ঢাকার মাঠের হালচাল
ঢাকায় খেলাধুলা করার মতো মাঠের অভাব রয়েছে৷ যেগুলো আছে তার মধ্যে অনেকগুলোও খেলাধুলার উপযোগী নয়৷
খামারবাড়ি টিঅ্যাণ্ডটি খেলার মাঠ
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ পূর্ব পাশে এই মাঠটি ইন্দিরা রোড ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠ হিসেবেও পরিচিত৷ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে এটি একমাত্র মাঠ৷ আগে এই মাঠে বিভিন্ন সময়ে মেলার আয়োজন হতো৷ তবে ২০১৯ সালের পর এ মাঠে মেলা আয়োজন বন্ধ করে দেওয়া হয়৷
ধূপখোলা মাঠ
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মাঠ৷ এটি ঢাকার ভেতরে আবাসিক এলাকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় মাঠ৷ কোরবানির গরুর হাট, বৈশাখী মেলা থেকে শুরু করে নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক কাজেরও কেন্দ্রবিন্দু ছিল এটি৷ বড় বড় খেলার টুর্নামেন্ট আয়োজন হতো সেখানে৷ সম্প্রতি পুরো মাঠে উন্নয়ন কাঠামো বানানো হচ্ছে৷ এর অবস্থা অনেকটা পুরান ঢাকার পাকিস্তান মাঠ কিংবা ধলপুরের গোলাপবাগ মাঠের মতো হবে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী৷
বুলবুলের স্মৃতিবিজড়িত এলবার্ট মাঠ
পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ার একটি ছোট মাঠের নাম এলবার্ট মাঠ৷ এলাকাবাসী জানায় এটি মূলত এলবার্ট নামে এক বিদেশির জায়গা ছিল, যার মালিকানা নিয়ে বহু বছর ধরে জটিলতা চলছে৷ তবে ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এটি পাড়ার ছেলেমেয়েদের খেলার জায়গা হিসেবেই পরিচিত ছিল৷ ধীরে ধীরে ময়লা আবর্জনা ফেলে, টং দোকান তুলে এটি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে৷ এই মাঠের কাছে বাড়ি ছিল সাবেক ক্রিকেটার আমিনুল ইসলাম বুলবুলের৷ তিনি ঐ মাঠে খেলেছেন৷
ধলপুর বা গোলাপবাগ মাঠ
ধলপুর মাঠ একই সাথে গোলাপবাগ মাঠ নামেও পরিচিত৷ আধুনিকায়নের ফলে এ মাঠে এখন শিশু-কিশোররা প্রবেশে বাধা পাচ্ছে৷ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত তারা প্রবেশ করতে পারে না৷ ফলে অনেক শিশু-কিশোর সীমানা প্রাচীর পেরিয়ে মাঠে প্রবেশ করে৷
বাঁশবাড়ি সোনালী সংঘ খেলার মাঠ
মোহাম্মদপুরের সোনালী সংঘ মাঠ আধুনিকায়নের জন্য বন্ধ রয়েছে৷ তাই এলাকাবাসীরা মাঠে যেতে পারছেন না৷
মাঠের জায়গায় তৈরি হচ্ছে মার্কেট
পুরান ঢাকার ধূপখোলা মাঠে উন্নয়ন কাজ চলতে থাকায় প্রায় আট মাস ধরে খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় শিশু-কিশোরেরা৷ এ মাঠের একপাশে পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন৷ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাঠ উন্মুক্ত করা হচ্ছে না৷
খেলার জন্য মাঠ, নাকি মেলার জন্য!
শ্যামলী ক্লাব মাঠে প্রায় এক মাস ধরে তাঁত ও বস্ত্র মেলা চলছে৷ তাই মাঠে এখন খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে৷ স্থানীয় লোকজন হাঁটাচলা করতো, তাও এখন বন্ধ৷ প্রতি রমজান মাসে মাঠে মেলা অনুষ্ঠিত হয়৷
মাঠ নয়, যেন ময়লার বাগাড়
পল্টন আউটারে মাঠের এক পাশে ময়লার স্তুপ৷ এখানে খেলাধুলা করার কথা থাকলেও আবর্জনার স্তূপের কারণে অসুবিধায় পড়ছেন আগত খেলোয়াড়েরা৷
কবে খেলবে এই মাঠে?
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রস্তাবিত খেলার এই মাঠে পথচারীরা দীর্ঘদিন ধরে এই সাইনবোর্ডটি দেখে গেলেও এর কোনো অগ্রগতি দেখছে না৷
মাঠের একাংশ যেন বস্তি
আড়ং মাঠ অথবা লালমাটিয়া মাঠ - এই দুই নামে এই মাঠটিকে এলাকাবাসী চেনে৷ এই মাঠের একাংশ যেন বস্তি হয়ে উঠেছে৷ অন্য অংশে গাড়ি পার্কিং আর চায়ের দোকান৷ ফলে এই মাঠে শিশু-কিশোরের খেলা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে৷
আধুনিকায়নের ফলে খেলাধুলার সুযোগ বঞ্চিত
শ্যামলী ক্লাব মাঠের আধুনিকায়ন হলেও খেলার সুযোগ নেই৷ কারণ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সেখানে খেলার সুযোগ নেই৷
সফল প্রতিবাদ
কলাবাগান আবাসিক এলাকার (পান্থপথের দক্ষিণ পাশে) তেঁতুলতলা মাঠে পুলিশ কলাবাগান থানা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ নিয়েছিল৷ উদীচীর কর্মী সৈয়দা রত্নার নেতৃত্ব স্থানীয় বাসিন্দারা এর প্রতিবাদ করেছেন৷ গত রোববার রত্না ও তার ছেলেকে ধরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ সমালোচনা হলে ১৩ ঘণ্টা পর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়৷ এরপর বৃহস্পতিবার ঐ মাঠে থানা ভবন না করে সেটি খেলার জন্য রাখার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷