দিল্লিতে ভারত ও জার্মানির যমুনা-এলবে কলাশিল্প প্রকল্প
১৮ নভেম্বর ২০১১হামবুর্গের এলবে নদী যেমন জার্মানির উত্তরাঞ্চলের এক প্রাণরোখা ঠিক তেমনি যমুনা নদী দিল্লি তথা উত্তর ভারতের প্রাণরেখা৷ সভ্যতার ক্ষুধায় আর মানুষের উদাসীন অবহেলায় যমুনা আজ হারাতে বসেছে তার ধাত্রী গৌরব৷এই অবহেলার কথা মনে করিয়ে দিতে এগিয়ে এসেছেন ভারত ও জার্মানির শিল্পীরা৷ তাঁদের শিল্পকর্মে যমুনার পাড় যেন এক আর্ট গ্যালারিতে পরিণত৷
হামবুর্গের শিল্পী টিল ক্রাউজে এক আলাপচারিতায় এই প্রকল্পের মূলভাব সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে বললেন, আন্তর্জাতিক শিল্পী বিনিময় কর্মসূচির অধীনেই এই শিল্প প্রকল্প৷ বিষয় নদী৷ বেছে নেয়া হয় যমুনা ও এলবে নদী৷ কারণ এই দুটি নদীর ভাবনায় মিশে রয়েছে নানা জটিলতা৷ শিল্পীর সংবেদনশীলতা নিয়ে আমরা সেই জটিলতার দিকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছি৷
যমুনার এই জীর্ণশীর্ণ দশার কারণ কী দূষণ? ক্রাউজের মতে আংশিক৷ নদীবক্ষে পলি জমে জমে এর নাব্যতা তলানিতে এসে ঠেকেছে৷ সঙ্কুচিত হয়েছে এর গতিপ্রবাহ৷ জলবায়ু পরিবর্তনও এর অন্যতম কারণ৷ হামবুর্গের এলবে নদীও এর ব্যতিক্রম নয়৷ তবে দূষণের মাত্রা কম৷
নদী নিয়ে হিন্দুদের মানসিকতা বৈপরিত্যে ভরা৷ হিন্দুদের কাছে যমুনা অতি পবিত্র নদী৷ যমুনা নদীর সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের নাম জড়িত ওতপ্রোতভাবে৷ অন্যদিকে দিল্লি ও অন্যত্র লক্ষ লক্ষ গৃহস্থ বাড়ির নালা নর্দমার জল, আবর্জনা সবই ফেলা হয় যমুনায়৷ দিল্লির যমুনা আজ এক পয়:প্রণালির চেহারা নিয়েছে৷ দূষণে ক্লান্ত, দুর্গন্ধে আর্ত৷ শোধনের ব্যবস্থা নেই৷এক অদ্ভুত লাভ-হেট রিলেশন৷
প্রকল্পে যোগদানকারী ভারতীয় শিল্পী অতুল ভাল্লা ‘কেন আমি হারবো' শীর্ষক শিল্পকৃতিতে ব্যবহার করেছেন কাঠ, খড়, কাগজ, হাল্কা বাক্স৷ শিল্পী অসীম ওয়াকিফ ‘অদেখা যমুনা' শীর্ষক ইনস্টলেশনে ব্যবহার করেছেন রি-সাইকেল করা বোতল, ব্যাটারি, দড়ি ইত্যাদি উপকরণ৷ নদীবক্ষে রয়েছে ভাসমান বোতল তাতে আছে আলো৷ সেটাই হবে যমুনার প্রতিবাদ৷ পরিবেশ-বান্ধব এই সৃজনী প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়েছে সৌরবিদ্যুৎ, ব্যাটারি চালিত যান, রিসাইকেল করা অন্যান্য সামগ্রী৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক