ফ্রি ডাইভার
১২ এপ্রিল ২০১৬ফ্রি ডাইভিং-এর বিশ্বরেকর্ড হলো ১১ মিনিট! ফ্রি ডাইভাররা দু'শ মিটারের বেশি জলের তলায় নেমেছেন, এমনও শোনা গেছে৷ ফ্রি ডাইভাররা তাদের ফুসফুসের প্রতিটি অংশ ভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন – অথচ এর ফলে তাদের নাড়ির স্পন্দন বাড়ে না৷
তবে অ্যাপনিয়া ডুবুরিদের গোপন রহস্য হল তাদের মানসিক শক্তি – চরম পরিস্থিতিতে পুরোপুরি শান্ত থাকার ক্ষমতা৷ ফ্রি ডাইভার ডরিস হোফারমান বলেন, ‘‘খেলাধুলো করার অভ্যাস থাকলে, সেটা একটা সুবিধা – তবে ফ্রি ডাইভিং-এ সবচেয়ে জরুরি হলো মানসিক দিকটা৷ ভালো পারফর্মেন্স করার জন্য শরীর ও মনকে ইচ্ছেমতো পুরোপুরি রিল্যাক্স করার ক্ষমতা থাকতে হবে – অথচ ডাইভিং-এর কায়দা-কানুনের প্রতি মনঃসংযোগ একবিন্দু না খুইয়ে৷''
জলের তলায় মানুষের শরীরে নানা জটিল প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়াগুলোকে আরো ভালোভাবে বুঝতে চান৷ হৃৎপিণ্ডের একটা বড় ভূমিকা আছে: হার্ট থেকে সারা শরীরে রক্ত যায়, আর সেই সঙ্গে অক্সিজেন৷ বন ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকের অ্যানাস্থেটিস্ট ড. লার্স আইশবর্ন বলেন, ‘‘আমাদের গবেষণার বিস্ময়কর দিকটা হলো, এমআরটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা এই প্রথম পানির তলে শরীরে কি ঘটে, তা দেখতে পাচ্ছি৷ আমরা অ্যাপনিয়া ডাইভিং-এর সময় হৃৎপিণ্ডের ওপর সরাসরি নজর রাখতে পারছি৷''
এ জন্য টেস্ট চলার সময় ফ্রি ডাইভাররা তাদের দম বন্ধ করে রাখার পদ্ধতি প্রয়োগ করেন৷ বিজ্ঞানীরা দেখতে চান, দম বন্ধ থাকার সময় হৃৎপিণ্ড কিভাবে সারা শরীরে রক্তচলাচল বজায় রাখে৷
একটি স্পন্দনরত হৃৎপিণ্ডের ছবি৷ এই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে যা জানা যাচ্ছে, তা থেকে ভবিষ্যতে রোগীদের সংকটের মুহূর্তে সাহায্য করা সম্ভব হবে, কেননা জরুরি চিকিৎসার সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো রোগীর শরীরে যাতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন থাকে, তার ব্যবস্থা করা৷ ড. লার্স আইশবর্ন বলেন, ‘‘স্বভাবতই আমরা রোগীদের নিয়ে কোনো চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারি না৷ কিন্তু অ্যাপনিয়া ডাইভারদের নিয়ে আমরা চরম পরিস্থিতির অনুকরণ করতে পারি৷ তা থেকে আমরা দেখতে পাই, শরীর কিভাবে অক্সিজেনের ঘাটতি পুষিয়ে নেয় – যার ফলে আমরা হয়ত ভবিষ্যতে রোগীদের আরো ভালোভাবে সাহায্য করতে পারব৷''
ফ্রি ডাইভাররা চিকিৎসাশাস্ত্রের একটি ধাঁধা – বা আশ্চর্য – বিজ্ঞান যা প্রায় ধরে ফেলেছে, বা ধরে ফেলতে চলেছে৷