নিউ মার্কেট সংঘর্ষের ঘটনায় আরো তিনজন গ্রেপ্তার
৫ মে ২০২২ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রতিবেদন অনুসারে, বুধবার রাতে শরীয়তপুর ও কক্সবাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন৷
তিনজনের মধ্যে ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মাহমুদুল হাসান সিয়ামকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়েছে সংঘর্ষের দিন ডেলিভারিম্যান নাহিদ মিয়াকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে৷ আর ওয়েলকাম নামে নিউ মার্কেটের একটি খাবারের দোকানের কর্মী মোয়াজ্জেম হোসেন সজীব (২৩) এবং মেহেদী হাসান বাপ্পিকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়েছে সংঘর্ষ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও উসকানির অভিযোগে৷ যে দুই খাবারের দোকানের কর্মীদের কথা কাটাকাটি থেকে সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল, ওয়েলকাম তার একটি৷
র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, "সিয়ামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শরিয়তপুর থেকে৷ সেখানে এক আত্মীয়র বাসায় আত্মগোপন করে ছিলেন ঢাকা কলেজের এই শিক্ষার্থী৷ ভিডিওতে দেখা গেছে, সিয়াম রড দিয়ে নাহিদকে পেটাচ্ছিলেন৷ পরে আরেকজন এসে নাহিদকে কোপায়৷"
তিনি আরো জানান, "আর সজীব ও বাপ্পিকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তারা সেখানে আত্মগোপনে থেকে বিভিন্ন হোটেলে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিল৷"
গত ১৮ এপ্রিল ইফতারের টেবিল বসানো নিয়ে নিউ মার্কেটের দুই দোকানের কর্মীদের বচসার পর এক পক্ষ ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মীকে ডেকে আনে৷ তারা গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর ছাত্রাবাসে ফিরে আরও শিক্ষার্থীদের নিয়ে সোমবার মধ্যরাতে নিউ মার্কেটে হামলা চালাতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে, যা পরদিন পর্যন্ত চলে৷
দিনভর সংঘর্ষের সময় ডেলিভারিম্যান নাহিদকে কুপিয়ে জখম করা হয়৷ ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তিনি মারা যান৷ নাহিদ মিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এর আগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ৷ তারাও সবাই ঢাকা কলেজের ছাত্র৷
সেদিনই সংঘর্ষের সময় দুপুরের দিকে নুরজাহান মার্কেটের সামনে ইটের আঘাতে আহত হন মোরসালিন৷ দুদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়৷
নাহিদ হত্যার পাশাপাশি মোরসালিন হত্যা মামলার তদন্তের ভারও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে৷ তবে মোরসালিনের খুনিদের এখনও শনাক্ত করতে পারেননি পুলিশ৷
সংঘর্ষের ওই ঘটনায় নিউ মার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলার পাশাপাশি সংঘর্ষ, বোমাবাজি এবং অ্যাম্বুলেন্সে হামলার অভিযোগে মোট পাঁচটি মামলা হয়েছে৷ এর মধ্যে সংঘর্ষের মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে কয়েকশ ছাত্র ও দোকানকর্মীকে আসামি করা হয়েছে৷ এ মামলার প্রধান আসামি মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ইতোমধ্যে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ৷
নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল ‘ক্যাপিটাল' ও ‘ওয়েলকাম' দোকান দুটির মালিক৷ তবে কোনো দোকানই তিনি নিজে চালাতেন না৷ রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুজনকে ভাড়া দিয়ে রেখেছিলেন দোকান দুটি৷ মকবুলের দাবি, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে৷ মামলায় নাম আসা বাকিরাও বিএনপির নেতাকর্মী৷
এএস/কেএম(বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম)