তাইওয়ানের আশেপাশে চীনের ‘শাস্তিমূলক' মহড়া
২৩ মে ২০২৪‘বিচ্ছিন্নতাবাদী পদক্ষেপ'-এর জন্য তাইওয়ানকে ‘শাস্তি দিতে' চীন দ্বীপরাষ্ট্রের আশেপাশে দুই দিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে৷ তাইওয়ানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে কার্যভার গ্রহণের তিন দিন পর চীনের কড়া মনোভাব স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম ভাষণে লাই চীনের উদ্দেশ্যে হুমকি বন্ধ করার ডাক দিয়েছিলেন৷ তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সঙ্গে সংলাপেরও প্রস্তাব রেখেছেন৷ চীন সেই প্রস্তাব নাকচ করার পর লাই বলেন, একমাত্র তাইওয়ানের মানুষই নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারেন৷ অর্থাৎ, তাইওয়ানের উপর চীনের সার্বভৌমত্বের দাবি তিনি উড়িয়ে দেন৷
তাইওয়ানের নতুন নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রোষ দেখাতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় পৌনে আটটা নাগাদ চীনের স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীর যৌথ মহড়া শুরু হয়েছে৷ তাইওয়ান প্রণালী, তাইওয়ানের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব প্রান্তের পাশাপাশি তাইওয়ান-নিয়ন্ত্রিত কিনমেন, মাৎসু, উশু ও ডনজিন দ্বীপের আশেপাশেও মহড়া চলছে৷ .
চীনের আস্ফালনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও তৎপরতা শুরু করেছে৷ চীনের আচরণের নিন্দা করে তাইওয়ান দ্বীপগুলির আশেপাশে সেনা মোতায়েন করেছে৷ সামরিক সরঞ্জামও প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷ তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের দপ্তর এই আচরণের নিন্দা করে জানিয়েছে, চীন তার ‘একতরফা সামরিক উসকানি'-র মাধ্যমে দ্বীপরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে ফেলছে৷ তবে তাইওয়ানের মানুষকে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে প্রেসিডেন্টের দপ্তর৷ উল্লেখ্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাইওয়ানের অনেক মহল চীনের সামরিক মহড়ার আশঙ্কা করছিল৷
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম মানচিত্রে সামরিক মহড়ার এলাকাগুলি চিহ্নিত করেছে৷ তাতে তাইওয়ান ও সে দেশ নিয়ন্ত্রিত দ্বীপগুলির আশেপাশের পাঁচটি এলাকা স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে৷
তবে তাইওয়ানের কর্মকর্তাদের মতে, চীন এখনো তাইওয়ানের জলসীমা লঙ্ঘন করে নি৷ তাছাড়া চীন কোনো ‘নো ফ্লাই জোন' ঘোষণা করে নি৷ চীনের স্থলবাহিনী ও রকেট বাহিনীর কোনো বড় আকারের তৎপরতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না৷ ফলে অনেক পর্যবেক্ষক এই মহড়াকে রাজনৈতিক সংকেত হিসেবে বিবেচনা করছেন৷
মার্কিন প্রশাসন তাইওয়ানের আশেপাশে চীনের সামরিক মহড়া সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে৷ সে দেশের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের উপ-প্রধান জেনারেল স্টিফেন সক্লেনকা বৃহস্পতিবার বলেছেন, চীনের এমন আচরণ প্রত্যাশিত ছিল৷ তিনি বেইজিং-এর উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা হিসেবে আঞ্চলিক দেশগুলির পক্ষ থেকে এমন সামরিক মহড়ার প্রকাশ্য নিন্দার ডাক দিয়েছেন৷ তবে সক্লেনকা-র মতে, এমন আস্ফালণের মাধ্যমে চীন আন্তর্জাতিক সমাজ নয়, বরং মূলত নিজস্ব বাসিন্দাদেরই বার্তা পাঠাতে চাইছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)