বউ হারিয়ে খুঁজে পাওয়া
২৩ জানুয়ারি ২০১৪রাজনীতির হালহকিকত জানিয়ে, কিংবা সমাজসচেতনতা বাড়াতে অনেক লেখাই লেখা হয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে৷ আমার ব্লগে দেয়া ফাহীম সাদিকীনের পোস্ট একেবারে ভিন্ন স্বাদের৷ তাঁর লেখায় উঠে এসেছে বাঙালি মধ্যবিত্তের আটপৌরে জীবনের গল্প৷ লেখার শিরোনাম, ‘বাণিজ্য মেলায়..'৷
কী হয়েছিল বাণিজ্য মেলায়? না, গল্পের শুরু তার অনেক আগে৷ স্বামীকে ছাড়া স্ত্রী আর স্ত্রীকে ছাড়া স্বামী অনেক ক্ষেত্রেই অসহায়৷ অসহায় জীবনযাপনে, অসহায় জীবন উপভোগে৷ এ সত্যের মুখোমুখি হতে হয় প্রতিদিন৷ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মান-অভিমান, একটু-আধটু ঝগড়া-ফ্যাসাদও প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা৷
তবুও জীবন মধুর৷ হঠাৎ বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার সুযোগ পাওয়ায় ফাহীমের স্ত্রী অসুস্থতার মাঝেই ফিরে পেয়েছিলেন অপার্থিব আনন্দ, মিষ্টি হাসি ফুটেছিল তাঁর ঠোঁটে৷ ফাহীম তাঁর লেখায় পুরো বিষয়টিকে দেখেছেন এভাবে, ‘‘আমার মুখে বাণিজ্য মেলার কথা শুনতেই শম্পা বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালো৷ এতক্ষণ তার শরীর খুবই দুর্বল লাগছিল৷ দাঁড়াতেও কষ্ট হচ্ছিল৷ কিন্তু মেলার কথা কানে যেতেই দাঁড়িয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিল৷ বুঝলাম তার শরীর ভালো হয়ে গেছে৷ মুখ দেখে মনে হচ্ছে একদম ফ্রেশ৷ এখন যদি তাকে অ্যাথলেটদের মতো হাই জাম্প-লং জাম্প দিতে বলি তাতেও কোনো অসুবিধা হবে না৷ আজ বাকি দিনটা শম্পা আমাকে ব্যাপক আদর-যত্ন করবে৷ লক্ষ্য করে দেখেছি, মার্কেট কিম্বা কোনো কিছু কেনাকাটার কথা বললেই সে আমাকে বাড়াবাড়ি রকমের আদর-যত্ন করা শুরু করে৷ তার কথা বলার স্টাইলও পাল্টে যায় সেদিন৷ অন্যদিন মাঝেমধ্যে কর্কষ ভাষা ব্যবহার করলেও মার্কেটে যাওয়ার দিন অতি আহ্লাদি ও মোলায়েম সুরে কথা বলে৷ আমাকে বিভিন্ন মজাদার খাবার রান্না করেও খাওয়ায়৷''
স্ত্রীর আচরণে এমন পরিবর্তন নাকি উদ্দেশ্যমূলক৷ বাণিজ্য মেলায় গিয়ে নাকি তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন আমার ব্লগের এই ব্লগার৷ স্ত্রী-র কেনাকাটার এমন ধুম লেগেছিল যে ফাহীমের মনে পড়ে গেল লোকে বলে, ‘বউ পালা আর হাতি পালা সমান৷' এক সময় বউকে হারিয়েও ফেলেছিলেন ফাহীম সাদিকীন৷ দিশেহারা হয়ে মাইকে ‘বউ হারানো বিজ্ঞপ্তি' প্রচারের কথাও ভাবছিলেন৷ ভাগ্য ভালো, অনেক টাকা খরচ হলেও বউকে তিনি খুঁজে পেয়েছেন!
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ