1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাত খুনের অভিযোগ-পত্র গ্রহণ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৮ জুলাই ২০১৫

নারায়ণগঞ্জে এলিট বাহিনী র‌্যাব সদস্যদের হাতে সাতজনকে হত্যা মামলার অভিযোগ-পত্র গ্রহণ করেছে আদালত৷ তাতে র‌্যাব-এর সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে৷ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে পলাতক ৮ জনের বিরুদ্ধেও৷

https://p.dw.com/p/1Fv6W
Bangladesch - Landesweiter Streik
ছবি: Getty Images

এই তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে যে, ঢাকার দক্ষিণে অবস্থিত ঐ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রধান আসামি আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন র‌্যাবকে দিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক আরেক কাউন্সিলার নজরুলকে খুন করান৷ বলা বাহুল্য, এ ঘটনা র‌্যাবকে ‘ভাড়াটে বাহিনী' হিসেবে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে৷

গত বছরের ২৭শে এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড এলাকা থেকে কাউন্সিলার নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করে র‍্যাব-১১ কয়েকজন সদস্য৷ তিনদিন পর তাঁদের মৃতদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়া যায়৷ হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক বছর পর গত ৮ই এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের আদালতে এই মামলার অভিযোগ-পত্র দেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মামনুর রশিদ মণ্ডল৷

Opfer des Rapid Action Battalion (RAB) in Bangladesh
ঘটনার দিন...ছবি: DW

অভিযোগ-পত্র গ্রহণের দিন বুধবার সাত খুনের মামলার আসামি সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে হাজির করা হয়৷ আসামিদের মধ্যে ২২ জন গ্রেপ্তার এবং র‌্যাব-এর ৮ সদস্যসহ ১৩ জনকে পলাতক দেখানো হয় অভিযোগ-পত্রে৷

মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আটকের পর সেখানকার কারাগারেই বন্দি রয়েছেন৷ গতবছর লাশ উদ্ধারের পরপরই নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, র‌্যাবকে ৬ কোটি টাকা দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে৷ তদন্তে প্রমাণ হয়েছে, ‘‘এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জের ধরে আওয়ামী লীগ নেতা ও কাউন্সিলার নূর হোসেন র‌্যাবকে দিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক আরেক কাউন্সিলার নজরুলকে খুন করান৷''

এদিকে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র বা আসক-এর প্রতিবেদনে জানা যায়, গত বছরের প্রথম আট মাসে র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বাংলাদেশে মোট ১১৩টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ ২০১৩ সালে ১৭৯টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল৷

আসক-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মোট ৩৫টি গুমের ঘটনা ঘটেছে, যার সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জড়িত বলেও দাবি করা হয়৷

আসক-এর পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় এটা প্রামণিত যে, ওই র‌্যাব সদস্যরা ভাড়াটে হিসেবে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়৷ আর অর্থের বিনিময়ে একপক্ষের হয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনকে হত্যা করে তারা৷ এটা একটি বাহিনীর অবস্থান এবং নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে৷''

তিনি বলেন, ‘‘এটা শুধু নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় নয়৷ আরো অনেক ঘটনায় র‌্যাব সদস্যদের ভাড়ায় খাটার অভিযোগ আছে৷ তবে তদন্ত প্রক্রিয়া একপেশে হওয়ায় তা অনেক সময় প্রমাণ হয় না৷ এবার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তদন্তের মাধ্যমে তা প্রকাশ হলো৷''

নূর খান বলেন, ‘‘র‌্যাব-এর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এখনো কমেনি৷ তার ওপর এই বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনে ব্যবহার করায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে৷ তাদের আর কারো কাছে জবাবদিহি করতে হয় না৷ তাই এই সুযোগে নিজেদের ফায়দাও লুটে নেয় তারা, নারায়ণগঞ্জের ঘটনা যার বড় প্রমাণ৷ এখানে ক্ষমতাসীন দলের এক কাউন্সিলার ক্ষমতাসীন দলের আরেক কাউন্সিলারকে অর্থের বিনিময়ে ব়্যাব সদস্যদের দিয়ে হত্যা করিয়েছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান