আবারও মুখ খুললেন ও্যজিল
১৮ অক্টোবর ২০১৯খেলাধুলা বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘দ্য অ্যাথলেটিক'কে দেয়া সাক্ষাৎকারে জার্মানির হয়ে বিশ্বকাপ জেতা ও্যজিল বলেন, জাতীয় দল থেকে তাঁর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল৷ ‘‘সিদ্ধান্ত নেয়ার পর অনেক সময় চলে গেছে৷ কিন্তু আজও আমি জানি যে, সিদ্ধান্তটা ঠিক ছিল,'' বলেন ৩১ বছর বয়সি ও্যজিল৷ তিনি বলেন, ‘‘ঐ সময়টা আমার জন্য খুব কঠিন ছিল৷ কারণ জার্মানির হয়ে আমি নয় বছর খেলেছি৷ তাদের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ও ছিলাম আমি৷’’
গতবছর মে মাসে লন্ডনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এর্দোয়ানের সঙ্গে ছবি তুলে জার্মানিতে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন ও্যজিল৷ তাঁর সঙ্গে জার্মান জাতীয় দলের আরেক খেলোয়াড় ইলকায় গুন্দোয়ানও ছিলেন৷
ঐ ছবি প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে ও্যজিলকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল৷ এরপর জুন-জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে জার্মানির হয়ে খেলার সময় সমর্থকদের রোষের মুখে পড়েন বলে জানান তিনি৷
এরপর ২২ জুলাই জাতীয় দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন ও্যজিল৷ পদত্যাগপত্রে তিনি বর্ণবাদ ও বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছিলেন৷
দ্য অ্যাথলেটিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ও্যজিল ঐ সময় সম্পর্কে আবারও কথা বলেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি বর্ণবাদী আচরণ পাচ্ছিলাম - এমনকি রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকেও - সেই জাতীয় দলের কেউ এসে বলেননি যে, ‘এসব বন্ধ করুন৷ ও আমাদের খেলোয়াড়, আপনি তাঁকে এভাবে অপমান করতে পারেন না’৷ সবাই চুপ করে ছিলেন এবং এসব ঘটতে দিয়েছিলেন৷’’
বিশ্বকাপের সময় সমর্থকদের কাছ থেকে শোনা কয়েকটি মন্তব্যও উল্লেখ করেন ও্যজিল৷ যেমন ‘তোমার দেশে ফিরে যাও’, ‘এফ... ইওরসেল্ফ’ এবং ‘তুর্কি শুয়োর’ ইত্যাদি৷
ও্যজিল বলেন, ‘‘আমার মনে হচ্ছিল, তাঁরা আশা করছিলেন, (এর্দোয়ানের সঙ্গে) বৈঠকের জন্য আমি ক্ষমা চাই, আমি যে ভুল করেছি সেটা স্বীকার করে নেই, এবং তারপর সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে৷ তা না হলে, আমি দলে স্বাগত হতাম না এবং আমাকে দল ছাড়তে হতো৷ আমি কখনও তা করবো না৷’’
জার্মানিতে বর্ণবাদ সবসময় ছিল মন্তব্য করে আর্সেনালের বর্তমান ফুটবলার ও্যজিল বলেন, তাঁর ঘটনায় বর্ণবাদের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে এসেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘তাঁরা ব্যক্তিগত মত দিতে পারেন, আমার ছবি তাঁদের অপছন্দ হতে পারে, তেমনি আমিও ছবি তোলার বিষয়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারি৷ কিন্তু তারপর যা হয়েছে, তাতে সবার কাছে তাদেঁর বর্ণবাদী চরিত্র বের হয়ে গেছে৷’’
ও্যজিল মনে করছেন, তাঁর সঙ্গে হওয়া ঘটনাটি জার্মানিতে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের একটি নির্দেশক৷
সম্প্রতি জার্মানির হালে শহরে ইহুদিদের একটি উপাসনালয়ের কাছে এক নব্য-নাৎসির এলোপাতাড়ি গুলিতে দুজন নিহত হন৷ এই ঘটনার উল্লেখ করে ও্যজিল বলেন, ‘‘জার্মানির অনেকগুলো বড় সমস্যা আছে - গত সপ্তাহে হালেতে যে ঘটনাটি হলো সেটির দিকে তাকান, সেটা একটি ইহুদিবিদ্বেষী হামলা ছিল৷ দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বর্ণবাদ শুধুমাত্র আর ডানপন্থি ইস্যু নয়৷ এটি সমাজের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে৷’’
জেমস থরোগুড/জেডএইচ