1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দ্রব্যমূল্যে কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত মুনাফার ভূমিকা

৬ এপ্রিল ২০২৩

করোনা মহামারি এখন আর নেই, পণ্য সরবরাহে ইউক্রেন যুদ্ধও আর বড় বাধা নয়, তাহলে দ্রব্যমূল্য এখনো কেন এই পর্যায়ে?

https://p.dw.com/p/4PmZB
ফ্রান্সের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামনে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ‘ব্যর্থ সরকারের’ বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
ফ্রান্সের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামনে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ‘ব্যর্থ সরকারের’ বিরুদ্ধে বিক্ষোভছবি: Julien Mattia/Zumapress/picture alliance

নীতিনির্ধারকদের মতে, দ্রব্যমূল্য এখন বাড়ছে মূলত কর্পোরেটদের বেশি লাভের কারণে৷ লাভের হার সাধারণের আয়বৃদ্ধির চেয়ে বেশি হওয়ায় নাভিশ্বাস উঠছে জনজীবনে৷

গত ফেব্রুয়ারিতে এই প্রবণতা লক্ষ্য করে জো বাইডেনও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন৷ ভোক্তারা যখন দ্রব্যমূল্যের চাপে পিষ্ট, ঠিক তখনই তেল কোম্পানিগুলো জানায় ২০২২ সালে রেকর্ড মুনাফা হয়েছে তাদের৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল ও গ্যাস কোম্পানি এক্সনমোবিল-এর ওই সময়ে ৫৬ বিলিয়ন ডলার (৫১ বিলিয়ন ইউরো) মুনাফা হয়েছিল৷ চরম জনদুর্ভোগের সময়ে কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত মুনাফার ওই আস্ফালনকে তখন ‘ভীষণ আপত্তিকর' বলেছিল হোয়াইট হাউস ৷

ইউরোপেও একই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় তখন৷ একই মুদ্রা (ইউরো) চলে এমন দেশগুলোতে অনেক ভোগ্যপণ্যের মূল্য গত মার্চেও ২০২২ সালের মার্চের তুলনায় ৬.৯% বেশি ছিল৷ ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি) যেখানে মাত্র ২% মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল সেখানে  বাস্তব ক্ষেত্রে তা বেড়ে তিনগুণ হয়েছিল৷

ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি)-র নির্বাহী বোর্ডের সদস্য ফাবিও পানেতা৷
ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি)-র নির্বাহী বোর্ডের সদস্য ফাবিও পানেতা৷ছবি: European Central Bank/picture alliance/dpa

মূল্যস্ফীতিরতৃতীয় কারণ'

করোনা মহামারির কারণে প্রায় সারা বিশ্বেই যখন লকডাউন চলছে, পণ্য সরবরাহ ভয়াবহভাবে ব্যাহত হয়েছিল তখন৷ মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্য সরবরাহে স্বাভাবিকতা ফিরতে থাকে৷ কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করায় আবার দেখা দেয় বিপর্যয়৷

বিশেষ করে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক হারে৷ বেশ কিছু উদ্যোগের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি এবং খাদ্যপণ্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতিও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূল্যহ্রাস যতটা হওয়া স্বাভাবিক, ততটা হচ্ছে না৷ নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এর অন্যতম কারণ বড় বড় কোম্পানির উচ্চহারের মুনাফা৷ গত সপ্তাহে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে আয়োজিত এক সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি)-র নির্বাহী বোর্ডের সদস্য ফাবিও পানেতা৷ তিনি বলেন,  বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ মানুষের আয়বৃদ্ধির চেয়ে বেশি হারে লাভ করছে৷ ফাবিও পানেতি মনে করেন, ‘‘প্রতিষ্ঠানগুলোর এই সুযোগসন্ধানী আচরণ মূল্যস্ফীতি হ্রাসে বিলম্ব ঘটাতে পারে৷''

তিনি জানান, ২০২২ সালে বিভিন্ন পণ্যের দাম যে পরিমাণ বেড়েছিল তার অর্ধেকেরও বেশি হয়েছিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত মুনাফার কারণে৷

ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটসের অধ্যাপক ইসাবেলা ওয়েবার মনে করেন বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অতি মুনাফার প্রবণতা খুব অস্বাভাবিক, কারণ, ‘‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো মহামারি এবং যুদ্ধের জরুরি পরিস্থিতির ফায়দা এমনভাবে তুলেছে,  যা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কখনোই সম্ভব হতো না৷ মূল্য যখন (উৎপাদন) ব্যয়ের চেয়ে বাড়ে, মুনাফাও খুব বাড়ে তখন৷''

ইসাবেলা ওয়েবার জানান, যুক্তরাষ্ট্রে কিছু কোম্পানি এখন এমন হারে মুনাফা করছে যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও হয়নি৷

মাটিস রিশ্টমান/ এসিবি