1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নাৎসি সন্ধান

আলোইস ব্যার্গার / আরবি২৭ জুলাই ২০১৩

সিমন-ভিজেনথাল সেন্টার জার্মানির বড় বড় শহরগুলোতে প্ল্যাকার্ড পোস্টার নিয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেছে৷ তাদের উদ্দেশ্য, এখন পর্যন্ত বেঁচে থাকা নাৎসি অপরাধীদের চিহ্নিত করা৷

https://p.dw.com/p/19Erd
Efraim Zuroff, Leiter des Simon Wiesenthal Center in Jerusalem, steht beim Start der Plakatkampagne "Spät. Aber nicht zu spät! Operation Last Chance II" vor einem Plakat am 23.07.2013 in Berlin. Ziel der Initiative sei es, bisher nicht verurteilte NS-Kriegsverbrecher mit Hilfe der Bevölkerung aufzuspüren und vor Gericht zu bringen Foto: Jörg Carstensen/dpa pixel
ছবি: picture-alliance/dpa

‘‘আমরা ৬০ জনের কথা বলছি৷ তাদের সবাই দিনের পর দিন গণহত্যার সাথে জড়িত ছিল৷'' কথাগুলো বলছিলেন জেরুসালেমে কর্মরত সিমন-ভিজেনথাল সেন্টার-এর প্রধান এফরাইম সুরফ৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘তাদের জন্ম হয়ত ১৯১৯, ১৯২০ কিংবা ১৯২১ সালে হতে পারে৷ কিন্তু শুধু বয়সের কারণে তাদের অপরাধের ব্যাপারটি খতিয়ে না দেখার কোনো কারণ থাকতে পারে না৷''

‘‘সিমন-ভিজেনথাল সেন্টার মূলত হলোকস্ট তথা ইহুদি নিধনযজ্ঞের ঘটনা তদন্তের কাজ করে৷ তবে যুদ্ধাপরাধীদের খুঁজে বের করার ক্ষেত্রেও অসাধারণ সাফল্যের জন্য তারা সুপরিচিত৷ এখন তারা ‘অপারেশন লাস্ট চান্স' নামে একটি আন্দোলন চালাচ্ছে৷ এই অভিযানের লক্ষ্য জার্মানিতে গা ঢাকা দিয়ে থাকা নাৎসি বাহিনীর সর্বশেষ সদস্যদের খুঁজে বের করা এবং বিচারের সম্মুখীন করা৷

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) বার্লিন, কোলন এবং হামবুর্গ শহর থেকে শুরু হয় এই অভিযান৷ চলবে দুই সপ্তাহ ধরে৷ ২০০০ বড়সড় পোস্টার টাঙিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করা হচ্ছে৷ এতে জনগণকেও সাহায্যের আহ্বান জানানো হয়েছে৷

এই অভিযানের মধ্য দিয়ে প্রথমত কনসেনট্রেশন ক্যাম্পগুলোতে কর্মরত প্রহরীদের খুঁজে বের করা হবে৷ এছাড়া কুখ্যাত এসএস নামের বিশেষ বাহিনীর সদস্যদেরকেও চিহ্নিত করা হবে৷ সুরফের হিসাব অনুসারে, সেই ক্যাম্পগুলোতে প্রায় ৬০০০ জনকে নিযুক্ত করা হয়েছিল৷ তাঁদের অধিকাংশই ছিল পুরুষ৷ এঁদের মধ্যে ৯৮ শতাংশ হয়ত ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন৷ বাকিদের অর্ধেক অতিবৃদ্ধ এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে অপারগ হতে পারে৷ তবুও বাকি থাকে আরও অন্তত ৬০ জন৷ তবে সুরফের মতে, বেঁচে থাকা নাৎসি যুদ্ধাপরাধীদের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে৷ যদিও এর সঠিক সংখ্যা আসলে কেউ জানে না৷

Nationalsozialismus KZ Oranienburg Apell Konzentrationslager
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার একটি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের ছবি এটিছবি: Hulton Archive/Getty Images

তথ্য দিলে ২৫০০০ ইউরো

এই ধরনের ক্যাম্পেইনে প্রেরণা এসেছে জন দেমইয়ানুকের বিচারের রায় থেকে৷ তার আসল নাম অবশ্য ইভান দেমইয়ানুক৷ মিউনিখ শহরের আদালতে দুই বছর আগে তার বিরুদ্ধে শাস্তির রায় হয়৷ তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত মনে করে যে, দেমইয়ানুক নিধনশিবির ‘সবিবর-এ' পাহারাদার হিসেবে কাজ করতো৷ ফলে সেখানকার হত্যাযজ্ঞের সাথে তার জড়িত থাকার সম্ভাবনা খুবই বেশি৷ এটাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার ব্যাপারে যথেষ্ট৷ জার্মান আদালতে সন্দেহভাজন নাৎসি যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা থেমে গেছে৷ কারণ হত্যা ও নির্যাতনের সাথে এককভাবে তার সম্পৃক্তি প্রমাণ করা সম্ভব ছিল না৷

ইতিমধ্যে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেছে৷ নষ্ট হয়েছে প্রচুর সাক্ষ্য-প্রমাণ৷ মারা গেছেন অসংখ্য সাক্ষী৷ তবুও আইনি প্রক্রিয়ায় কিছুটা পরিবর্তন করে মিউনিখের আদালত একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে৷ এর ফলে আরও কিছু নাৎসি খুনিকে বিচারের আওতায় আনা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন সুরফ৷ যদিও সাক্ষ্য-প্রমাণ দাঁড় করানোটা দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি৷ তাই পোস্টার-প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে মানুষের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে৷ ‘‘আমরা বলছি, নাৎসি অপরাধীদের হাতে লাখ লাখ মানুষ খুন হয়েছে৷ তাই এই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে আমাদের সাহায্য করুন৷ আমরা প্রত্যেকটি তথ্যের জন্য ২৫০০০ ইউরো পর্যন্ত পুরস্কার দেবো৷''

ষাটের দশকের ধারাবাহিকতা

সিমন-ভিজেনথাল সেন্টার-এর অভিযোগের সাথে একমত পোষণ করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর এমেরিটাস ইয়োয়াখিম পেরেলস৷ তিনিও মনে করেন যে, জার্মান বিচার বিভাগ দীর্ঘদিন নাৎসি অপরাধকর্ম সম্পর্কে কিছুই জানতে চায়নি৷ পেরেলস বলেন, ‘‘জার্মানিতে মাত্র ১৬০ জন নাৎসি অপরাধীর সাজা হয়েছে৷ অথচ ইহুদি, সিনটি ও রোমা গোষ্ঠীর অসংখ্য মানুষ খুন হয়েছিল এবং যন্ত্রণার হাত থেকে বাঁচতে অসংখ্য মানুষ আত্মহত্যা করেছিল৷ সেই তুলনায় অপরাধীদের সাজাপ্রাপ্তির সংখ্যা মোটেও সন্তোষজনক নয়৷''

এর কারণ হিসাবে মনে করা হয়, ‘জার্মান বিচার ব্যবস্থায় নাৎসি আমলের ধারাবাহিকতা'৷ পেরেলস বলেন, ‘‘৫০ ও ৬০-এর দশকে জার্মান বিচার বিভাগের তিন চতুর্থাংশ বিচারক, আইনজীবী ও সংশ্লিষ্টরা জাতীয় সমাজতান্ত্রিকদের সময়ে বিভিন্ন আদালতে কর্মরত ছিলেন৷'' এ কারণে যুদ্ধের কয়েক দশক পরেও ‘মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত' আসছে৷

সময় ফুরিয়ে আসছে

মিউনিখের আদালত দেমইয়ানুকের ব্যাপারে যে রায় দিয়েছে, তাতে বোঝা যায়, বিগত বছরগুলিতে জার্মান বিচার ব্যবস্থা অনেক পাল্টেছে৷ তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী পেরেলস এবং নাৎসি বিরোধী ক্যাম্পেইনের উদ্যোক্তা সুরফ উভয়ই একমত যে, জার্মান বিচার ব্যবস্থার ব্যর্থতার পর এখন সময় খুবই কম৷ আর এ জন্য সর্বশেষ নাৎসি অপরাধীদের চিহ্নিত করার কাজ দ্রুততর করতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য