দলত্যাগীরা কি আবার তৃণমূলে ফিরবেন?
৯ মে ২০২১সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণার পর সাংবাদিক সম্মেলনে এই প্রশ্নটা ধেয়ে এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। দলত্যাগীরা ফিরতে চাইলে কি আপনি তাদের আবার নেবেন? মমতার সংক্ষিপ্ত জবাব ছিল, ''ফিরে আসুক না, কে বারণ করেছে। এলে স্বাগত।'' তারপরই দলবদলুদের ঘরে ফেরা নিয়ে গুঞ্জন শুরু তৃণমূলে।
তবে দলের সকলে মুখ্যমন্ত্রীর মতো অতটা উদার হতে পারছেন না। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বন্দ্যোপাধ্যায় তার অভিজ্ঞতার গল্প শুনিয়েছেন। টিভি ৯ চ্যানেলে তিনি বলেছেন, গ্রামের এক বয়স্ক মানুষ তাকে বলেছিলেন, দিদিকেই তারা ভোট দেবেন। তবে দিদিকে অনুরোধ, গদ্দারদের তিনি যেন আর দলে না ফেরান। তবে তৃণমূলে মমতার কথাই শেষ কথা। অতীতে দেখা গিয়েছে, তার কট্টর বিরোধী অনেক নেতাকেই দলে নিয়েছেন মমতা।
সাবেক প্রদেশ কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট প্রয়াত সোমেন মিত্র ও মানস ভুইঞা তৃণমূলে গেছেন। মানস এখনো তৃণমূলের সাংসদ। তিনি বিধানসভা নির্বাচনেও জিতেছেন। ফলে এবারও দলত্যাগীদের ফিরিয়ে নেয়ার কথা বলতে মমতার অসুবিধা হয়নি। তবে ভোটের প্রচারে এই দলত্যাগীদের তিনি 'বিশ্বাসঘাতক, গদ্দার' বলে অভিহিত করেছিলেন। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর বা পিকে বলেছেন, তৃণমূল থেকে ওই নেতারা যাতে চলে যান, সেই কৌশল নিয়েই তারা এগিয়েছিলেন। কারণ, এদের বিরুদ্ধে ভোটদাতাদের রাগ ছিল। তাই তাদের টিকিট না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
ভোটের আগে তৃণমূল থেকে নেতা-মন্ত্রী মিলিয়ে অনেকেই দল ছেড়েছিলেন। তার মধ্যে প্রধান নাম ছিল সাবেক মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক হাজার ৭০০-র বেশি ভোটে হারিয়েছেন। রাজীব জিততে পারেননি। তেমনই জিততে পারেননি তৃণমূলের সাবেক বিধায়ক ও দলবদলু প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়া, সব্যসাচী দত্ত, জিতেন্দ্র তিওয়ারিরা। ঘটনা হলো, শুভেন্দু, নিশীথ প্রামাণিক ও হিরণ চট্টোপাধ্যায় ছাড়া আর কেউ জেতেননি।
বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেছেন, ''তৃণমূল থেকে যারা এসেছিলেন, তারা অত্যাচারিত, অপমানিত হয়ে এসেছিলেন। মনে হয় না, তারা কেউ ফিরে যাবেন।''
তবে তৃণমূল সূত্র ডিডাব্লিউকে জানিয়েছে, দলবদলুরা এখন অপেক্ষা করে দেখবেন। ফিরলে তারা কী পাবেন, সেটাও যাচাই করে নেবেন। বিজেপি-তে থাকলে তাদের কতটা লাভ হবে সেটাও দেখবেন। তারপর তাদের একটা অংশ আবার তৃণমূলে ফিরলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, আনন্দবাজার)