নাইরোবির সাফারি পার্ক
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২শুধু যে পার্ক বা সংরক্ষণ কেন্দ্র তাই নয়, বড় শহর থেকে একটু দূরে গেলেই চোখে পড়ে অপার সুন্দর প্রকৃতি৷ আর সেখানেও আছে বন্ধুসুলভ প্রাণীর ছড়াছড়ি৷
মানব শিশুর চোখে চোখ রেখে কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছে এক বয়স্ক জিরাফ৷ আরেকটি জিরাফ তার সুদীর্ঘ গলা প্রায় মাটির কাছে নামিয়ে এনে চুমু খাচ্ছে ছোট্ট কোনো শিশুর হাতে৷ অন্য একটি জিরাফ তার ভেজা ভেজা জিব দিয়ে চেটে দিচ্ছে অন্য আরেক শিশুর হাত৷ আর তাদের বাবা-মায়েরা আনন্দের সাথে ক্যামেরায় বন্দি করছে সেসব ছবি৷
না, এমন দৃশ্য বাংলাদেশে নেই৷ কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে আছে৷ নাইরোবিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পার্ক, সাফারি পার্ক, প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র আর অভয়ারণ্যগুলিতে এমন দৃশ্য চোখে পড়বে রাশি রাশি৷
দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ, যারা আফ্রিকান এই দেশে বেড়াতে আসে, তারা অন্তত একটি বারের জন্য হলেও ঘুরে যায় এসব পার্কের দু'একটিতে৷ বিশেষ করে এই পার্কগুলো শিশুদের জন্য ভীষণ আনন্দের৷
হাতি, জিরাফ, গন্ডার, হরিণ থেকে শুরু করে নানা জাতের প্রাণী আছে পার্ক আর সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে৷ কোনো পার্কে আপনি হয়তো ঘুরতে পারবেন সারাদিন, কোথাও আবার দিনে মোটে একঘন্টা খোলা৷
শুধু পার্ক বা অভয়ারণ্য যে আছে সে দেশে তা কিন্তু নয়৷ শুনলে হয়তো একটু অবাক হবেন এতিম হয়ে যাওয়া বন্য প্রাণীদের লালন-পালনের জন্যেও সে দেশে আছে একধরণের এতিমখানা৷ ধরুন যে বাচ্চা হাতিটার মা মারা গেছে, বা যে জিরাফটার মা-কে মেরে ফেলেছে শিকারীর দল সে বাচ্চাটার কী হবে এখন? তাকে পেলে-পুষে বড় করার জন্যও ব্যবস্থা আছে এই এতিমখানায়৷
ধরেন, আপনি নাইরোবি থেকে একটু দূরের শহর নাইভাসাতে গেলেন৷ সেখানে হয়তো আপনি রাত কাটালেন বনের ভেতর কাঠের তৈরি ছোট্ট কোনো ঘরে৷ কিংবা তাঁবু খাটিয়ে আপনি নিচ্ছেন রোমাঞ্চকর বুনো রাতের স্বাদ৷ তো, সেখানে আপনাকে সঙ্গ দেবে পালে পালে বানর, বেবুন আর হরিণ জাতীয় প্রাণী৷
আর ঘর বা তাঁবু থেকে বেরিয়ে আপনি যদি একটু হাঁটতে বেরোন কিংবা সাইকেলে চেপে ঘুরে আসেন ইতিউতি - তো দেখবেন পাহাড় ঘেরা সেই এলাকায় সামনেই রয়েছে কী সুন্দর ছোট্ট এক হ্রদ৷ সেই হ্রদে গোলাপি পালক মেলে পদ্ম ফুলের মতো ফুটে আছে অজস্র কানঠুটি পাখি৷
প্রাণীদের অদ্ভুত সঙ্গ, নীল হ্রদ, গোলাপি পাখির ডানা আর দূরের পাহাড় সব দেখে ছেলে-বুড়ো সবাই যেনো বিমুঢ় হয়ে যায়৷
প্রতিবেদন: আফরোজা সোমা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারুক