বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষকে সন্তোষজনক সেবা দিতে ব্যর্থ এশিয়া
১৬ জুলাই ২০১০ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট অর্থাৎ ইআইইউ এর এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, জীবন সায়াহ্নে এসে বিশ্বের সব দেশের মানুষের যে ধরণের সেবা প্রয়োজন, এশিয়ার সরকার ও সহযোগী সংগঠনগুলো সে সেবা দিতে পারছেনা৷
এমনকি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ জাপানের অবস্থাও এক্ষেত্রে সন্তোষজনক নয় বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে৷ সিঙ্গাপুরের জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান লিয়েন ফাউন্ডেশনের পক্ষে চালিত এই সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, শান্তি ও মর্যাদার সঙ্গে মৃত্যুর বিশ্বব্যাপী চল্লিশটি দেশের সূচকে জাপানের অবস্থান ২৩ এ৷ ভারতের অবস্থা অবশ্য আরও করুণ৷ তার স্থান ৪০৷ চীন, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থানও নিচের ১০টির দেশের মধ্যে৷ বোঝা যায়, ওই অঞ্চলের অত্যন্ত বৃদ্ধ মানুষদের জন্য স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা ভাল নয়৷৷
উগান্ডা, ব্রাজিল, মেক্সিকো, রাশিয়া, তুরস্ক, পর্তুগাল ও দক্ষিণ আফ্রিকাতেও এই সেবার ব্যবস্থা খুবই দুর্বল৷ ইআইইউ এর বিশ্বব্যাপী গ্রাহক গবেষণা বিভাগের পরিচালক টনি ন্যাশ বলেন, ভারত ও চীনের বিশাল আয়তন ও বিপুল জনসংখ্যা সেদেশের স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কাজ করছে৷ সিঙ্গাপুরে বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও দেশ দুটি খুব বড় হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা পুরো জনসংখ্যার কাছে পৌঁছে দিতে তাদের কিছুটা সময় লাগবে৷''
শেষ বয়সের চিকিৎসা সেবায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে বৃটেন৷ তারপরেই আছে অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, অষ্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ক্যানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র৷ তাইওয়ান সেখানে আছে ১৪ ও সিঙ্গাপুর ১৮তম স্থানে৷ ন্যাশ বলেন, গড়ে এই ৪০টি দেশের মোট জাতীয় উৎপাদনের শতকরা ৮.৮ ভাগ কেবল স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় হয়৷ তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যখাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্র যা জিডিপি-র ১৬ শতাংশেরও বেশি ৷ অন্যদিকে ভারত এখাতে সবচেয়ে কম ব্যয় করে, শতকরা ১ ভাগ৷
সমীক্ষার রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আয়ু বেড়েছে৷ সেইসাথে বাড়ছে বুড়ো বয়সের নানা রোগ৷ ২০৩০ সালের মধ্যে ৬৫ বছর বা তারও বেশি বয়সের মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ১০০ কোটির মত৷ অর্থাৎ বিশ্বের জনসংখ্যার প্রতি ৮ জনের মতে ১ জন হবেন এই বয়সের৷ তাদের জন্য উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা বহু দেশের জন্য কঠিন হবে বৈকি৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক