বাংলাদেশের ফজলি আম ও চিংড়ির জিআই সনদ
২০ অক্টোবর ২০২১সরকারের পেটেন্টস, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্ক বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. আবদুস সাত্তার ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটমকে বলেন, ‘‘আমাদের দেশের ফজলি আম ও বাগদা চিংড়িকে জিআই পণ্য স্বীকৃতি দিতে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে৷ আশা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে সনদ হয়ে যাবে৷''
নিয়ম অনুযায়ী এ দুটি কৃষি পণ্যের ভৌগলিক নির্দেশক যাচাই করে দুটি জার্নাল প্রকাশ করা হয় এবং জার্নাল প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে কেউ আপত্তি না করলে সনদ দেওয়া হয়৷ ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি নিয়ে কেউ আপত্তি করেনি বলে জানান আবদুস সাত্তার৷
রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঁশবিহীন, রসালো, সুগন্ধী,সুস্বাদু ও মিষ্টি ফজলি আমের জন্য বিখ্যাত৷ ভারতেও এ আম আম পাওয়া যায়৷
বাগদা: সারা বিশ্বে পাঁচশরও বেশি বাগদা চিংড়ির প্রজাতি রয়েছে৷ বাংলাদেশের কালো ডোরা কাটা বাগদা হয় একটু চ্যাপ্টা আকারের অন্যান্য চিংড়ির তুলনায়৷ উপকূলীয় এলাকায় চাষ হওয়া চিংড়ির ৮০ শতাংশই বাগদা৷ যুক্তরাষ্ট্র, একুয়েডর, মেক্সিকো, চীন, ভারত এবং ইন্দোনেশিয়াতেও বাগদা চিংড়ির বাণিজ্যিক উৎপাদ হয়৷
জিআই সনদ হচ্ছে
ভৌগলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জিআই) একটি প্রতীক বা চিহ্ন, যা পণ্য ও সেবার উৎস, গুণাগুণ ও সুনাম ধারণ ও প্রচার করে৷
কোনো দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশ যদি কোনো পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব রাখে এবং সেই দেশের সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত হয়, তাহলে সেটাকে সে দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়৷
ইন্টারন্যাশনাল প্রপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউআইপিও) নিয়ম মেনে বাংলাদেশের পেটেন্টস, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্ক বিভাগ (ডিপিডিটি) জিআই সনদ দেয়৷
জিআই সনদের মাধ্যমে ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হিসাবে পরিচিতি পাবে বিশ্বে৷ প্রাকৃতিক উপায়ে পণ্য উৎপাদন করে সব গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্য ঠিক রেখে বাজারজাত করতে হবে এবং পণ্যে আলাদা ট্যাগ বা স্টিকার ব্যবহার করা যাবে৷ তাছাড়া আলাদাভাবে চিহ্নিত হওয়ায় রপ্তানিতে তুলনামূলক বেশি দাম পাওয়ার সুযোগ থাকবে৷
সনদ পেয়েছে যেসব পণ্য
বাংলাদেশে ২০১৩ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইনের বিধিমালা তৈরি করা হয়৷ ২০১৬ সালে বাংলাদেশের জামদানি শাড়ি প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক সামগ্রী হিসেবে স্বীকৃতি পায়৷ ২০১৭ সালে ইলিশ এবং ২০১৯ সালে ক্ষীরষাপাতি আম পায় জিআই স্বীকৃতি৷ গত জুন মাসে ঢাকাই মসলিন, রংপুরের শতরঞ্জি, রাজশাহী সিল্ক, দিনাজপুরের কাটারিভোগ, নেত্রকোণার বিজয়পুরের সাদামাটি ও বাংলাদেশের কালিজিরা চাল একসাথে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে৷
বাংলাদেশের মোট ৩৭টি পণ্যের জিআই স্বীকৃতির আবেদনের মধ্যে ১১টি পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া গেছে৷ তালিকায় রয়েছে রংপুরের হাড়িভাঙা আম, নাটোরের কাঁচাগোল্লা ও নোয়াখালীর মহিষের দুধের দই ৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)