বৈশ্বিক উষ্ণায়ন
৮ এপ্রিল ২০১৪জার্মানির বার্লিনে সোমবার শুরু হওয়া জাতিসংঘের এ বৈঠক চলবে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত৷ এ বৈঠকে ২৯ পৃষ্ঠার একটি খসড়া চূড়ান্ত করা হবে৷ এতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার শিল্প বিপ্লবের আগের সময়ের তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে না দেয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হলে দেশগুলোকে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনতে হবে৷
২০১০ সালে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনার ওই অঙ্গীকারনামায় সই করেছিল প্রায় ২০০ দেশ৷
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ১৯০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের উষ্ণতা প্রায় ০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে৷ এই ধারা চলতে থাকলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে তা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে৷
স্টকহোম রেজিলিয়েন্স সেন্টারের বিশেষজ্ঞ জন রকস্টর্ম বলেন, ‘‘আমাদের সামনে লক্ষ্য পূরণের সুযোগ খুব দ্রুত কমে আসছে৷ এখন বিতর্কটা হচ্ছে, আমরা ২ এর বদলে ৩ বা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উষ্ণতা বৃদ্ধির হার বেঁধে রাখার লক্ষ্য ঠিক করব কি না৷''
অবশ্য জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, লক্ষ্য শিথিল করা হলে বন্যা, খরায় খাদ্য ও সুপেয় পানির নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে এবং হিমশৈলী গলে যাওয়ার মতো অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে৷
এ কারণে কার্বন গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনার পাশাপাশি নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর ওপর জোর দেয়া হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে৷
২০১০ সালে বিশ্বে যেসব জ্বালানি ব্যবহার করা হয়েছে, তার মধ্যে ১৭ শতাংশ ছিল নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, যা কম মাত্রায় কার্বন গ্যাস নিঃসরণ করে৷ জাতিসংঘ বলছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা কমিয়ে আনতে হলে ২০৫০ সাল নাগাদ এ ধরনের জ্বালানির ব্যবহার তিন বা চারগুণ বাড়াতে হবে৷
খসড়ায় বলা হয়েছে, ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওই লক্ষ্য পূরণ করতে হলে ২০৩০ সাল নাগাদ গ্রিন হাউস গ্যাস নিসঃরণের মাত্রা ৩০ থেকে ৫০ বিলিয়ন টনে নামিয়ে আনতে হবে৷ ২০১০ সালে এর পরিমাণ ছিল ৪৯ বিলিয়ন টন, আর ১৯৯০ সালে ৩৮ বিলিয়ন টন৷
এই লক্ষ্য পূরণ করতে গেলে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবস্থাপনায় যে খরচ হবে, তাতে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের মোট উৎপাদন গড়ে ২ থেকে ৬ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে বলে মনে করছে জাতিসংঘ সমর্থিত আন্তঃসরকার সংস্থা ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)৷
জেকে/ এসবি (রয়টার্স)