প্রেসিডেন্টের স্বপ্ন যাঁদের জন্য দুঃস্বপ্ন
ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জাইয়া বলসোনারো সম্প্রতি তাঁর স্বপ্নের কথা শুনিয়েছেন৷ তবে সেই কথা শুনে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অ্যামাজনে বাস করা আদিবাসীরা৷
প্রেসিডেন্টের স্বপ্ন
ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জাইয়া বলসোনারো গত বুধবার একটি নতুন বিল প্রস্তাব করেছেন৷ কংগ্রেসে এটি পাস হলে অ্যামাজনে খনি, কৃষিকাজ ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন সহজ হবে৷ তিনি আশা করছেন, তাঁর এই ‘স্বপ্ন’ পূরণ হবে৷
আদিবাসীদের দুঃস্বপ্ন
ব্রাজিলের আদিবাসী সংগঠনের কর্মকর্তা সোনিয়া গুয়াজাজারা বলছেন, ‘‘বলসোনারোর স্বপ্ন আমাদের জন্য দুঃস্বপ্ন৷ এটা আমাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেবে৷ খনি কোম্পানি মৃত্যু, রোগ আর কষ্ট নিয়ে আসে৷ এবং এটা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ শেষ করে দেবে৷’’ ব্রাজিলে কমপক্ষে একশ আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস, যাঁদের এখনও বাইরের বিশ্বের ছোঁয়া লাগেনি৷
‘ট্রপিক্যাল ট্রাম্প’
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ভাবনা যেমন, প্রায় তেমন ভাবনা ব্রাজিল প্রেসিডেন্টেরও৷ তাই অনেকে তাঁকে ‘ট্রপিক্যাল ট্রাম্প’ নামেও ডাকেন৷ গতবছর দায়িত্ব নেয়ার পর অ্যামাজন বিষয়ে বলসোনারোর নেয়া বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করেছেন পরিবেশকর্মীরা৷
প্রেসিডেন্টের হুমকি
জলবায়ু পরিবর্তন রোধে অ্যামাজন রক্ষা করতে চান পরিবেশবাদীরা৷ তাই নতুন বিল উত্থাপন করতে গিয়ে তাঁদের একহাত নিয়েছেন বলসোনারো৷ তিনি বলেছেন, ‘‘আমি জানি পরিবেশকর্মীরা আমাদের উপর চাপ দেবে৷ পারলে আমি তাঁদের অ্যামাজনে বন্দি করে রাখতাম, কারণ তাঁরা পরিবেশ খুব পছন্দ করেন৷’’
আইন সহজ করেছেন
গবেষক ব্রেন্ডা ব্রিতো বলছেন, ব্রাজিলের আইন জমি দখল ও বন ধ্বংসকারীদের পক্ষে৷ ‘‘এটি (এই আইন) আপনাকে জমি দখলের অনুমতি দেয়, যদি আপনি একে কাজে (বৈধ কাজ) লাগানোর ভান করেন, এবং এরপর জমির মালিকানা দখল করে নেন৷’’ বলসোনারো এই আইন আরও সহজ করে জমি দখলের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন৷ এছাড়া আগে যেখানে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জমি নিয়ন্ত্রণে থাকলে মালিক হওয়া যেত সেখানে নতুন আইনে ঐ সময়সীমা বাড়িয়ে ২০১৪ সাল করা হয়েছে৷
এলাকা দ্বিগুন হয়েছে
বলসোনারো আসার পর গতবছর ১১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অ্যামাজন ধ্বংস হয়েছে৷ আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার হাজার ২১৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা ধ্বংস হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুনেরও বেশি৷
প্রতিবাদ করলে হুমকি
স্থানীয়রা জমি দখল ও বন ধ্বংসের প্রতিবাদ করলে তাঁদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়৷ যেমন স্থানীয় নেতা দে মেলো থাকেন নভো প্রোগ্রেসো এলাকায়৷ গতবছর ঐ এলাকার অ্যামাজনে আগুন লাগার ঘটনা বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল৷ দে মেলো প্রতিবাদ করায় তাঁর ছেলেকে মারধর করা হয়েছে৷ এছাড়া ২০১৮ সালে তাঁর গ্রামের তিনজনকে হত্যা ও অন্তত ১৬ জনকে হুমকি দেয়া হয়েছে৷