1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বার্লিনে আলোকোৎসব

কিয়র্স্টিন শুমাখার/এসবি৯ জানুয়ারি ২০১৫

দীপাবলি বা আলোর উৎসবের কথা আমরা জানি৷ প্রদীপ ও বাজির আলোয় ঝলমল করে ওঠে চারিদিক৷ প্রতি বছর হেমন্তকালে জার্মানির রাজধানী বার্লিনেও অনুষ্ঠিত হয় ‘ফেস্টিভাল অফ লাইটস'৷ তবে তার চরিত্র, শৈল্পিক আবেদন একেবারে অন্যরকম৷

https://p.dw.com/p/1EHiJ
Festival of Lights in Berlin
ছবি: picture alliance/dpa/P.Zinken

আলোর উৎসবের আগের রাত৷ কম্পিউটারে ছবির খুঁটিনাটি শুধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ছ'মাস আগেই কনসেপ্ট স্থির হয়ে গেলেও শুরুর ঠিক আগে দিনরাত চরম ব্যস্ততা চলছে৷ লাইট শো পরিচালক ভল্ফরাম লেন্সসেন, ‘‘বেশ কিছু ফাইন টিউনিং বাকি রয়েছে৷ রং ম্যাচিং করতে হবে৷ এ সব করতেই হবে৷ তারপর গোটা প্রকল্প নতুন করে খতিয়ে দেখে সব ঠিক আছে কি না পরীক্ষা করতে হবে৷ কাজ কিছুতেই যেন শেষ হয় না৷ কিন্তু সেটা বেশ রোমাঞ্চকর৷''

বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে আলোর খেলা তৈরি করা হয়েছে৷ এর মাধ্যমে হানেস নয়মান ভাস্করের মতো বিভিন্ন বস্তুর উপর আলোর মুভমেন্ট রচনা করেছেন৷ নির্দিষ্ট স্থাপত্যের উপর মাপ অনুযায়ী নিপুণভাবে আলোর বস্তুগুলি নিক্ষেপ করতে হবে৷ থ্রিডি গ্রাফিক আর্টিস্ট হানেস নয়মান বলেন, ‘‘ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের এমন এক মডেল থেকে শুরু করতে হবে৷ তারপর থ্রিডি সফটওয়্যারে সেই অ্যাঙ্গেল থেকে তোলা ছবি ভরতে হবে, যেখানে প্রোজেক্টর থাকবে৷ দেখলে মনে হবে, ভবনটি যেন নিজেই একটি পোশাক পরে নিচ্ছে৷''

BdT Deutschland 10. Oktober Festival of Light
আলোকসজ্জায় ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণছবি: Reuters/Hannibal

ব্রান্ডেনবুর্গ গেট আটটি এমন পোশাক পেয়েছে৷ তার মধ্যে একটি স্থাপত্যের অ্যানিমেশন৷ আরেকটি বার্লিনের ক্লাব কালচার নিয়ে তৈরি৷ লাইট শো পরিচালক ভল্ফরাম লেন্সসেন বলেন, ‘‘আমি ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের অলংকরণ হিসেবে শিল্পকর্মই বেছে নিতে চেয়েছিলাম৷ এক একটি দৃশ্য দিয়ে আসলে নানা রকম আবেগ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলাম৷''

ভল্ফরাম লেন্সসেন সহ বেশ কয়েকজন শিল্পীকে এ বছরের আলোক উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ বার্লিন ক্যাথিড্রালের উপর আন্তর্জাতিক আলোর ডিজিইনাররা নিজেদের মতো করে ‘বাঁচার আনন্দ' নামের থিম ফুটিয়ে তুলেছেন৷ পটসডামার প্লাৎস এলাকায় শিল্পীদের একটি সংঘ আলোর ঢেউ সৃষ্টি করা হয়েছে৷ বেবেলপ্লাৎস এলাকায়ও বিশেষ প্রোজেক্টর লাগানো হয়েছে৷ এমন সব খোলা জায়গায় আলোর খেলা দেখতে টিকিট লাগে না৷ তাই অনেকের কাছেই ‘ফেস্টিভাল অফ লাইটস' নিয়মিত আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ গত বছর প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন৷

সবাই ছবি তোলে৷ সংগীত ছাড়াই শান্তিপূর্ণ এই উৎসব চলে৷ গোটা সংস্কৃতি ছবির মধ্যে ফুটিয়ে তোলা হয়৷ শহরের মধ্য দিয়ে হাঁটতে বেশ ভালো লাগে৷ নতুন করে বার্লিন আবিষ্কার করতে, নতুন ছবি ও আলোর খেলা দেখতে অসাধারণ লাগে৷

Festival of Lights in Berlin
আলোকসজ্জায় বার্লিন ক্যাথিড্রালছবি: picture alliance/dpa/P.Zinken

গত ১০ বছর ধরে বিস্ময়ের এই কারণ চলে আসছে৷ হেমন্তকালে আয়োজকরা বার্লিন শহরকে উজ্জ্বল করে তোলেন৷ এর মধ্যে তাঁরা এক হাজারেরও বেশি ‘লাইট ইনস্টলেশন' সৃষ্টি করেছেন৷ আন্তর্জাতিক স্তরেও এর পরিচিতি বেড়ে চলেছে৷ আলোক উৎসবের প্রতিষ্ঠাতা বিরগিট সান্ডার বলেন, ‘‘আমার স্বপ্ন বাস্তব হয়েছে৷ ১০ বছর আগে ভেবেছিলাম, ১০ বছর ধরে কীভাবে এর বিকাশ ঘটবে! কিন্তু এখনও চলছে৷ এখন আমরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রবেশ করছি৷ নভেম্বর মাসে নিউ ইয়র্ক শহরে প্রথম উৎসব করছি৷ সাগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছি৷''

ক্যানাডা, মালয়েশিয়া ও ইউরোপের নানা শহরেও এমন উৎসবের পরিকল্পনা রয়েছে৷ ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে ফেরা যাক৷ পাঁচ ঘণ্টা ধরে, মাঝরাত পর্যন্ত আলোর উৎসব চলে৷ দর্শকদের মধ্যে বারবার শিল্পী ভল্ফরাম লেন্সসেন-কে দেখা যায়৷ লাইট শো পরিচালক ভল্ফরাম লেন্সসেন বলেন, ‘‘আমার কাজ আসলে শেষ হয় না৷ উৎসব শেষ হওয়া পর্যন্ত কাজ চলে৷ তারপর ভাবতে হয়, কোনটা আরও ভালো করা যায়৷''

প্রতি বছর হেমন্তকালে বার্লিনের মানুষ ও পর্যটকরা এই উৎসবের স্বাদ নিতে পারেন৷ জার্মানির রাজধানী এভাবে আলোর সাজে সেজে নিজেদের ঢাক নিজেরাই বাজাতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য