ড. ইউনূসের আপিল খারিজ
৫ এপ্রিল ২০১১বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই আদেশের বিরুদ্ধে ড. ইউনূস হাইকোর্টে রিট করেছিলেন৷ রিট খারিজ হওয়ায় তিনি এর বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন৷ আজ আপিল বিভাগ তার আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখে৷ ফলে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অপসারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশ দেশের সর্বোচ্চ আদালতে যথাযথ প্রতিপন্ন হল৷
বাংলাদেশ ব্যাংক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারণের আদেশ দেয় গত ২রা মার্চ৷ তাঁর চাকরির বয়স সীমা ৬০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ায় চাকরি বিধি অনুযায়ী এ আদেশ দেয়া হয়৷ গ্রামীণ ব্যাংকে চাকরির বয়স সীমা ৬০ বছর৷ ড. ইউনূসের বয়স ৭০ বছর৷ এই আদেশের বিরুদ্ধে তিনি পরদিন ৩রা মার্চ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন৷ আবেদনে বলা হয় গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ইউনূসকে অনির্দিষ্ট মেয়াদে নিয়োগ দিয়েছে৷ তাঁর জন্য চাকরির সাধারণ বয়স সীমা ৬০ বছর প্রযোজ্য নয়৷ দু'পক্ষের শুনানী শেষে ৮ই মার্চ হাইকোর্ট ড. ইউনূসের রিট খারিজ করে দেন৷ আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশকে যথাযথ উল্লেখ করে বলেন, ৬০ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার পর ড. ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের পদে থাকার কোন বৈধতা নেই৷ ড. ইউনুস এই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করলে আদালত তাকে ২৯শে মার্চ পূর্ণাঙ্গ আপিলের অনুমতি দেন৷ আজ প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানী শেষে ইউনুসের আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন৷ রাষ্ট্র পক্ষে শুনানীতে অংশ নেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম৷ ড. ইউনূসের আপিলের ব্যাপারে আজ আদালত আদেশ দিলেও গ্রামীণ ব্যাংকের ৯ পরিচালকের আলাদা আপিলের শুনানী এবং আদেশ হবে আগামীকাল৷ তবে এটর্নি জেনারেল বলেন আজকের আদেশেই সব পরিষ্কার হয়েছে৷
ড. ইউনূসের পক্ষে আজ শুনানীতে অংশ নেন ড. কামাল হোসেন৷ তিনি বলেন কাল ৯ পরিচালকের আপিলের ব্যাপারে কাল আদালত আদেশ দেয়ার পর তিনি বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানাবেন৷
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে শুনানীতে অংশ নেন তৌফিক নেওয়াজ এবং আজমালুল হক৷ রায় ঘোষণার সময় ড. ইউনূস আদালতে উপস্থিত ছিলেন না৷
১৯৮৩ সাল থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক৷ তাঁর হাতে গড়া ক্ষুদ্র ঋণদানকারী এই প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ব নন্দিত৷ ২০০৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস শান্তিতে নোবেল পান৷ গ্রামীণ ব্যাংকে এখন ২০ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছে৷ এই ব্যাংকের গ্রাহক প্রায় এক কোটি৷ গ্রামীণ ব্যাংক এ পর্যন্ত ৬০,৪০০ কোটি টাকা ক্ষুদ্র ঋণ হিসেবে দরিদ্র মানুষকে দিয়েছে৷
এদিকে গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আজ কোন প্রতিক্রিয়া জানান হয়নি৷ ব্যাংকের মিডিয়া সমন্বয়কারী জান্নাতই কাওনাইন ডয়চে ভেলেকে জানান, শিগগিরই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী