয়া যায়৷ ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে মহাত্মা গান্ধীও উপবাসের এক দৃঢ় সমর্থক ছিলেন৷
নমস্তে, নমস্কার
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অভিবাদন জানানোর মাধ্যম হিসেবে ‘নমস্তে’ এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে৷ বাংলায় এই অভিবাদনকে ‘নমস্কার’ বলা হয়৷ বিদায় নেয়ার সময়ও একইভাবে হাতজোড় করে ‘নমস্তে’ বলাটা সংস্কৃতির সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত৷
ভারতের অআকখ
জ্যোতির্বিদ্যা, বলিউড এবং ক্রিকেট, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এই তিনটিকেই ভারতের হৃৎস্পন্দন বলা চলে৷ দেশটির ইন্টারনেটেও সবচেয়ে বেশি সার্চ করা হয় এই তিন বিষয় সংক্রান্ত সংবাদ৷
বিয়ে
পাশ্চাত্য সংস্কৃতির মতো বছরের যে-কোনো দিনে চাইলেই আপনি বিয়ে করতে পারবেন না৷ শুভ দিন বেছে নিতে বাবা-মায়েরা জ্যোতিষী এবং পুরোহিতদের পরামর্শ নেন৷ হিন্দু পরিবারগুলোতে পাত্র-পাত্রীর কুষ্ঠিও মেলানো হয়৷ ঐতিহ্যবাহী হিন্দু বিয়ে কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে৷ মূল বিয়ের আগে-পরেও নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয়৷
বিবাহিত নারীর প্রতীক
টিপ, চুড়ি ও সিঁদুর হিন্দু বিবাহিত নারীদের প্রতীক৷ অনেক হিন্দু বিশ্বাস করেন, নারীর বৈবাহিক পরিচয়ের বাইরে শরীরের ওপরও এসবের প্রভাব রয়েছে৷