1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাদাইনের পর্যটন

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২

ইরাকের ঐতিহ্যবাহী শহর মাদাইন৷ প্রাচীন এই নগরীতে আছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রত্ননিদর্শন৷ কিন্তু ইরাকে অ্যামেরিকার সামরিক অভিযানের পর মাদাইন যেন পরিণত হয়েছে পরিত্যক্ত জনপদে৷

https://p.dw.com/p/14AIh
Die Burg von Erbil ist eine der berühmtesten historischen Stätten im Norden Iraks. Autor: Munaf al-Saidi (DW Korrespondent, Bagdad)
ইরাকের উত্তরাঞ্চলের একটি প্রখ্যাত পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্রছবি: DW

আজ থেকে দুই হাজার বছরেরও আগের কথা৷ তখনও পৃথিবীতে খ্রীষ্টের জন্ম হয় নি৷ তখনো অতটা উজ্জ্বল নয় বাকি দুনিয়ার ইতিহাস৷ সে সময় মাদাইন ছিলো এক সমৃদ্ধ নগর৷ ছিলো স্বর্ণোজ্জ্বল এক রাজধানী৷

বর্তমান ইরাকের যুদ্ধ বিধস্ত যে মাদাইন শহরের নামটি আপনি জানেন তার কথাই বলছি৷ বাগদাদ থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে আজ শ্রীহীন, ঐশ্বর্যহীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে এ শহর৷

একদিন মাদাইন-ই ছিলো প্রাচীন মেসোপটেমীয় সভ্যতার বিরাট জনপদ; ছিলো পারস্য সাম্রাজ্যের সাসানিড গোত্রের রাজধানী৷ এখানেই আছে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ‘আর্চ অব ক্টেসিফন'৷

‘আর্চ অব ক্টেসিফন' বা ‘ধনুকের মতো বাঁকা খিলান'ওয়ালা প্রাসাদটি গুরুত্বপূর্ণ এক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন৷ ১২২ ফুট চওড়া এবং ১৫৮ ফুট উঁচু এই খিলানটি আজো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় খিলান৷

এখানেই রয়েছে মুসলিমদের শেষ নবী হজরত মহম্মদ এর অন্যতম সঙ্গী সালমান পাক এর সমাধিস্থল৷

টাইগ্রিস নদীর উত্তর-পূর্ব পাড়ে অবস্থিত ছোট্ট এ শহরটির সৌন্দর্য ও গৌরবকে নষ্ট করেছে ইরাক- ইরানের যুদ্ধ৷ তবু যা বাকি ছিলো সেটুকুও একেবারে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে অ্যামেরিকার সামরিক অভিযান৷

ইরাকে মানববিধ্বংসী অস্ত্র থাকার কারণ দেখিয়ে অ্যামেরিকার অভিযানের ফলে সাদ্দাম হোসেনের পতন ঘটে৷ প্রতিবাদে, প্রতিরোধে আল-কায়েদা এবং অন্যান্য সংগঠনগুলো রুখে দাঁড়ায়৷ তখন যেনো শুরু হয় রক্ত ঝরার উৎসব৷

Die meisten Touristen im Irak kommen um die vielen religiösen Stätten zu besuchen, insbesondere während der schiitischen Feste. Autor: Munaf al-Saidi (DW Korrespondent, Bagdad)
ইরাকের একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানছবি: DW

এখনো মাদাইনে ধর্মীয় উগ্রপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের কার্যক্রম আছে সন্দেহে সে এলাকায় চলে নিয়মিত সামরিক টহল৷

অ্যামেরিকান অভিযানের সময়ে মাদাইনের জাদুঘর থেকে লুট হয়েছে অসংখ্য প্রত্ন-সম্পদ৷ বাকি যা আছে তারও নেই কোনো যত্ন-আত্তি৷

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় খিলান আর্চ অব ক্টেসিফন'কে আজও ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেয় নি বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে৷ আর এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা দেবার জন্য ইউনেস্কোর কাছে এখনো আবেদনও করে নি সে দেশের সরকার৷

যুদ্ধ, সামরিক অভিযান, গুপ্ত হত্যা, পাল্টাপাল্টি হামলা, গোত্রে গ্রোত্রে হানাহানির ফলে হোটেল, রেস্তোরাঁ সব ভেঙে পড়েছে৷

থমথমে মাদাইনে এখন আর নেই পর্যটকের কলরব৷ নেই পর্যটনকে ঘিরে বাণিজ্যিক প্রসার৷ মাদাইন যেনো আজ এক ভূতুড়ে নগর; পরিত্যক্ত জনপদ৷

পতিত এ নগরটিকে আবারো জাগাতে হলে তাকে পর্যটনের উপযোগী করে তুলতে হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন৷

তাদের কেউ বলছেন, হোটেল, রেস্তোরাঁগুলোকে আবার ঠিকঠাক করতে হবে৷ সরকারকে আবার নতুন করে বানাতে হবে শহরের অবকাঠামো৷

কেউ বলছেন, মানুষকে দিতে হবে নিরাপদ পরিবেশ৷ তাদের মনে ফিরে পেতে হবে আস্থা৷ তবেই আবারো স্বাভাবিক হবে সবকিছু৷ আবারো হয়তো ফিরে আসবে শান্তির দিন৷

প্রতিবেদন: আফরোজা সোমা
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য